অলককে সেই বিতর্কিত আউটে ইনজামামের দায় দিলেন রশিদ লতিফ

রশিদ লতিফের নাম এলেই বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে ভেসে উঠে ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টের ছবি। বাংলাদেশের জন্য যা হয়ে আছে হাহাকারের। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ধাপে ব্যাটার অলক কাপালির ক্যাচ মাটি থেকে তুলে আম্পায়ারের চোখ ফাঁকি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের এই উইকেটকিপার। টিভি পর্দায় প্রতারণা ধরে পড়ার পর পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। মাত্র ১ উইকেটে বাংলাদেশের হারের পেছনে ওই বিতর্কিত দৃশ্যও রাখে ভূমিকা।
২২ বছর পর সেই ক্যাচ নিয়ে আবার মুখ খুলেছেন রশিদ। পাকিস্তান সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে ফোনালাপে রশিদ বলেন তিনি চেয়েছিলেন অলককে ফিরিয়ে আনতে, তবে ইনজামামের পরামর্শে অলককে ফিরিয়ে আনেননি তারা, 'সেই ক্যাচ নেওয়ার পর আমি ইনজামাম উল হককে জিজ্ঞেস করেছি, "ইনজি ভাই, আমরা কি তাকে ফিরিয়ে আনব? তিনি বলেন, "না, না, না"'
সেবার বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ২২ রানে খেলছিলেন অলক। পেসার ইয়াসির আলি আউটসাইড এজড হয়ে তার ক্যাচ যায় কিপার রশিদের কাছে। পাকিস্তান অধিনায়ক ডানদিকে লাফিয়ে ক্যাচ ধরলেও এরমাঝের কিছু দৃশ্য এড়িয়ে যায় আম্পায়ার অশোকা ডি সিলভা ও রাসেল টিফিনের চোখ। অলক প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর রিপ্লেতে দেখা যায় ক্যাচটা আসলে ঠিকমতো নিতে পারেননি রশিদ। বল মাটি থেকে কুড়িয়ে নেন তিনি।
সেই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬১ রান তাড়ায় ২০৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তান। ইনজামামের সেঞ্চুরিতে পরে তারা জিতে যায় ১ উইকেটে। পাকিস্তানের ইনিংসেও একাধিক এলবিডব্লিউ না দেওয়া নিয়ে হতাশা ছিলো বাংলাদেশ দলের।
মাটি থেকে ক্যাচ তুলে প্রতারণা ধরা পড়ায় পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়া রশিদ এরপর আর টেস্টেই ফিরতে পারেননি। সেটাই হয়ে আছে তার শেষ টেস্ট। পেছনে তাকিয়ে অলকের সঙ্গে প্রতারণা করায় অনুশোচনা হয় রশিদের, তবে দায়টা তিনি ইনজামামকেই দেন, 'অবশ্যই যা করেছি সেজন্য আমার অনুশোচনা হয়। তবে আমি ইনজামামকেও দায় দেই।'
তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পেছনেও এই কারণ তুলে ধরেন রশিদ, 'এরপর তো আমি পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ হলাম, ফিরে পাঁচটা ওয়ানডে খেলেছি। ইনজামাম এরপর অধিনায়ক হয়ে গেল আর আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেল।'
রশিদ চলমান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ভরাডুবি নিয়েও কথা বলেছেন। দুই দল প্রায় একই কারণে সংকটে পড়েছে বলে মত তার,
'আমাদের দল নির্বাচন নিয়ে ইয়সু আছে। পাঁচ বছরে কর্তৃপক্ষ অনেক বদল এনেছে। চার বছর ২৬ জন নির্বাচক কাজ করেছে। এমনকি পিসিবি প্রধানের পদও ঘন ঘন বদল হয়েছে। এজন্য আমরা স্থিরতা খুঁজে পাচ্ছি না।'
'আমার মনে হয় বাংলাদেশের-পাকিস্তানের সংকটের একই ইস্যু। ক্রিকেটের পেছনে চিন্তার জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানি না কে বোর্ড চালায়। তবে রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশেও যুক্ত আছেন যেমনটা হয় পাকিস্তানে।'
Comments