পাকিস্তানকে সহজেই হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড

ছবি: এএফপি

ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং উপহার দিলেন উইলিয়াম ও'রোর্ক। তিনি যোগ্য সঙ্গ পেলেন অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার ও মাইকেল ব্রেসওয়েলের কাছ থেকে। ফলে পাকিস্তানকে আড়াইশর নিচে থামিয়ে দিয়ে সাদামাটা লক্ষ্য পেল নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ড্যারিল মিচেল ও টম ল্যাথাম করলেন ফিফটি। তাদের পাশাপাশি দায়িত্বশীল ইনিংস খেললেন ডেভন কনওয়ে ও কেইন উইলিয়ামসন। এতে ২৮ বল হাতে রেখে সহজেই জিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হলো কিউইরা।

করাচিতে শুক্রবার অনুষ্ঠিত ফাইনালে ৫ উইকেটে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান ৪৯.৩ ওভারে ২৪২ রানে অলআউট হওয়ার পর তারা ৪৫.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায়।

সদ্যসমাপ্ত সিরিজে তিন ম্যাচের সবকটিতে জিতল কিউইরা। লিগ পর্বে আগের দেখায় পাকিস্তানকে ৭৮ রানে হারিয়েছিল তারা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছিল ৬ উইকেটে। ফলে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কিউইদের প্রস্তুতিটাও দারুণ হলো। করাচিতেই আগামী বুধবার এই দুই দলের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ৫০ ওভারের ক্রিকেটের প্রতিযোগিতাটি।

ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় পেসার ও'রোর্ক ৯.৩ ওভারে ৪ উইকেট নেন ৪৩ রান খরচায়। বল হাতে বাঁহাতি স্পিনার স্যান্টনার ছিলেন ভীষণ আঁটসাঁট। ১০ ওভারে একটি মেডেনসহ ২০ রানে তিনি পান ২ উইকেট। অফ স্পিনে ব্রেসওয়েলও কৃপণতা দেখিয়ে শিকার করেন ২ উইকেট। তিনি ১০ ওভারে একটি মেডেনসহ দেন ৩৮ রান। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন চারে নামা মিচেল। ৫৮ বল মোকাবিলায় ছয়টি চার মারেন তিনি। পাঁচে নামা ল্যাথাম ৬৪ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে করেন ৫৬ রান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজন মিলে যোগ করেন ৮৮ বলে ৮৭ রান।

একই ভেন্যুতে আগের ম্যাচেই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করেছিল পাকিস্তান। মোহাম্মদ রিজওয়ানের নেতৃত্বাধীন দলটি নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। প্রোটিয়াদের ছুড়ে দেওয়া ৩৫৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তারা স্পর্শ করেছিল ৬ উইকেট ও ৬ বল হাতে রেখে। সেদিন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন রিজওয়ান ও আগা সালমান। কিন্তু ফাইনালে পুরো উল্টো পথে হাঁটল পাকিস্তানিরা।

ব্যাটিং জানেন এমন আটজন ছিলেন একাদশে। তাদের মধ্যে ছয়জন পৌঁছান দুই অঙ্কে। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি কেউই। অধিনায়ক রিজওয়ান চারে নেমে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন। ৭৬ বল খেলে চারটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। ৬৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ৪৫ রান আসে পাঁচে নামা সালমানের ব্যাট থেকে। ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ার পর চতুর্থ উইকেটে ১২০ বলে ৮৮ রান আনেন তারা। রিজওয়ানকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন ও'রোর্ক।

এরপর পাকিস্তান আর কোনো ভালো জুটি পায়নি। নিয়মিত বিরতিতে তাদের উইকেট তুলে নেয় কিউইরা। স্কোরবোর্ডে ১০০ রান জমা হতে পতন হয় বাকি ৭ উইকেটের। ছয়ে নামা তায়্যিব তাহির ৩৩ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় করেন ৩৮ রান। ওপেনার বাবর আজমের ব্যাট থেকে সমান সংখ্যক বাউন্ডারিতে আসে ৩৪ বলে ২৯ রান। আটে নামা ফাহিম আশরাফ দুটি চারে ২১ বলে করেন ২২ রান। তিন বলের মধ্যে ফাহিম ও নাসিম শাহকে আউট করে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেন ও'রোর্ক।

লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে উইল ইয়াংয়ের উইকেট হারালেও দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৯৬ বলে ৭১ রান। ওপেনার কনওয়ে ৭৪ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে করেন ৪৮ রান। উইলিয়ামসন ৪৯ বলে ৩৪ রান করেন তিনটি চার ও একটি ছক্কায়। তাদের বিদায়ের পর মিচেল ও ল্যাথামের কল্যাণে জয়ের কক্ষপথে চলে আসে কিউইরা।

সিরিজে দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন মিচেল। পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের সাক্ষাতেও ফিফটি করেছিলেন তিনি। উইকেটরক্ষক ল্যাথাম দেন বাজে সময় পেরিয়ে আসার ইঙ্গিত। এই হাফসেঞ্চুরির আগের তিন ইনিংসে টানা শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। এরপর গ্লেন ফিলিপস ১৭ বলে দুটি চারে ২০ এবং ব্রেসওয়েল ৩ বলে ২ রানে অপরাজিত থাকে। বাউন্সারের চেষ্টায় ফাহিম ওয়াইড দিলে ফয়সালা হয়ে যায় ফাইনালের।

Comments

The Daily Star  | English
Tarique Rahman warns against return of fascist forces

Tarique Rahman urges first-time voters to back BNP

'Let the first vote of the youth be for the sheaf of paddy,' he says

8m ago