মেসির ৮০০তম গোলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয়
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রথমবার মাঠে নামা আর্জেন্টিনা ভুগছিল গোল পেতে। পানামার রক্ষণাত্মক কৌশলে ফাটল ধরানো হয়ে উঠছিল দুরূহ। কিন্তু দলে যখন লিওনেল মেসি থাকেন, তখন পথ চিনে নেওয়াটা অনেক ক্ষেত্রে হয়ে দাঁড়ায় কেবল সময়ের ব্যাপার। আরও একটি জাদুকরী পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে ইতিহাস গড়লেন তিনি। মেসির নৈপুণ্যে ভর করে শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত জয় পেল আলবিসেলেস্তেরা।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকালে ঘরের মাঠে বুয়েনস এইরেসের লা মনুমেন্তালে ২-০ গোলে জিতেছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। দুটি গোলই আসে প্রীতি ম্যাচটির দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে।
জাতীয় দলের জার্সিতে থিয়াগো আলমাদার প্রথম গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর ফ্রি-কিক থেকে চমৎকার কায়দায় লক্ষ্যভেদ করেন মেসি। এই গোলের মাধ্যমে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলিয়ে ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোল পূরণ করেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। এর আগে তার আরও দুটি ফ্রি-কিক পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
গত বছরের ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে যাদেরকে শুরু থেকে খেলিয়েছিলেন কোচ স্কালোনি, এই ম্যাচে তাদেরকে দিয়েই একাদশ সাজান তিনি। গোলরক্ষক হিসেবে ছিলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। রক্ষণ সামলানোর দায়িত্ব পান নাহুয়েল মলিনা, ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওতামেন্দি ও নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। মাঝমাঠে ছিলেন এঞ্জো ফার্নান্দেজ, রদ্রিগো দি পল ও অ্যালেক্সিস ম্যাক আলিস্তার। আক্রমণভাগ সাজানো হয় মেসি, আনহেল দি মারিয়া ও হুলিয়ান আলভারেজকে দিয়ে।
পুরো ম্যাচে আর্জেন্টিনার দাপট ফুটে ওঠে পরিসংখ্যানে। ৭৪ শতাংশ সময়ে বল পায়ে রেখে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ২৬টি শট নেয় তারা। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল নয়টি। অন্যদিকে, পানামার দুটি শটের একটিও লক্ষ্যে থাকেনি।
প্রথমার্ধের একের পর এক আক্রমণ চালালেও গোলের দেখা মেলেনি স্বাগতিকদের। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে ২৭ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিক নেন ৩৫ বছর বয়সী মেসি। বল পোস্ট কাঁপালেও জালে প্রবেশ করেনি। ৪৪তম মিনিটে এঞ্জোর দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান সফরকারী গোলরক্ষক জোসে গেরা।
বিরতির পরও একই ধাঁচে খেলতে থাকে বিশ্বকাপের তিনবারের শিরোপাজয়ীরা। তবে তাদের সামনে বাধার দেয়াল হয়ে আবির্ভূত হন গেরা। ম্যাচের ৫০ ও ৫২তম মিনিটে দুবার মেসির প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন তিনি। আক্রমণের বন্যা বইয়ে দেওয়ার পরও গোল না পাওয়ায় চাপ জমতে থাকে স্কালোনির দলের ওপর।
৭৮তম মিনিটে অবসান হয় অচলাবস্থার। মেসির ফ্রি-কিক পোস্টে লেগে ফেরার পর বল বুক দিয়ে নামানোর পর শট নিতে গিয়ে ব্যর্থ হন লেয়ান্দ্রো পারেদেস। তবে সুযোগ চলে আসে পাশেই থাকা বদলি আলমাদার সামনে। দুরূহ কোণ থেকে বাঁ পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৮৩ হাজারের বেশি দর্শককে উল্লাসে মাতান মেসি। চোখ জুড়ানো ফ্রি-কিকে কাছের পোস্ট দিয়ে গোল করেন তিনি। রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী তারকার প্রয়াস ফেরানোর কোনো উপায় ছিল না গেরার।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির গোল সংখ্যা বেড়ে হলো ৯৯টি। অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে তিনি পাচ্ছেন জাতীয় দলের জার্সিতে গোলের সেঞ্চুরি করার সুযোগ। আগামী বুধবার রাতে আরেকটি প্রীতি ম্যাচে কুরাসাওয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা।
Comments