অক্টোবরে ওয়ানডে থেকেও কি বিদায় নেবেন রোহিত-কোহলি?

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ না কাটতেই বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা আবার খবরের শিরোনামে এসেছেন। গত সোমবার অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির রোমাঞ্চকর সমাপ্তি হয়। আমেজ কাটতিই ভারতীয় গণমাধ্যমের আলোচনা ঘুরে গেছে অন্যদিকে। কিন্তু 'রো-কো' জুটির যে খবর এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে তা কোনো ভালো কারণে নয়। ভারতের এই দুই ব্যাটিং সুপারস্টারের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ তাদের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষ হতে পারে। ২০২৭ সালের বিশ্বকাপে রোহিত এবং কোহলি যথাক্রমে ৪০ ও ৩৯ বছর বয়সেও ভারতের হয়ে খেলবেন—এই আশা দিনে দিনে ফিকে হচ্ছে, গণমাধ্যমেও আসছে পরস্পরবিরোধী খবর।
দৈনিক জাগরণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোহলি এবং রোহিত যদি পরবর্তী বিজয় হাজারে ট্রফিতে খেলতে রাজি না হন, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজই ভারতীয় জার্সিতে তাদের শেষ হতে পারে। ইতোমধ্যে টেস্ট এবং টি-২০ থেকে অবসর নেওয়ায়, ওয়ানডে এবং আইপিএলই এখন তাদের খেলার জায়গা। ম্যাচ অনুশীলন এবং ফর্ম ধরে রাখতে হলে প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগানো উচিত বলে মনে করেন বিসিসিআই কর্তারা।
তবে পিটিআই-এর একটি প্রতিবেদনে একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে এমন কোনো আলোচনা হয়নি। বরং রোহিত ও কোহলির বিষয়টি আগামী বছরের টি-২০ বিশ্বকাপের পর আলোচনায় আসবে।
তবে বাইরের আলোচনা থেমে নেই। বিষয়টি বরং আরও গতি পেয়েছে। ভারতের সাবেক অধিনায়ক এবং বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী এই 'রো-কো' বিতর্ককে উসকে দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'যতদিন সর্বোচ্চ মঞ্চে পারফর্ম করবেন ততদিন এই দুই তারকার খেলে যাওয়া উচিত।'
তবে বিসিসিআইয়ের সাবেক নির্বাচক মনে করেন বোর্ডের উচিত কোহলি এবং রোহিতকে ছাড়াই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়া। বিসিসিআইয়ের সাবেক জাতীয় নির্বাচক দেবাঙ্গ গান্ধী মনে করেন, কোহলি এবং রোহিতকে ধীরে ধীরে বাদ দেওয়া উচিত। কারণ অনেক তরুণ খেলোয়াড় ওয়ানডেতে ঝড় তোলার জন্য প্রস্তুত। ইংল্যান্ড সফরের সফলতার পর গান্ধী আত্মবিশ্বাসী যে, তরুণ প্রতিভাদের লালন-পালন করাই ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ভবিষ্যতের পথ, এমনকি যদি এক দশকের বেশি সময় ধরে দলকে টানা রোহিত-কোহলিকে বাদ দিয়ে হলেও।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে গান্ধী বলেন, 'আপনি যশভি জয়সওয়াল, রিশভ পান্ত, সাই সুদর্শনের মতো খেলোয়াড়দের কীভাবে বসিয়ে রাখবেন, যখন কিনা তারা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছে যে তারা কতটা ভালো মানিয়ে নিতে পারে। টি-২০ থেকে টেস্টে মানিয়ে নেওয়াটা অনেক বড় পরিবর্তন। একজন খেলোয়াড় যখন টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করে এবং তার শক্তিশালী খেলার ক্ষমতা থাকে, তখন ওয়ানডে তাদের জন্য সহজ হয়ে যাওয়া উচিত। নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্ট একসঙ্গে বসে একটি সিদ্ধান্ত নিক।'
তার যুক্তি যথেষ্ট সময় নিয়েই বিকল্প প্রস্তুত করে ফেলা উচিত, 'যদি এক বছরের মধ্যে এমন পরিস্থিতি আসে যে তাদের মধ্যে একজন ভালো খেলছেন না এবং আমাদের একজন বিকল্পের প্রয়োজন, তাহলে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে সেই খেলোয়াড়কে প্রস্তুত করার জন্য যথেষ্ট সময় নাও থাকতে পারে। রোহিত এবং বিরাটের অবদান নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না।'
Comments