প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
ই-কমার্স

স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং: কী করবেন, কী করবেন না

ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেইজ বা প্রোফাইল ব্যবহার করেই সাধারণত প্রচারণার কাজ চালানো হয়। এসব পেজ বা প্রোফাইলে পোস্ট করার সময় খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবে যাতে একঘেয়েমি না আসে। তাই বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে সব সময় অডিয়েন্সকে নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং: কী করবেন, কী করবেন না

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয়তা এখন আর শুধু যোগাযোগ বা বিনোদনে গণ্ডিবদ্ধ নেই। বরং এর মধ্য দিয়ে প্রতিদিনই অর্থোপার্জনের বহু নতুন নতুন দ্বার খুলে যাচ্ছে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

এ বিষয়টিকে 'ডিজিটাল মার্কেটিং' বা 'ই-মার্কেটিং'ও বলা হয়। এটি মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন ব্যবহার; যাতে করে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রয় ও প্রচারের মতো কাজ করতে পারে। 

মূলত ক্রেতাদের সঙ্গে এসব মাধ্যমে নিজের যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসার উন্নতি করাই এর মূল উদ্দেশ্য। তবে সহজ এই কাজটি সবসময় সহজ নাও মনে হতে পারে। এই ক্ষেত্রে সফল হবার জন্য তাই মেনে চলা জরুরি কিছু বিষয়। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে কোন কাজটি করণীয় এবং কোনটি এড়িয়ে চলবেন, তা নিয়েই আজকের লেখা। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, কোন কাজগুলো সাফল্যের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে–

নিত্যনতুন বিষয়ের সংযোজন

ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেইজ বা প্রোফাইল ব্যবহার করেই সাধারণত প্রচারণার কাজ চালানো হয়। এসব পেজ বা প্রোফাইলে পোস্ট করার সময় খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবে যাতে একঘেয়েমি না আসে। তাই বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে সব সময় অডিয়েন্সকে নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

আপনার গ্রাহক কারা?

বয়স-পেশা-সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন মাপকাঠিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ও বৈশিষ্ট্য বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। এই বিচিত্র ভাণ্ডার থেকে নিজেদের জন্য আদর্শ অডিয়েন্স বা সম্ভাবনাময় কাস্টমার কারা, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা জানতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রমোশনের সময় 'টার্গেট অডিয়েন্স' হিসেবে বিভিন্ন অঞ্চল, বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদি বিষয় আলাদা করে নির্বাচন করা জরুরি, নয়তো পণ্ডশ্রম হবে। 

নিয়মিত মার্কেটিং করা

যেকোনো কাজেই নিয়মিত হওয়াটা খুব জরুরি। নয়তো যত মানসম্পন্ন কনটেন্টই হোক না কেন, কোথাও না কোথাও তার গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। নিয়মিত পোস্ট করার মাধ্যমে নিজের অডিয়েন্সের কাছে প্রাসঙ্গিক থাকতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন উপলক্ষ আরও বেশি কাজে দেবে। স্বাধীনতা দিবস, ভালোবাসা দিবস বা ঈদ-পূজা-বড়দিনের মতো বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছবি, লেখা বা বক্তব্য পোস্ট করার মাধ্যমে মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে। 

প্রাসঙ্গিক হ্যাশট্যাগ 

হ্যাশট্যাগ মূলত বিভিন্ন কনটেন্টকে শ্রেণিবদ্ধ করতে সহায়তা করে। সামাজিক মাধ্যমের বর্তমান সময়ে এটি খুবই জনপ্রিয় একটি বিষয়।  যেকোনো প্রচারণা ক্যাম্পেইন বা ইভেন্টের জন্য একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হ্যাশট্যাগ পারে সর্বোচ্চ আকর্ষণ কেড়ে নিতে। তাই নিজের পণ্য বা অন্যান্য বিষয়ক প্রচারণার জন্য সৃজনশীল হ্যাশট্যাগ বেশ ভালো সংযোজন হতে পারে। হ্যাশট্যাগ তৈরির জন্য আলাদা অনলাইনে 'হ্যাশট্যাগিফাই মি'-এর মতো কনটেন্ট ক্রিয়েশন টুলও পাওয়া যায়।

