বিশ্বকাপ বাছাই

উত্তপ্ত পরিস্থিতি, বিতর্কিত লাল কার্ডের ম্যাচে ব্রাজিলকে হারাল আর্জেন্টিনা

ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা

গ্যালারিতে দুই দলের সমর্থকদের মারামারিতে খেলা শুরু হলো ৩০ মিনিট পর। সেই খেলাতেও ছড়াল উত্তেজনা। আগ্রাসী শরীরী ভাষা আর একের পর এক ফাউলে চলতে থাকা ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা। শেষ দিকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জোয়েলিনতনকে লাল কার্ড দেখানো নিয়ে তৈরি হলো বিতর্ক। ঘটনাবহুল ম্যাচে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার।

বুধবার মারাকানায় বাংলাদেশ সময় সকালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের ঘরের মাঠে গিয়ে দলকে জয় পাইয়ে দিতে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্দি।

উরুগুয়ের কাছে আগের ম্যাচ হারের পর এই জয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান শক্ত করেছে আর্জেন্টিনা। ব্রাজিল আছে উল্টো স্রোতে। টানা তিন ম্যাচ হেরে ফার্নান্দো দিনিজের দল নেমে গেছে ছয় নম্বরে। ছয় ম্যাচে মাত্র ৭ পয়েন্ট পেয়েছে তারা। বাছাইপর্বে ব্রাজিলের অবস্থা এখন বেশ নাজুকই বলা চলে।

বল দখলের লড়াইয়ে দুই দলই ছিল সমানে সমান। গোলমুখে সমান আটটা করে শটও মেরেছে দুদল। তাতে আর্জেন্টিনার দুইটি আর ব্রাজিলের চারটি শট ছিল লক্ষ্যে। যদিও কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়েছে আর্জেন্টিনাই। ম্যাচজুড়ে ফাউল হয়েছে ৪২টি। যার ২৬টি ব্রাজিল আর ১৬টি করে আর্জেন্টিনা।

দুই দলের সমর্থকদের দাঙ্গায় কিক-অফের আগেই উত্তাপ ছড়ালে দল নিয়ে বেরিয়ে যান মেসি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর মাঠে ফেরে আর্জেন্টিনা। গ্যালারির এই উত্তেজনার পারদ মাঠেও যেন ছড়িয়ে পড়ে। শুরুর কয়েক মিনিটে দুই দলই জড়ায় একাধিক বিবাদে, অনেকগুলো ফাউলে খেলার গতি হয় মন্থর।

তবে বল পেলেই দুই দলকে দ্রুত আক্রমণে উঠে দেখা যাচ্ছিল। তা ছড়িয়েছে রোমাঞ্চ। প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে উভয় দলের খেই হারানো আক্রমণে চলছিল ম্যাচ।

প্রথমার্ধের সবচেয়ে সুর্বণ সুযোগগুলো পায় ব্রাজিল। ৩৯তম মিনিটে রাফিনিয়ার শট অল্পের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়ে ফিরে যায় কর্নারে। ৪৪তম মিনিটে কর্নার থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণে বক্সের ভেতর বল পান গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি। তার হাফ ভলি ঢুকে যাচ্ছিল জালের দিকে। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজও নাগাল পাননি। তবে তার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মার্কাস আকুনা হাঁটু দিয়ে তা প্রতিহত করে দলকে রক্ষা করেন।

বিরতির পরও একই তালে চলছিল লড়াই। প্রথমার্ধেই ২২ ফাউল হয়ে যাওয়ায় মাঠের ফুটবল ছিল কিছুটা মলিন। ব্রাজিল এগিয়ে যেতে চেষ্টা নেয় মরিয়া, তবে আক্রমণে প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে খেই হারায় তারা। ৬৩তম মিনিটে সুযোগ কাজে লাগায় আর্জেন্টিনা। জিওভান্নি লো সেলসোর মারা বল বক্সে পেয়ে জটলা থেকে লাফিয়ে উঠে হেড নেন ওতামেন্দি। দারুণ হেড জড়িয়ে যায় ব্রাজিলের জালে।

এমন উত্তেজনার ম্যাচে পিছিয়ে গিয়ে খেলার ফেরা কঠিন। গোল খেয়ে ব্রাজিল একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে চেষ্টা করে ফেরার। রাফিনহাকে উঠিয়ে এন্দ্রিক, গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে সরিয়ে জোয়েলিনতনকে নামান দিনিজ। বদল আনে আর্জেন্টিনাও। ৭৮তম মিনিটে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান পুরো ম্যাচে অনেকটা নিষ্প্রভ থাকা মেসি।

৭২তম মিনিটে মাঠে নেমে ৮১তম মিনিটেই সরাসরি লাল কার্ড দেখেন জোয়ালিনতন। বল নিয়ে ছুটে চলা ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারকে পেছন থেকে হাতে টেনে ধরেন রদ্রিগো দি পল। জোয়েলিনতন হাত ছাড়িয়ে নিতে পেছনে ঘুরে দেখান প্রতিক্রিয়া, হাত দিয়ে দেন ধাক্কা। চিলির রেফারি পিয়েরো মাজা তাতে সরাসরি লাল কার্ড দেখান তাকে। আগে তার কোনো হলুদ কার্ড না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা বিতর্ক থাকবে।

এই সিদ্ধান্ত না মেনে তুমুল বিবাদে জড়ায় ব্রাজিল। লম্বা সময় মাঠে থেকে তর্ক করেন জোয়েলিনতন। পরে তাকে অবশ্য বেরুতে হয়। নির্ধারিত সময়ের বাকি নয় ও যোগ করা ছয় মিনিট মিলিয়ে মোট ১৫ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে ব্রাজিল। সমতা ফেরাতে অবশ্য দশ জন নিয়েই তারা যায় অলআউট আক্রমণে। তবে ফল হয়নি। গোলরক্ষক এমিলিয়ানো ব্রাজিলের বাকি সব চেষ্টা নিরাপদ হাতে রুখে দেন।

Comments

The Daily Star  | English

Modi gives forces ‘operational freedom’

Vows ‘crushing blow to terrorism’ after meeting top security brass; Pak FM fears ‘imminent incursion’

1h ago