‘প্রস্তুতির’ সিরিজেই এখন মান বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ

Bangladesh Cricket Team

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হারের পর অনেকে ঠাট্টা করছিলেন, আর কাদের সঙ্গে হারা বাকি? উগান্ডা, বারমুডার বিপক্ষে সিরিজ খেললেও নিশ্চিয়ই বাংলাদেশ দল হেরে দেখাতে পারবে! আইসিসি সহযোগি সদস্য দেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশের হেরে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়া নতুন নয়। বরং বলা ভালো এই কাজ বেশ অভ্যাসের মধ্যে এনে ফেলেছেন তারা।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের ভঙ্গুর দশা সেই শুরু থেকে। মাঝে মাঝে কিছু বড় ঝলক দেখা গেলে হোঁচটের পরিমাণ এত বেশি যে সেসব আর কারো স্মৃতিতে উজ্জ্বল থাকে না। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এবারের সিরিজ যেমন বিসিবি আয়োজন করেছিলো প্রস্তুতির আদলে।

মূল লক্ষ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজ। পাকিস্তান যেতে হলে যেহেতু আমিরাতের মাটি স্পর্শ করে যেতেই হয়, হাতেও যেহেতু ফাঁকা সময় আছে খেলা যাক না। শুরুতে দুই ম্যাচের সিরিজই ছিলো পরিকল্পনা, সেটা হলে ১-১ সমমতায় থামতে  হতো। পাকিস্তান সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ায় বাড়তি কদিন থাকবে হবে দুবাইতে। সেজন্য এমিরেটস বোর্ডকে প্রস্তাব দিয়ে আরেকটা ম্যাচ বাড়িয়ে নেওয়া গেছে। এখন শেষটা জিতলে বলা যাবে, ভাগ্যিস ম্যাচ একটা বাড়ানো হয়েছিলো, না হলে আমিরাতের বিপক্ষেও তো সিরিজ জেতা হয় না। আর হেরে গেলে আক্ষেপে পুড়তে হবে, 'কেন বাড়ালাম!'

বাংলাদেশ দলের আসলে কোন দিক থেকে বাড়তি পাওয়ার কিছু নাই, বরং ক্ষতি যাতে আর বেশি না হয় তাহলেই রক্ষা। এরকম প্রস্তুতির আদলে খেলতে গিয়ে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কি হয়েছিলো একটু মনে করা যাক। স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ আয়োজন করা হয়। সেই সিরিজ বাংলাদেশ হেরে যায় ২-১ ব্যবধানে। যুক্তরাষ্ট্র দলটিতে ছিলেন না কোন পেশাদার ক্রিকেটার। বেশিরভাগই ভারত ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত, যারা দেশটিতে নানান চাকরির ফাঁকে খেলেন ক্রিকেট।

অর্থাৎ শৌখিন দলও কুড়ি ওভারে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিতে পারে। শৌখিন দলের প্রসঙ্গ এলে সবার মনে পড়া উচিত হংকংয়ের কথা। ফিরে যেতে হবে ১১ বছর আগে। সেই ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে  ঘরের মাঠেই হংকংয়ের কাছে হেরে বসেন সাকিব আল হাসানরা।

আইসিসি সহযোগি সদস্য দেশের মধ্যে নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড বাংলাদেশকে একাধিকবার হারিয়েছে। ক্রিকেট ঐতিহ্যে তারা অবশ্য ঋদ্ধ, অন্য বড় দলের বিপক্ষেও জয় আছে এদের। আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার একাধিকবার বাংলাদেশকে হারিয়েছে। সীমিত ওভারে আফগানিস্তান তো এখন সব দিক থেকেই বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা দল।

আজ শারজায় বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় মাথায় বেশ বড় চাপ নিয়ে নামবেন লিটন দাসরা। সেই চাপটা তৈরি করেছেন নিজেরাই। নেহায়েত সাধারণ এক সিরিজে এতখানি চাপের কারণ পা হড়কানোর ভীতি। যদি আমিরাতের কাছে সিরিজ হারের কালি লেগে যায়, দেশের ক্রিকেটে এই অভিঘাত প্রভাব ফেলবে।

স্কিল ও অভিজ্ঞতায় প্রতিপক্ষ থেকে বেশ এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। তবে মানসিকতা? এই জায়গায় বড় একটা প্রশ্ন ক্রমাগত ঘুরপাক খাওয়া এই দেশের ক্রিকেটের চলমান বাস্তবতা। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে আজ বড় ব্যবধানে হারালেও প্রশ্নটা খুব সহসা সরিয়ে দেওয়া যাবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Iran strikes back at Israel with missiles over Jerusalem, Tel Aviv

Iran's Supreme Leader accuses Israel of initiating war, vows painful revenge

3h ago