ওয়েম্বলির চাপেই পেনাল্টি নেননি হালান্ড, বললেন রুনি

সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল তারকায় ঠাসা শক্তিশালী ম্যানচেস্টার সিটি। আর্লিং হালান্ড শুরুতে স্পট-কিকের প্রস্তুতি নিলেও পরে ওমর মারমুশের হাতে বল তুলে দেন। বড় মঞ্চে স্পট-কিক নিয়ে জালের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেননি মিশরীয় ফরোয়ার্ড। শেষমেশ ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছেই হেরেই গেছে চরম বাজে একটি মৌসুম কাটানো সিটিজেনরা।
গতকাল শনিবার রাতে এফএ কাপের ফাইনালে পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্যালেস। দক্ষিণ লন্ডনের ক্লাবটির ১১৯ বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো বড় শিরোপা। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে প্রায় ৮৫ হাজার দর্শকের সামনে ১৬তম মিনিটে দানিয়েল মুনোজের ক্রসে দারুণ ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন এবেরেচি এজে। ইংলিশ মিডফিল্ডারের গোলটিই ব্যবধান গড়ে দেয় ম্যাচে।
৩৩তম মিনিটে ডি-বক্সে বার্নার্দো সিলভা ফাউলের শিকার হলে রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট-কিক নেওয়ার মূল দায়িত্ব হালান্ডের হলেও মাঠে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্রের। নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার বল দিয়ে দেন মারমুশকে। বাকি সবার মতো ম্যান সিটির কোচ গার্দিওলাও তাতে হন বিস্মিত। এরপর মারমুশের জোরাল শট খুঁজে নিতে পারেনি কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন প্যালেসের ইংলিশ গোলরক্ষক ডিন হেন্ডারসন।
বল দখলে রেখে ফাইনালের বাকি অংশে বেশ কিছু আক্রমণ শানায় সিটি। কিন্তু শেষমেশ কষ্টদায়ক হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় হালান্ড-গার্দিওলাদের। গায়ে ফেভারিট তকমা থাকলেও হেন্ডারসনের তৈরি করা দেয়ালে দলটি ফাটল ধরাতে পারেনি। গুরুত্বপূর্ণ পেনাল্টি ফেরানোসহ মোট ছয়টি সেভ করেন তিনি।
স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বজুড়ে ফুটবল অঙ্গনে প্রশ্ন ঘুরছে, কেন পেনাল্টি নেননি হালান্ড? ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করা ওয়েইন রুনি চেষ্টা করেছেন ব্যাখ্যা দেওয়ার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি ইংলিশ ফরোয়ার্ডের মতে, ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা থেকে চাপ জেঁকে ধরেছিল হালান্ডকে, 'সাধারণত হালান্ড যখন (গোল করার) সুযোগ নষ্ট করে, তখন তাকে দেখে বোঝা যায় যে, সে হতাশ এবং এটা তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। হয়তো ওয়েম্বলির মতো বড় মঞ্চে পেনাল্টি নেওয়ার ভাবনাটা তার ওপর বেশিই চাপ তৈরি করে ফেলেছিল। বলা তো যায় না, সেও তো মানুষ।'
ওয়েম্বলিতে এর আগে পাঁচবার খেলতে নেমে কোনো গোল পাননি হালান্ড। সেই অপেক্ষার পালা আরও বেড়েছে প্যালেসের বিপক্ষে ম্যাচের পর। তাছাড়া, চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩০ গোল করলেও সাতটি পেনাল্টি নিয়ে তিনটিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
রুনি বলেছেন, এসব মুহূর্তই লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে হালান্ডসহ বাকিদের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়, 'হালান্ড নিঃসন্দেহে একজন বিশ্বমানের ফরোয়ার্ড। তবে মেসি ও রোনালদোর কথা যদি আমরা ধরি, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে তারা কিছুতেই (পেনাল্টি নেওয়ার জন্য) অন্য কারও হাতে বলটা তুলে দিত না। এটাই হালান্ড অথবা কিলিয়ান এমবাপে অথবা এই ধরনের খেলোয়াড়দের থেকে মেসি-রোনালদোকে আলাদা করে। তারা দুজন মরিয়া থাকে এবং প্রতিটি ম্যাচেই গোল করতে চায়।'
এফএ কাপের ফাইনালে হারায় ২০২৪-২৫ মৌসুমে কোনো শিরোপা জেতার আশা শেষ হয়ে গেছে ম্যান সিটির। আগামী মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। ৩৬ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ছয় নম্বরে। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ পাঁচটি দল জায়গা পাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
Comments