নিবন্ধন পেতে রোববার ইসিতে আবেদন করবে এনসিপি, খসড়া গঠনতন্ত্র পাস

বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কারের রূপরেখা দিয়ে খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
এর মধ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের সরাসরি নির্বাচন এবং একটি রাজনৈতিক পরিষদ ও একটি জাতীয় পরিষদ গঠনের বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আজ শুক্রবার এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পার্টির ষষ্ঠ সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে এনসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সারা দেশের কাউন্সিলদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। একজন সদস্য জীবনে সর্বোচ্চ দুইবার সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ দুইবার সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
পার্টির একটি 'রাজনৈতিক পরিষদ' থাকবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাজনৈতিক পরিষদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। এই পরিষদ ন্যাশনাল কাউন্সিলের ভোটে নির্বাচিত হবে। সর্বনিম্ন ১১ জন থেকে সর্বোচ্চ ১৫ জন পরিষদের সদস্য হবেন।
নির্বাচিত ১১ জন সদস্যের মধ্যে ন্যূনতম তিনজন নারী সদস্য থাকতে হবে। পদাধিকারবলে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাজনৈতিক পর্ষদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। এই পর্ষদের বাকি দুইজন সদস্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হবেন, বলেন তিনি।
আখতার আরও বলেন, এনসিপির একটি 'ন্যাশনাল কাউন্সিল' থাকবে। এই ফোরাম 'রাজনৈতিক পরিষদ' নির্বাচন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন এবং জরুরি সময়ে কিছু কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নেবে। ন্যাশনাল কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটি, অঙ্গ সংগঠনের নির্বাহী কমিটি, জেলা পদমর্যাদার কমিটি থেকে পাঁচজন এবং উপজেলা পদ মর্যাদার কমিটি থেকে দুইজন সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির একটি কেন্দ্রীয় কমিটি থাকবে। যা দলের সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী, অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাধারণ সদস্য এবং ক্ষেত্র বিশেষে জেলা সভাপতির সমন্বয়ে গঠিত হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ হবে তিন বছর। মেয়াদের শেষ ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
এনসিপির 'খসড়া গঠনতন্ত্র' আগামী কাউন্সিলের আগে প্রয়োজনে বর্তমান প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কমিটি সংশোধন করতে পারবে।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, আগামী রোববার তারা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবেন। প্রয়োজনীয় সব শর্তাবলী ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে।
আখতার জানান, সভায় দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সামগ্রিক যোগাযোগের জন্য দলের পক্ষ থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, 'পূর্ণাঙ্গ খসড়া গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে আবেদন করার সময় জাতির কাছে প্রকাশ করব।'
গত কয়েক মাস ধরে আপনারা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। এখন সেই কমিশনের অধীনেই আপনারা নিবন্ধনের আবেদন করছেন। আপনারা আগের অবস্থান থেকে সরে আসছেন কি না জানতে চাইলে সারজিস আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'এর আগে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও আচরণ তাদের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলতে আমাদের বাধ্য করেছে।'
তিনি বলেন, 'তাদের আচরণ স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগামীতেও আমরা পর্যবেক্ষণ করব এবং অন্য কোনো পন্থা বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই।'
'আমরা যে প্রশ্নগুলো তুলেছি, সেই প্রশ্ন এখনো আমাদের আছে। পরবর্তীতে যদি কেউ স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধক হয়ে কেউ দাঁড়ায়, তাদের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন করব,' বলেন তিনি।
Comments