ব্যাটিং অনুশীলনের ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জ না নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন

নেদারল্যান্ডস এমনিতেই পিছিয়ে থাকা শক্তি, তার উপর প্রথম সারির অন্তত চারজন ক্রিকেটারকে ছাড়া বাংলাদেশে খেলতে এসেছে তারা। প্রতিপক্ষের মাঠে বিরূপ কন্ডিশনে প্রথম দুই ম্যাচে টস ভাগ্যও পক্ষে যায়নি ডাচদের। ফলাফল বাংলাদেশের অনায়াস দুই জয়। তবে বড় দুই জয়ের পরও অস্বস্তি কি ঠিক এড়াতে পারছে বাংলাদেশ দল। এই সিরিজটা যে কারণে আয়োজন করা হয়েছে সেই প্রস্তুতি আসলে সব মিলিয়ে কতটা হচ্ছে। প্রথম দুই ম্যাচে টপ অর্ডার ছাড়া আর কারো ব্যাট করারই সুযোগ মেলেনি।
ব্যাট করার সুযোগ পাননি তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিকরা। শেষ ম্যাচেও একই পরিস্থিতি হলে ম্যাচের ব্যাটিং প্রস্তুতি ছাড়াই এশিয়া কাপে যাবেন তারা। বাংলাদেশের পর্যাপ্ত ব্যাটিং অনুশীলন না হওয়ার পেছনে নেদারল্যান্ডসের কম রানে গুটিয়ে যাওয়া কারণ, এখানে তো বাংলাদেশের কিছু করার নেই। তবে প্রথম ম্যাচে সহজ জয় পাওয়ার পর পরের ম্যাচে একটা চ্যালেঞ্জের দিকে হাঁটার সুযোগ ছিলো লিটন দাসের দলের।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শরতের সন্ধ্যাতেও শিশির পড়ে বলে এখানে পরে ব্যাট করা হয় সহজ। বাংলাদেশ দুই ম্যাচেই টস জিতে সহজ পথে হাঁটার সুযোগ পেয়েছে। প্রথম ম্যাচে না হয় উইকেট ও কন্ডিশন পড়তে সিদ্ধান্তটা যৌক্তিক ছিলো, বড় জয়ের পর পরের ম্যাচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিজেদের হাতেই ছিলো। বাংলাদেশ সেটা গ্রহণ করেনি। নিরাপদে সিরিজ জয়ের দিকে হাঁটতে চেয়েছে তারা।
এক্ষেত্রে অধিনায়ক লিটন থেকে দলের বাকিরা একটা শব্দই বলছে, 'দিনশেষে এটা তো আন্তর্জাতিক ম্যাচ, জয়টাই মুখ্য।' নিশ্চয়ই জেতাটাই মুখ্য। তবে আগে ব্যাট করে বড় সংগ্রহ দাঁড় করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কি জেতা যেত না? নেদারল্যান্ডসের খর্ব শক্তির দলের বিপক্ষে এই সাহস না দেখালে আর কাদের সঙ্গে দেখানো যাবে?
দ্বিতীয় ম্যাচে স্রেফ ১০৩ রান করে ডাচরা। ওই রান টপকে ৯ উইকেটে ম্যাচ জিততে ৪০ বলে ৫৪ রান করেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম।
সংবাদ সম্মেলনে টসের প্রসঙ্গ, আগে ব্যাটিং না নেওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি তুলে ধরেন দলের চিন্তা ধারা, 'আসলে দেখেন ঘরের মাঠের সুবিধা সবাই নিতে চায়। প্রথমে উইকেট যেরকম থাকে...আগের ম্যাচে দেখেছেন প্রচুর শিশির পড়ে, পরের দিকে ব্যাট করা আমাদের জন্য সহজ হয়েছে। আজও একই পরিকল্পনা ছিলো, যেহেতু সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ছিলো। আমার মনে হয় কোচ, অধিনায়ক যারা আছে তারা এটা নিয়ে ভাববে।'
বাংলাদেশ দুই ম্যাচেই বড় জয় পেয়েছে, প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিয়েই জিতেছে। এই অবস্থায় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলার উপায় নেই। তবে কোন বড় আসরের প্রস্তুতি সামনে রেখে সিরিজ খেললে জেতার বাইরেও নিজেদের চ্যালেঞ্জে ফেলাও জরুরি বোধহয়।
আগে ব্যাটিং নিয়ে দুইশো ছাড়ানো পুঁজির দিকে যাওয়া যেত, মূল ব্যাটারদের ব্যাটিং অনুশীনটাও হতো। পরের ভারী শিশিরের মধ্যে ফেলে বোলারদের পরীক্ষাটাও আরও কঠিন করা যেত।
এই সম্পর্কিত আরেক প্রশ্নে তানজিদ কিছুটা মণঃক্ষুন্ন হয়েই উত্তর দিলেন, 'আসলে ভাইয়া, আমরা তো আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছি, আরও কি আক্রমণাত্মক চাচ্ছেন? আমি এটা আসলে…।'
Comments