ডাকেটের ব্যক্তিগত কীর্তির দিনে ইংল্যান্ডের রেকর্ড পুঁজি

ক্যারিয়ারে প্রথমবার আইসিসি ইভেন্টে খেলতে নামলেন বেন ডাকেট। দিনটিকে সেঞ্চুরি করে শুধু স্মরণীয় বানালেন না, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও গড়লেন। নিউজিল্যান্ডের ন্যাথান অ্যাস্টলের ১৪৫ ছাড়িয়ে এই বাঁহাতি ওপেনার থামলেন ১৬৫ রানে। তার ইনিংসে চড়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কিউইদের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের রেকর্ডও নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড।
শনিবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংলিশরা গড়ল ৩৫১ রানের পুঁজি। এর আগে ২০০৪ সালের আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৪৭ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। সেদিনই অ্যাস্টল গড়েছিলেন ওই কীর্তি।
টস হেরে ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামার পর ডাকেটের ১৭ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংস টেকে ১৪৩ বল। ৭৮ বলে ৬৮ রানের ইনিংসে তাকে অভিজ্ঞ জো রুট যা সঙ্গ দেন। আর কোনো ইংলিশ ব্যাটার ত্রিশোর্ধ্ব রান করতে পারেননি। তবে ডাকেটের ঝড়ে বিশাল সংগ্রহই মিলেছে ইংলিশদের।
৬৬ রান খরচে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ উইকেট পান পেসার বেন ডুয়ারশিস। গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট এনে দিয়ে লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা তার বোলিং শেষ করেন ৬৪ রান দিয়ে। বাকি ৩ উইকেটের দুটি গেছে মার্নাস লাবুশেনের ঝুলিতে, একটি গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের।
এদিন প্রথম কয়েক বল খেলেই ফিল সল্ট হয়তো মনে মনে বড় ইনিংসের আশায় ছিলেন। লাহোরের ব্যাটিং-স্বর্গে দুই অঙ্কে পৌঁছে যান ৫ বলে। তবে অ্যালেক্স ক্যারির টুর্নামেন্ট সেরার দাবিদার এক ক্যাচে তাকে ফিরতে হয় ৬ বলে ১০ রান করেই। ডুয়ারশিসের ফুল লেংথের বলে দুই বাউন্ডারি মেরে ফেলা সল্টের সংযোগ হয় ঠিকঠাক। তবে জশ ইংলিসের কাছে গ্লাভস ছেড়ে মিডঅনে ফিল্ডিং করা ক্যারি লাফিয়ে এক হাতে পাখির মতো বলটাকে ধরে ফেলেন।
জেমি স্মিথ এসে একই লেংথের বলে একই জায়গায় ক্যারির হাতেই ধরা পড়েন। ১৩ বলে ১৫ রানের সঙ্গে আফসোস নিয়ে মাঠ ছাড়েন প্রথমবার তিনে নামা এই ব্যাটার।
ধাক্কা সামলে ডাকেট ও রুটের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১৪তম ওভারেই শতরান ছাড়িয়ে যায় ইংল্যান্ড। ৪৯ বলে ফিফটি তুলে নেন ডাকেট, রুটের লেগে যায় ৫৬ বল। ৩০ ওভারে দুইশ পেরিয়ে যায় ইংলিশরা। বড় পুঁজির মঞ্চ তখন প্রস্তুত। পরের ওভারে অস্ট্রেলিয়াকে আরাধ্য ব্রেকথ্রু এনে দেন জ্যাম্পা। ৪ চারে গড়া রুটের ইনিংসের সমাপ্তি টেনে এই লেগি ভাঙেন ১৫৫ বলে ১৫৮ রানের জুটি। সহজেই সিঙ্গেল বের করতে থাকা রুট ৩১তম ওভারে টানা তিন বল দিয়ে ফেলেন ডট। এরপর সুইপ খেলতে গিয়ে ফুল লেংথের বল মিস করে পড়েন এলবিডব্লিউর কবলে।
ডাকেট কিছুক্ষণ পরই তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন ৯৫ বলে। হ্যারি ব্রুককে টিকতে না দিয়ে আউট করে দেন জ্যাম্পা। ৬ বলে তার সংগ্রহ ৩ রান। ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার দেখেশুনে শুরু করলেও ইনিংস শেষ দশ ওভারে প্রবেশ করতেই বিধ্বংসী রূপ বের করে আনেন। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের ওভারে ছয়-চার মারার পর আবার বড় শট খেলতে গিয়ে ২১ বলে ২৩ রানে আউট হন।
একপ্রান্ত আগলে থাকা ডাকেটের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৪৪তম ওভারে তিনশ রান উঠে যায় স্কোরবোর্ডে। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে ব্যর্থ হওয়া লিয়াম লিভিংস্টোন ফিরে যান ১৭ বলে ১৪ রানে। এরপর লাবুশেনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে থামেন ডাকেট। এক অঙ্কে ব্রাইডন কার্স ফিরে গেলেও জোফরা আর্চার ১০ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে খেলেন অপরাজিত ২১ রানের ক্যামিও। এতে সাড়ে তিনশ পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড। শেষ দশ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান আনতে সমর্থ হয় তারা।
পেস বিভাগের মূল অস্ত্রদের না থাকার অভাব ভালোমতো টের পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। চোটের কারণে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নেই নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউড। ব্যক্তিগত কারণে খেলছেন না মিচেল স্টার্ক। তাদের অনুপস্থিতিতে এদিন ডুয়ারশিস ঝলক দেখালেও স্পেসার জনসন ও ন্যাথান এলিস থাকেন উইকেটশূন্য।
Comments