জিম্বাবুয়ের কাছেও হারল বাংলাদেশ

ম্যাচের প্রথম দুই দিন বেশ কোণঠাসা ছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনে এসে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। তাতে সিলেট টেস্টে জয়ের আশা করেছিল টাইগাররা। কিন্তু চতুর্থ দিনে এসে আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়। বোলাররা পরে লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি টাইগাররা।  

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনে এসে তিন উইকেটের জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের ছুঁয়ে দেওয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্য ৫০.১ ওভারে তুলে নেয় সফরকারী দলটি।

রেকর্ড গড়েই এই জয় তুলে নিল জিম্বাবুয়ে। এর আগে টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ রান তারা করে জয়ের রেকর্ড ছিল ১৬২ রানের। সেটাও তাদের সোনালী সময়ে। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানকে হারা হারিয়েছিল ৭ উইকেটের ব্যবধানে। এই জয় ছাড়া একশর বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড দুটি। সবমিলিয়ে চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে জিততে পেরেছে স্রেফ পাঁচ বার।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে কাজটা খুব কঠিন হয়নি জিম্বাবুয়ের। দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারানের সাবলীল ব্যাটিংয়ে মাত্র ১২ ওভারেই দলীয় ফিফটি পেয়ে যায় সফরকারীরা। এরপর অবশ্য দুটি কঠিন সুযোগ পেয়েছিলেন টাইগাররা। তবে দুটি সুযোগই নিতে পারেননি মুমিনুল হক। প্রথমে শর্ট লেগে দুরূহ ক্যাচ মিস করার পর রানআউট করতে পারেননি কারানকে।

সাবলীল ব্যাটিং করা দুই ওপেনার যখন দারুণ সেট, তখন হঠাৎ করেই বাড়তি ঝুঁকি নিতে গিয়ে আউট হন কারান। মিরাজের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন সৈয়দ খালেদ আহমেদের হাতে। ভাঙে ৯৫ রানের জুটি। ৭৫ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করেন কারান।

এরপর নিক ওয়েলচকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল ইসলাম। তার বিদায়ের পর দ্রুত আরও দুটি উইকেট তুলে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। এরমধ্যে রয়েছে সেট ব্যাটার বেনেটের উইকেটও। অবশ্য নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন এই ওপেনার। মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ের হেরফের করে লং অনে ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিমের হাতে। ৮১ বলে ১টি ছক্কা ও ৭টি চারে ৫৪ রান করে ফেরেন বেনেট। এর আগের ওভারে উইলিয়ামসকেও ফেরান মিরাজ।

এরপর রিভিউ নিয়ে আরভিনকে ফেরায় বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের বল টার্ন করে লেগ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে ব্যাটে লাগান আরভিন। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। ৩০ বলে ১০ রান করেন আরভিন। মায়াভোকে দ্রুতই তুলে নেন মিরাজ। ব্যাক ফুটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি।

এরপর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে বোল্ড করে ফাইফার পূরণ করেন মিরাজ। তাতে কিছুটা আশা দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়েস্লি মাধেভেরের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত জয় মিলে জিম্বাবুয়ের। শেষ দিকে দারুণ দুটি বাউন্ডারি জয় নিশ্চিত করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে।

আগের রাতের বর্ষণে এদিন খেলা শুরু হতে এক ঘণ্টা বিলম্ব হয়। শুরুর দ্বিতীয় বলেই অধিনায়ক শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। ব্লেসিং মুজারাবানির শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ঠিকঠাক লাগাতে না পারলে ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক। ভাঙে ৩৯ রানের জুটি। ১০৫ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৬০ রান করেন অধিনায়ক।

খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিরাজও। মুজারাবানির পঞ্চম শিকার হন বাড়তি বাউন্সের বল খেলতে গিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় গ্যালিতে। ১৫ বলে ১১ রান করেন মিরাজ। লেজ থেকেও পর্যাপ্ত সহায়তা পায়নি বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ১ রানে রিচার্ড এনগাভারার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তাইজুল।

হাসান মাহমুদ অবশ্য চেষ্টা করেছিলেন। ১২ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শিকার হলেও খেলেছেন ৫৮টি বল। তাতে জাকের আলীর সঙ্গে ৯১ বলে গড়েন ৩৫ রানের জুটি। যদিও নিজের উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন হাসান। অহেতুক শট খেলতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন তিনি।

জুটি ভাঙার পর নিজের প্রথম বলে স্লিপে দাঁড়ানো ক্রেইগ আরভিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান খালেদ আহমেদ। এরপর এক প্রান্ত আগলে রাখা জাকের আলী মুজারাবানির ষষ্ঠ শিকার হলে ২৫৫ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন তিনি। ১১ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৮ রান করেন জাকের।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

1h ago