কনটেন্ট ক্রিয়েশন টুল

সাদামাটা কনটেন্টের চাইতে একটু বিচিত্র ও সৃজনশীল পোস্টগুলো বেশি মানুষের দৃষ্টি কাড়ে। আর সেজন্য ব্যবহার করা যায় ক্যানভা, অ্যানিমেকার, ইনশট, ক্যাপকাটের মতো ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার অ্যাপ। 

এবারে জেনে নেওয়া যাক, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে কোন মৌলিক বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা জরুরি–

নকল বা চুরি থেকে বিরত থাকুন

মৌলিক কনটেন্টের উপরে কিছু নেই, তা সে ছবি, ভিডিও, লেখা– যাই হোক না কেন। তাই সবসময় চেষ্টা করতে হবে নিজস্ব কনটেন্ট তৈরির। অন্য কোনো জনপ্রিয় ক্ষেত্র থেকে নকল বা চুরি করার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তা পাওয়া গেলেও তা ধোপে টেকে না, সে কথা মনে রাখতে হবে। 

নিন্দুকের কথায় কান দিন, তবে বুঝেশুনে

'নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো, যুগ জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আলো।' – ছোটবেলায় কমবেশি সকলেই বাংলা ব্যাকরণের বদৌলতে এই বাক্যখানার সঙ্গে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিন্দুকদের আমরা এখন চিনি 'হেটার' বা তাদের কাজকে 'ট্রল' হিসেবে। বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে প্রায় সময়ই তারা হাজির থাকে সামাজিক মাধ্যমের কমেন্টবক্সে। 

এক্ষেত্রে সেসব মন্তব্য বা অভিব্যক্তি যাতে ব্যবসার যাত্রায় বাজে প্রভাব না ফেলতে পারে, সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। তবে তারা যদি কখনো যৌক্তিক কিছু বলে, তা গ্রহণ করার মানসিকতাও থাকতে হবে। 

অতি প্রচারণা নয় 

এ যুগে নিজের ঢোল অধিকাংশ সময় নিজেই পেটাতে হয়, এ কথা যেমন সত্য– তেমনি খাজনার চেয়ে যাতে বাজনা বেশি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। প্রচার করুন, অতি প্রচার এড়িয়ে চলুন। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন পাবলিক গ্রুপে স্প্যাম পোস্ট করা থেকেও বিরত থাকুন। এতে করে খুব একটা লাভ হয় না, বরং মানুষের বিরক্তির উদ্রেক হয়।

অন্যের সঙ্গে তুলনা নয়

প্রতিটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব যাত্রা থাকে। সে যাত্রার উত্থান-পতনও নিজের মতো করে সামাল দিতে হয়। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও উন্নতি দেখে তার সঙ্গে নিজেকে বারংবার তুলনা করে আত্মবিশ্বাস কমিয়ে ফেলার কোনো মানে হয় না। 

তাৎক্ষণিক ফলাফল আশা করবেন না

'যে গাছ লকলক করে বেড়েছে, সামান্য বাতাসেই তার ডগা ভেঙেছে', আদুভাইয়ের সেই অধ্যবসায়ী বার্তার কথা মনে আছে তো? রাতারাতি উন্নতির আশা না করে নিজের কাজ ধৈর্য ধরে চালিয়ে গেলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন, জীবনের সবক্ষেত্রেই সাফল্য ধরা দেবে। 

 

তথ্যসূত্র: ইনভেস্টোপিডিয়া, সোশ্যালমিডিয়াটুডে, ডিজিটাল মার্কেটিং ইনস্টিটিউট

 

Comments

The Daily Star  | English

Chennai win fifth IPL title in Dhoni's likely swansong

Chennai Super Kings equalled Mumbai Indians' record of five Indian Premier League (IPL) titles after Mahendra Singh Dhoni's side triumphed in a last-ball thriller, beating champions Gujarat Titans by five wickets in Monday's rain-marred final in Ahmedabad.

2h ago