ঝুঁকি মেনে নিয়েই মেরে খেলার ধরনে থাকবে বাংলাদেশ

Bangladesh cricket team
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার সুফলে চূড়ায় যাওয়ার সুযোগ যেমন আছে, তেমনি আচমকা ধসে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও থাকে। এই পথে ছুটতে বাংলাদেশ দল জানে বিপদের ঝুঁকি। কিন্তু ঝুঁকি জেনেও ইতিবাচক অভিপ্রায় থেকে সরে দাঁড়ানোর কোন ইচ্ছা নেই তাদের। আয়ারল্যান্ডের কাছে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে এমন এক ধসের পরও তাই দলে নেই কোন হতাশা। তাসকিন আহমেদ বরং জানালেন, আদর্শ পন্থাতেই আছেন তারা।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই শুরু হয় বাংলাদেশের নতুন ঘরানার টি-টোয়েন্টি। কিছুটা ট্রিকি উইকেটে ইতিবাচক অ্যাপ্রোচ নিয়ে জস বাটলারদের ৩-০ ব্যবধানে ধরাশায়ী করে সাকিব আল হাসানের দল। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা হয় একদম 'পাটা' উইকেটে। আদর্শ ব্যাটিং বান্ধব বাইশগজে বাংলাদেশের খেলায় হয় আগ্রাসী ঘরানার।

দুই ম্যাচেই দল পায় দুইশো ছাড়ানো পুঁজি।  প্রথম ম্যাচে ১৯.২ ওভারে ২০৭ রান আনার পর নামে বৃষ্টি। না হয় সেদিনই এই সংস্করণে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড হয়ে যেত। ওই ম্যাচ বৃষ্টি আইনে ২২ রানে জেতার পর আরও আগ্রাসী হয়ে উঠে বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে ১৭ ওভারে নেমে আসা পরের ম্যাচে ৩ উইকেটে ২০২ রান করে ফেলে বাংলাদেশ। জয় আসে ৭৭ রানে।

শুক্রবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতেও আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ খেলতে থাকে একই অ্যাপ্রোচ। মুখোমুখি প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন লিটন দাস। আরেক ওপেনার রনি তালুকদারও ছিলেন তেতে। তবে তাদের ঝাঁজ বেশিক্ষণ টেকেনি এবার। মারতেই গিয়েই পড়তে থাকে একের পর এক উইকেট। দুই ওপেনারের পর একই মেজাজ দেখাতে গিয়ে কাটা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়রা।

৪১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও ধরণ বদলায়নি দল। রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদরাও মারতে গিয়ে বিলিয়ে দেন উইকেট। শামীম হোসেনের প্রতিরোধের পরও ১২৪ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। আয়ারল্যান্ড শেষ ম্যাচে তাই জিতে যায় ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

সিরিজ শেষে কথা বলতে এসে তাসকিন জানান, ব্যর্থ হলেও মেরে খেলার অভিপ্রায়ে তাদের কোন ভুল ছিল না,   'আজকে হয়ত আমরা ব্যাটিং ওয়াইজ আমরা কলাপ্স করেছি। কিন্তু এরকম ইন্টেন্ট না থাকলে দুইটা ম্যাচে দুশো হইত না, এটা সত্যি কথা, বুঝতে হবে। আমরা যদি আগামীতে টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে চাই আমাদের ইন্টেন্টটা থাকতে হবে। বোলার, ব্যাটার সবারই আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে এগুতে হবে। কিছু কিছু দিন হয়ত এরকম ইন্টেন্ট দেখাতে গিয়ে ধস নামবে। এটাও আমরা মেনে নিয়ে আগাবো। এমন না যে ভয়ডর নিয়ে থাকব। ভবিষ্যতে এটা আমাদের সাহায্য করবে। ফেইল করার ভয়টাকে বাদ দিয়ে ক্রিকেট খেলা। এই অভিপ্রায় আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।'

আগামীতে বড় দলগুলোর বিপক্ষে ভালো উইকেটে খেলতে গেলে এই ধরণ নিজেদের এগিয়ে রাখবে বলে মনে করেন তাসকিন,  'সামনে যেমন বড় বড় দলগুলোর সঙ্গে ভালো উইকেটে খেলা হবে। প্রতিপক্ষ যখন ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াও থাকবে। আমাদের কিন্তু রান করতেই হবে ভাই। এই ইন্টেন্ট আমাদের সাহায্য করবে। কিছুদিন ধস হতেই পারে। আমি মনে করি না যে আমরা আমাদের খেলার ধরণ বদল করব। আমাদের ম্যানেজমেন্ট বা খেলোয়াড়দের যে চিন্তাধারা। ব্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগে আমরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলব আগামীতে। ম্যানেজমেন্ট আমাদেরকে বলেছে যেন  ভয়ডরহীন থাকি, এটা আমাদের আগামীতে বড় দল হতে সাহায্য করবে।'

'হ্যাঁ, অবশ্যই হারতে ভালো লাগবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে যদি ধস নামে বা ভুল হয়…তবু আমাদের (মেরে খেলার) তীব্রতা কমাবো না। এই রকম খেলার ধরণ আমরা ধরে রাখব।'

Comments