মোস্তাফিজের সঙ্গে ইশারা ভাষায় কথা বলে যে বিপত্তিতে পড়েছিলেন ওয়ার্নার

ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজির আসর হলেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) কোন কোন দিক থেকে বৈশ্বিক। বহু দেশ তো বটেই বহু ভাষার মানুষের একসঙ্গে মিলে খেলায় সামগ্রিক ঐক্যের সুর যেমন আছে, তেমনি আছে যোগাযোগের বিড়ম্বনাও। ২০১৬ সালে সেটা বেশ ভালো টের পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা ডেভিড ওয়ার্নার। এবং তা ছিলো বাংলাদেশের তারকা মোস্তাফিজুর রহমানকে ঘিরে।
২০১৫ সালে আলোড়ন তুলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার পর ২০১৬ সালে আইপিএলে ডাক পান মোস্তাফিজ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদে হয় তার ঠিকানা। যে দলটিতে বাঙালি কোন খেলোয়াড় ছিলেন না। রিকি ভুই নামের এক তরুণ ভারতীয় বাংলা পারতেন, কিন্তু তিনি নিয়মিত একাদশের বাইরের। মাঠের ভেতরে মোস্তাফিজকে বার্তা দেওয়া নিয়ে তৈরি হতো তাই বিড়ম্বনা।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে ৯ বছর আগে গল্প শুনিয়েছেন সেবার দলটির কোচ টম মুডি। সেবার মাঠে মোস্তাফিজের সঙ্গে মূলত অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে কথা বলতেন সানরাইজার্সের অধিনায়ক ওয়ার্নার। একম্যাচে মিড-অফের দিক দেখিয়ে মাথায় ইঙ্গিত করে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন মাথা খাটিয়ে খেলতে। মোস্তাফিজুরকে মনে হয়েছিলো তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, কিন্তু এরপর দৌড়ে এসে তিনি একটি বাউন্সার মারলেন। মানে
তিনি বার্তাটি এমনভাবে নিয়েছিলেন যেন তাকে ব্যাটসম্যানের মাথায় হিট করতে বলা হয়েছে!
মুডি বলেন, 'আপনি হয়তো ভাবছেন আপনি একটি বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন, কিন্তু আপনি যার সঙ্গে কথা বলছেন সেই খেলোয়াড় হয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বুঝে নিচ্ছে। তবে এটাই এর [যোগাযোগের] মাধুর্যের অংশ।'
আইপিএলে ভারতের বাইরের কোচ-অধিনায়কদের প্রায়ই এমন যোগাযোগ বিড়ম্বনায় পড়ার নজির আছে। ভারতের স্বীকৃত ভাষা ২২টি, আইপিএলের খেলার ধারাভাষ্য প্রচার হয় ১২টি ভাষায়। এই আসর খেলতে তাই বহু ভাষার খেলোয়াড়রা জড়ো হন। কোচিং স্টাফরা ইদানিং হিন্দি, ইংরেজি, তামিল, বাংলার মতন প্রধান কয়েকটি ভাষা কাজ চালিয়ে নেওয়ার মতন শিখে নেন।
মুডি জানান ২০১৭ সালে যখন তরুণ রশিদ খানকে নিলাম থেকে তারা দলে নেন, তখন রশিদকে স্বস্তির পরিবেশ দিতেই কেনা হয় তার স্বদেশী মোহাম্মদ নবিকে। নবি তো খেলোয়াড়, ভাষার সুবিধা পেতে খেলোয়াড়ের সঙ্গে তার স্বদেশী দোভাষী রাখার নজিরও আছে। মোস্তাফিজ যখন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে খেলেন, দোভাষী হিসেবে তার সঙ্গে সেবার আইপিএলে ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক খেলোয়াড় নাফিস ইকবাল। দলের কোচ, অধিনায়কদের বার্তা মোস্তাফিজের কাছে বুঝিয়ে দেওয়াই ছিলো নাফিসের কাজ।
Comments