সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করে বিক্রি করছে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকীসহ আওয়ামী সরকার ঘনিষ্ঠদের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পর সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন ছয়টি সম্পত্তি প্রশাসনের অধীনে নিয়েছে যুক্তরাজ্য।
সাইফুজ্জামানের এই সম্পদ বিক্রি করে সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে ঋণদাতাদের দেনা পরিশোধ করার জন্য দেশটির গ্রান্ট থর্নটনের প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই ঋণদাতাদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিবিএস ও ব্রিটিশ আরব কমার্শিয়াল ব্যাংক।
মূলত লন্ডন ও দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক থেকে সাইফুজ্জামানের ছয়টি সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে।
দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করার পর যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের বিপুল সম্পদের বিষয়টি সামনে আসে। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তিনি অবৈধ অর্থ যুক্তরাজ্যে পাচার করেছেন এবং এর মাধ্যমেই এই বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
তার যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি পোর্টফোলিওর মূল্য প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড এবং দেশটিতে তার ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে।
পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের বিষয়ে তদন্তের অংশ হিসেবেই সাইফুজ্জামানের সম্পদ নিয়ে তদন্ত চলছে। গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন পর থেকেই সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠদের দেশ-বিদেশে থাকা অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশে দুর্নীতি বিরোধী তদন্তের অব্যাহত চাপের মুখে পড়ে টিউলিপ যুক্তরাজ্যে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি দুর্নীতির বিচারকার্য শুরু হয়েছে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি অবৈধভাবে আওয়ামী সরকারের কাছ থেকে একটি প্লট পেয়েছিলেন।
যদিও সেই অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সাইফুজ্জামানের যেসব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে লন্ডনের সেন্ট জনস উডে ১ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ি এবং লন্ডনের ফিটজরোভিয়ায় একটি ফ্ল্যাট ব্লক।
অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এনসিএ এই ব্যবস্থা নেয়।
সাইফুজ্জামান বরাবরই অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়নের শিকার। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বৈধ অর্থ দিয়েই তিনি বিদেশে সম্পত্তি কিনেছেন।
কোম্পানিজ হাউসে দাখিল করা নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক সাইফুজ্জামানের কাছ থেকে ৩৫ কোটি ডলার বা ২৬ কোটি পাউন্ড পায়। ব্যাংকটি সেই অর্থ ফেরত চায়।
Comments