বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পৃথক দুটি বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত হয়।
এই পরিসংখ্যান গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক কেলেঙ্কারি ও অনিয়মের শিকার হওয়া ব্যাংক সেক্টরের নাজুক অবস্থাকে তুলে ধরেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ অনুমতির ওপর ভিত্তি করে এই ঋণ খেলাপি হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়নি।
আটটি ব্যাংকের পরিচালকরা পারস্পরিক যোগসাজসে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এর বাইরে চারটি ব্যাংক পরিচালকদের আত্মীয়দের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।
ঋণের বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে ১৫৩ কোটি টাকা রাখা হলেও আমানতকারী ও অংশীদারদের স্বার্থ রক্ষায় নয় হাজার ২৮১ কোটি টাকা রাখার কথা ছিল।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, বেশ কয়েকটি ব্যাংকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
দেশব্যাপী কারফিউ জারি ও পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই পরিস্থিতির জন্য মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। কারণ তারা কঠোরভাবে তদারকি করেনি।
আইএমএফ জানিয়েছে, স্বায়ত্তশাসনের অভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা
গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ৩৫টি এনবিএফআইয়ের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা একই বছরের জুনের চেয়ে ৯ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।
সিপিডি বলছে, খেলাপি ঋণ (এনপিএল) এখনো অনিয়ন্ত্রিত। এটি আর্থিক খাতের জন্য হুমকি। সুশাসন ও সংস্কারের অভাবে দেশের ব্যাংকিং খাত ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের খেলাপি ঋণের তথ্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে ন্যাশনাল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক (বিসিবি), পদ্মা ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে...
সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে এ খাতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
দেশের ৬১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ২৫টি ব্যাংক তাদের খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশের নিচে রাখতে পেরেছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ থেকে নিজেদের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)।
জুন শেষে ১০টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের রেকর্ড খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকার ৪৫ শতাংশ।