আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

রানআউটে খেই হারানো নেদারল্যান্ডসের পুঁজি ১৭৯ রান

অথচ ১১ ওভারে ৭২ রান এনে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল ডাচরা।

রানআউটে খেই হারানো নেদারল্যান্ডসের পুঁজি ১৭৯ রান

আফগানিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস
ছবি: এএফপি

একজন-দুজন নয়! চার, চারজন রানআউট! তারা আবার ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম পাঁচজনের মধ্যে। অবিশ্বাস্য ব্যাপারই বটে! নেদারল্যান্ডসের ইনিংসে প্রথম চারজন ব্যাটারই রানআউট হয়েছেন লখনউয়ে। ওয়ানডে ইতিহাসেই এর আগে ঘটেনি তা কখনো। অথচ ১১ ওভারে ৭২ রান এনে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল ডাচরা। রানআউটে খেই হারিয়ে ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে যাওয়া দলটি এরপর অলআউট হয়ে গেছে ১৭৯ রানেই।

শুক্রবার টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া নেদারল্যান্ডস প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায়। আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান স্টাম্পে আক্রমণ করতে থাকেন। পঞ্চম বলেই তার গুগলিতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ওয়েসলি বারেসি। ৩ রানে প্রথম উইকেট নিয়ে এরপর আফগানরা চাপ ধরে রাখতে পারেনি।

মুজিব ও পেসার ফজলহক ফারুকি আলগা বোলিং করেন। বেশ বাইরের লাইনে সুযোগ দেন বাউন্ডারির। ওপেনার ম্যাক্স ও'ডাউড কাটে চার বের করতেও একটু ভুল করেননি। কলিন অ্যাকারম্যানের ব্যাটেও মুজিবের বলে আসে চার। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই ১২টি চার মারে ডাচরা। ১ উইকেটে ৬৬ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ হয়। ভালো শুরুর পরও ছন্নছাড়া হয়ে যাওয়া আফগানরা পাওয়ারপ্লে শেষেই করে হাডল (কাঁধে হাত রেখে একত্রে গোল হয়ে জড়ো হওয়া)। এরপরই যেন ভোজবাজির মতো বদলে যায় সবকিছু!

দ্বাদশ ওভারে খেলার ধারার বিপরীতে উইকেট পেয়ে যায় আফগানিস্তান। ডাবল নিতে গিয়ে ফাইন লেগ থেকে আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে যান ও'ডাউড। ৪২ বলে ৯ চারে ৪০ রানের সম্ভাবনাময় ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে যায়। আফগান স্পিনাররা এরপর চেপে ধরেন প্রতিপক্ষকে।

রানের দেখা পেতে হাঁসফাঁস করছিলেন দুই ডাচ ব্যাটার। চরম ভোগান্তিতেই পড়েছিলেন সিব্র‍্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। ৩১ বলে ১২ রানে যখন এঙ্গেলব্রেখট, তখন রানের নেশায় হুট করেই মিডঅফের হাতে বল রেখে দৌড় দেন। উইকেটরক্ষক ইকরাম আলীখিলের প্রান্তে রান আউট হয়ে যান অ্যাকারম্যান। ৩৫ বলে ২৯ রানে থামেন।

বিপদের তখনও বাকি! অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস এসে প্যাডল সুইপ খেলতে গিয়ে গড়বড় বাঁধিয়ে ফেলেন। ইকরাম বল পেয়ে যখন স্টাম্প ভাঙেন, ততক্ষণে এডওয়ার্ডস ফিরতে পারেননি। ১ বলে শূন্য রানেই আউট হয়ে যান এডওয়ার্ডস, গোল্ডেন ডাক! নেদারল্যান্ডসের ইনিংসে ঝলমলে রোদের যে আভা মিলছিল, সেটা মিলিয়ে যেন হুট করেই কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা দেয়!

ডাচদের ইনিংসে আঁধার আরও ঘনীভূত হয় পরের দুই ব্যাটারও এক অঙ্কে ফিরে গেলে। বাস ডি লিডি ৩ রানে আউট হয়ে যান মোহাম্মদ নবির বলে ইকরামের হাতে ক্যাচ তুলে। তাকেই ক্যাচ দিয়ে সাকিব জুলফিকারেরও মরণ ঘটে। আফগানদের একাদশে ফিরে আসা স্পিনার নূর আহমেদ পেয়ে যান প্রথম উইকেট।

নিখুঁত লাইন-লেংথে ডাচদের চেপে ধরা নবি ফিরে আসেন ১৫ রানে ৬ ওভারের স্পেল শেষে। ১২ বলে ২ রান আনা লোগান ফন বিক আগবাড়িয়ে খেলতে গিয়ে নবির ফ্লাইটে পরাস্ত হয়ে যান। ৩১তম ওভারে ১৩৪ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে নেদারল্যান্ডস। 

এঙ্গেলব্রেখট একপাশে মনোবল না হারিয়ে খেলে যান। নূরকে টানা দুই চার মেরে ফিফটিও করে ফেলেন ৭৪ বলে। কিন্ত ৩৫তম ওভারে দলকে ১৫২ রানে রেখে তাকেও ফিরে যেতে হয়। ৮৬ বলে ৬ চারে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলা এঙ্গেলব্রেখটেরও আউটের কারণ, রানআউট! রোলফ ফন ডার মারওয়ে বল মিডউইকেটের হাতে রেখে ছুটলে ইকরামের হাতে রানআউট হয়ে যান এঙ্গেলব্রেখট।

দুই অঙ্কে পৌঁছে যাওয়া মারওয়েও আউট হয়ে যান ৩৩ বলে ১১ রান করে। ৪৬.৩ ওভারে নেদারল্যান্ডস শেষমেশ গুটিয়ে যায় ১৭৯ রানেই। নবি ২৮ রানে ৩ উইকেট, নূর ৩১ রানে ২ ও মুজিব ৪০ রানে ১ উইকেট পেলেও রশিদ খানের উইকেটের খাতা থাকে শূন্য।

Comments

The Daily Star  | English

CMP chief orders police to open fire if faced with weapons

The verbal directive, issued over wireless on Tuesday night, applies to all CMP personnel

1h ago