সেই সাকিবই এবার চাপে কাবু

বিশ্বকাপে আসার আগে একটি সাক্ষাতকার দিয়ে আলোচনা, সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবালকে নিয়ে অপ্রিয় অনেক কথা অকপটে বলে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ প্রস্তুতির।

কলকাতা থেকে

সেই সাকিবই এবার চাপে কাবু

বিশ্বকাপে আসার আগে একটি সাক্ষাতকার দিয়ে আলোচনা, সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবালকে নিয়ে অপ্রিয় অনেক কথা অকপটে বলে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ প্রস্তুতির।
Shakib Al Hasan

সাকিব আল হাসান মাঠের বাইরে অনেক বিতর্কের জন্ম দেন। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে অহরহ আলোচনায় থেকেছেন তিনি খেলার বাইরের প্রসঙ্গে। তবে তার কড়া নিন্দুকরাও একমত হতেন এই ভেবে যে, মাঠের বাইরে যাই করুন, মাঠে কোন প্রভাব পড়ে না। কোন কিছুকে পাত্তা না দিয়ে নিজের আসল কাজটা করতে পারেন তিনি, এজন্য তাকে চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারও ডাকেন অনেকে। এবার বিশ্বকাপে এই সমীকরণ একদম মিলছে না। মনে হচ্ছে মাঠ ও মাঠের বাইরের নানান ঘটনায় চরম কোণঠাসা হয়ে আছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

বিশ্বকাপে আসার আগে একটি সাক্ষাতকার দিয়ে আলোচনা, সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবালকে নিয়ে অপ্রিয় অনেক কথা অকপটে বলে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ প্রস্তুতির।

বিসিবির একজন চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড় আরেকজন চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড়কে নিয়ে স্পর্শকাতর কথা প্রকাশ্যে বলাটা ক্রিকেট বিশ্বের কাছেও ছিল বিস্ময়কর। স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট থেকে সবারই মনোযোগ সরে যায়। চটুল বিষয়ের আলাপ অন্য চক্রে ফেলে দেয় দেশের ক্রিকেটকে।

তবে খেলা শুরুর পর সব উবে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল সাকিব বলেই। কতবারই তো এমন হয়েছে সাকিব মাঠের বাইরে বিতর্ক ডেকে এনেছেন, সেই বিতর্ক মনে হয়েছে বরং তাকে করেছে আরও 'চার্জড আপ'। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে দেখা গেছে খেলে ফেলেছেন দারুণ কোন ইনিংস। সব আলোচনা তখন ঘুরিয়েও দিতে পেরেছেন।

এবার কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ২০১৯ বিশ্বকাপে ছয়শোর বেশি রান করেছিলেন। এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, একটা কিক (ধাক্কা) দরকার ছিল তার। সেই কিক পেয়েই জ্বলে উঠেছিলেন। এবার নানাবিধ বিতর্ক ডেকে নেনেও কিক বানাতে কি ব্যর্থ তিনি?

পাঁচ ম্যাচে স্রেফ ৬১ রান নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে নেমেছিলেন সাকিব। ক্রিজে গিয়ে মনে হয়েছে যেকোনোভাবে টিকে অন্তত ২০ রান করা তার লক্ষ্য। সাদামাটা বলেও কূল পাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ৩০ বলে ১১! চরম জড়সড়ো, আড়ষ্ট অবস্থা থেকে বেরুতে চেয়েও আর পারেননি। ৬৪ বলে ৪৩ রানের ইনিংসটা যখন বল আকাশে তুলে থেমেছে মাথা নিচু করে সাকিবকে বেরুতে হয়েছে ভীষণ পরাজিত মনে। সেই তেজ, সেই জৌলুস কোন কিছুই নেই শরীরী ভাষায়।

সাকিবকে যে প্রতিপক্ষ পড়ে ফেলেছে আউটের ধরণও বলবে। হারিস রউফের শর্ট বল টেনে মারতে গিয়ে টাইমিং জমাতে পারেননি, সহজ ক্যাচ উঠেছে। এবার বিশ্বকাপে এই নিয়ে তিনবার শর্ট বলে কাবু হলেন তিনি। আগের দিন অনুশীলনে প্রচুর শর্ট বলে অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। নেটের অনুশীলনেও শর্ট বল ঠিকমতো পুল করতে পারছিলেন না। ৩৬ পেরুনো বাঁহাতি ব্যাটারের রিফ্লেক্স নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

তবে সাকিবের যেটা নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠবে সেটা হচ্ছে- 'ক্যারেক্টার'। মাঠের খেলায় সব সময় সাহস নিয়ে খেলা সাকিব নিজেকে এতটা গুটিয়ে রেখেছিলেন আর কবে! ম্যাচ শেষে বিপর্যস্ত চেহারাও বলে দিচ্ছিল সাকিবের কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। প্রবল চাপে কাবু সাকিবকে দেখাচ্ছে ভীষণ অচেনা।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago