স্টার্কের ‘শূন্য’র ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের যত কীর্তি

ব্যক্তিগত রান, দলীয় রান, ছক্কা, স্ট্রাইক রেট, খরুচে বোলিং— কিছুই বাদ যায়নি। ধর্মশালায় গতকাল শনিবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার রানবন্যার রোমাঞ্চকর ম্যাচে যত রেকর্ড হয়েছে, সবই দেখে আসি চলুন…
০- বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকেন মিচেল স্টার্ক। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে টানা ২৩ ম্যাচের সবকটিতেই উইকেট শিকার করেন তিনি। বিশ্বকাপের মঞ্চে ২৪তম ম্যাচে এসে বোলিংয়ে খালি হাতে মাঠ ছাড়েন বাঁহাতি অজি পেসার।
৯.১৩- অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেডের ১৭৫ রানের জুটিতে রান রেট ছিল ৯.১৩। ওয়ানডে ক্রিকেট এর চেয়ে বেশি রান রেটে দেড়শ রানের চেয়ে বড় উদ্বোধনী জুটি দেখেনি আগে কখনোই। এর আগে সর্বোচ্চ রান রেটে দেড়শর বেশি রানের উদ্বোধনী জুটি ছিল যৌথভাবে দুটি। ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টো ও জেসন রয় মিলে ১০৫ বলে ১৫৯ রানের জুটি গড়েছিলেন, ২০১৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সমান রান রেটে ২০০৮ সালে ১০৯ বলে ১৬৫ রানের জুটি এসেছিল নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জেসি রাইডারের ব্যাট থেকে, সেটি ছিল আবার ইংল্যান্ডেরই বিপক্ষে।
১৭- অস্ট্রেলিয়ার আট ব্যাটার দুই অঙ্কের ইনিংস খেলেন, এরপর নিউজিল্যান্ডের নয়জনের ব্যাট থেকে আসে দুই অঙ্কের ইনিংস। সব মিলিয়ে পুরো ম্যাচে ১৭ জন ব্যাটার পৌঁছান দুই অঙ্কে। বিশ্বকাপে এক ম্যাচে যা সর্বোচ্চ। এর আগে বিশ্বমঞ্চে কোনো ম্যাচে ১৬টির বেশি দুই অঙ্কের ইনিংস দেখা যায়নি।
২০- ওয়ানডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারে এদিন। চলতি বিশ্বকাপেই নিজেদের আগের সর্বোচ্চ ১৯টি ছক্কার কীর্তি ছুঁয়েছিল তারা, পাকিস্তানের বিপক্ষে। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেটা ছাড়িয়ে ২০টি ছক্কার সাহায্যে নতুন রেকর্ড গড়ে দলটি। দুই ওপেনার ওয়ার্নার ছয়টি ও হেড সাতটি ছক্কা হাঁকান। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দুটি, জশ ইংলিস একটি ও প্যাট কামিন্স চারটি ছক্কা মারেন।
৩২- বিশ্বকাপে এক ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কার মার দেখা যায় ধর্মশালায়। অস্ট্রেলিয়ার ২০টি ছয়ের পর নিউজিল্যান্ড মারে ১২টি ছক্কা। বিশ্বমঞ্চে দুই দল মিলিয়ে ৩২টির বেশি ছয়ের মার হয়েছিল আর মাত্র একটি ম্যাচে। ২০১৯ সালের আসরে ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান মিলে মেরেছিল মোট ৩৩টি ছয়।
৮৯- বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ান কোনো বোলারের সবচেয়ে বেশি রান খরচের বিব্রতকর রেকর্ড এটি। এর আগে দেশটির আর কেউ বিশ্বকাপের মঞ্চে ৮০ রানের বেশি দেননি। স্টার্ক দেন ৯ ওভারে ৮৯ রান।
১৬২.৬৮- বিশ্বকাপে ওপেনারদের সেঞ্চুরির ইনিংসে সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট। ৬৭ বলে ১০৯ রানের ইনিংসে হেডের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৬২.৬৮। বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে এর আগে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন রোহিত শর্মা। চলতি বিশ্বকাপেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারতের রোহিত ৮৪ বলে .১৩১ রানের ইনিংসে খেলেন, যেখানে স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫৫.৯৫। বিশ্বকাপে ওপেনারদের আর কেউ দেড়শর বেশি স্ট্রাইক রেটে একশ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলতে পারেননি।
৩৮৩- বিশ্বকাপে এত বড় স্কোর করে হারেনি কোনো দল। ৩৮৩ রান করেও হারতে হয় কিউইদের। এর আগে সর্বোচ্চ ৩৪৪ রান করে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। চলতি বিশ্বকাপেই লঙ্কানরা পাকিস্তানের কাছে পরাস্ত হয়। নিউজিল্যান্ডের ৩৮৩ রান লক্ষ্য তাড়াতেও বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্কোর। পরে ব্যাট করে বিশ্বকাপে কোনো দল অতীতে ৩৫০ রানের বেশি করতে পারেনি।
৩৮৮- ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানে অলআউটের স্কোর। ধর্মশালায় প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া চার বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় ৩৮৮ রানে। সবকটি উইকেট হারিয়ে এর চেয়ে বেশি রান ওয়ানডে ইতিহাসে হয়েছিল এর আগে কেবল একবার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৮ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ৩৮৯ রান করে।
৭৭১- বিশ্বকাপের এক ম্যাচ সবচেয়ে বেশি রান হয় এদিন। অস্ট্রেলিয়ার ৩৮৮ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড থামে ৩৮৩ রানে। এই ম্যাচের মোট ৭৭১ রান ছাড়িয়ে যায় আগের রেকর্ড ৭৫৪ রান। চলতি বিশ্বকাপেই দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে সেটা হয়েছিল। এর বাইরে বিশ্বকাপে আর মাত্র একটি ম্যাচে দুই দল মিলে সাতশ রানের বেশি করেছিল। সেটি ২০১৯ বিশ্বকাপের ম্যাচে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার ৩৮১ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ করেছিল ৩৩১ রান।
Comments