কেন চেলসি ছেড়েছিলেন ডি ব্রুইনা-সালাহ, অবশেষে জানালেন মরিনহো
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কিংবদন্তিদের তালিকায় ইতোমধ্যে আসন পাকা করে ফেলেছেন দুজন। কেভিন ডি ব্রুইনা ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে, মোহামেদ সালাহ লিভারপুলের জার্সিতে। তবে ঘটতে পারত ভিন্ন কিছু। অল্প সময় কাটিয়ে ক্লাব না ছাড়লে তারা চেলসির হয়েই ছড়াতে পারতেন আলো।
২০১৪ সালে ব্লুজদের ডেরা ছেড়ে যাওয়ার আগে বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনা খেলেছিলেন স্রেফ ৯ ম্যাচ। মিশরীয় ফরোয়ার্ড সালাহ ২০১৬ সালে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ক্লাবটিকে বিদায় বলার আগে মাঠে নেমেছিলেন মাত্র ১৯ ম্যাচে। ভিএফএল ভলফসবুর্গ ঘুরে ডি ব্রুইনা সিটিতে যোগ দেন ২০১৫ সালে। এএস রোমা থেকে সালাহ লিভারপুলের নাম লেখান ২০১৭ সালে। দুজনের পরের গল্পটা সাফল্যে রাঙা।
তরুণ বয়সের ডি ব্রুইনা ও সালাহর চেলসি অধ্যায়ের ইতি ঘটার পেছনে চেলসির তৎকালীন কোচ জোসে মরিনহোর দায় দেখেন অনেকে। তবে লম্বা সময় পর মুখ খুলে 'দ্য স্পেশাল ওয়ান' খ্যাত পর্তুগিজ কোচ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
সোমবার একটি পডকাস্টে মরিনহো তুলে ধরেন সময়ের দুই সেরা তারকার চেলসি ছাড়ার কারণ, 'সত্যি বলতে, তারা চলে গিয়েছিল কারণ তারা চলে যেতে চেয়েছিল। তারা চলে গিয়েছিল কারণ তারা (মূল একাদশে নিয়মিত খেলার জন্য) অপেক্ষা করতে চায়নি। ইতিহাস থেকে প্রমাণ মিলেছে যে তাদের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কারণ তারা দুর্দান্ত ক্যারিয়ার পেয়েছে এবং বিশ্বমানে পৌঁছেছে। তবে মাঝে মাঝে তরুণ ছেলেরা এরকম সিদ্ধান্ত নেয় কারণ তারা অপেক্ষা করতে চায় না অথবা তাদের শান্ত থাকার মতো এবং সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করার মতো ধৈর্য নেই। আর অনেক সময়ই তাদের ক্যারিয়ার ভুল দিকে মোড় নেয়।'
ম্যান সিটির হয়ে পাঁচটি প্রিমিয়ার লিগ ও একটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ডি ব্রুইনার চেলসি ছাড়ার ঘটনা বিস্তারিত জানান ৬০ বছর বয়সী মরিনহো, 'কেভিনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। আমরা এশিয়াতে প্রাক-মৌসুমে গিয়েছিলাম। আমরা ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডে গিয়েছিলাম এবং কেভিনের জার্মান একটি ক্লাবে ধারে যাওয়ার কথা ছিল। আমি তখন চেলসি কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম, "না, আমি চাই না সে ধারে অন্য কোথাও যাক। আমি তাকে আমার সঙ্গে চাই।" সে আমার সঙ্গে থাকল এবং শুরুর একাদশে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছিল। এরপর আমরা ইউরোপিয়ান সুপার কাপে বায়ার্নের (মিউনিখ) বিপক্ষে খেলি এবং সে ওই ম্যাচে খেলেনি। পরদিন সে ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিল।'
'আমরা প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলেছিলাম ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে এবং গোলশূন্য ড্র করেছিলাম। সে বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমে কয়েক মিনিট খেলেছিল। কিন্তু এটা তার জন্য যথেষ্ট ছিল না এবং সে দল ছাড়তে চেয়েছিল।'
ডি ব্রুইনা-সালাহর বিদায়ের পেছনে তার ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করেন বর্তমানে ইতালিয়ান ক্লাব রোমার দায়িত্বে থাকা মরিনহো, 'যদি আপনি চেলসির মতো ক্লাবে থাকেন এবং ছেড়ে যেতে চান, তাহলে চলে যেতে পারেন এবং সেখানে নতুন একজন আসবে। তারা ছিল তরুণ এবং অপেক্ষা করতে চায়নি। তাদের ক্যারিয়ার এখন সাক্ষ্য দেয় যে, তারা সঠিক ছিল। তবে তাদের দল ছাড়ার পেছনে আমার কোনো ভূমিকা ছিল না। অন্য অনেকেই বলতে পারে যে, আমি তাদেরকে দল ছাড়তে বাধ্য করেছি, কিন্তু তাদের (ডি ব্রুইনা-সালাহ) ক্ষেত্রে নয়।'
উল্লেখ্য, দুই দফায় চেলসির কোচ ছিলেন মরিনহো। প্রথমবার ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল ও দ্বিতীয়বার ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। দুই দফায় ক্লাবটিকে তিনটি প্রিমিয়ার লিগসহ মোট আটটি শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি।
Comments