গবেষণার জন্য ২ হাজার ডলার অনুদান পেলেন ব্র্যাক শিক্ষার্থী হাসিবুল

এই অনুদান নিয়ে তার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি  জবাব দেন, ‘এই তহবিল আমাদের জন্য আরও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পথ সুগম করবে। যার ফলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে আরও এগিয়ে যেতে পারব।’
ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলবিদ্যা বিভাগের চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলবিদ্যা বিভাগের চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলবিদ্যা বিভাগের চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান আহমেদ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ও দ্য নেচার কনজারভেন্সির পক্ষ থেকে 'কমিউনিটি অ্যান্ড কনজারভেশন (সম্প্রদায় ও সংরক্ষণ)' বিষয়ে গবেষণার জন্য 'সিড গ্র্যান্ট' হিসেবে দুই হাজার ডলার অনুদান পেয়েছেন।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ও নেচার কনজারভেন্সি বিশ্বজুড়ে ১৮-২৫ বছর বয়সীদের আট সপ্তাহের ভার্চুয়াল লার্নিং ও নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা দিয়ে থাকে।

সংস্থা দুইটির প্রত্যাশা, এই প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান, উপকরণ ও অর্থের ব্যবহারে তারা নিজেদের সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান খুঁজে বের করবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিবে। এই দুই অলাভজনক পরিবেশবাদী সংগঠন বর্তমানে সারা বিশ্বে সুপেয় পানি সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে অবগত করার বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে।

হাসিবুল জানান, তার প্রকল্পের নাম 'ইকোফ্লো রিভাইভ'। এর মাধ্যমে তিনি বনানী লেকে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে চান। একইসঙ্গে, এই প্রকল্পের সঙ্গে কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদেরও সম্পৃক্ত করতে চান তিনি। তার দুই মাসব্যাপী 'এক্সটার্নশিপে' তিনি বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ বিষয়ে কাজ করেছেন, বিশেষত বনানী লেক ও কড়াইলে।

এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে তিনি স্থানীয় সম্প্রদায়ের সদস্য, সংরক্ষণবাদী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ব্র্যাকের ১২ জন শিক্ষার্থীর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। এ সময় তিনি ও এই ১২ জন শিক্ষার্থী সম্মিলিতভাবে দুইটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেন।

হাসিবুল বলেন, 'এই তহবিল আমাকে ও আমার দলকে আরও গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী হিসেবে এ ধরনের একটি উদ্যোগে জড়িত হতে পেরে আমি খুবই গর্বিত। আশা করছি এই উদ্যোগ অন্যদের জন্য ইতিবাচক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এবং তারাও এ ধরনের সামাজিক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসবে।'

এই অনুদান নিয়ে তার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি  জবাব দেন, 'এই তহবিল আমাদের জন্য আরও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পথ সুগম করবে। যার ফলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে আরও এগিয়ে যেতে পারব।'

উল্লেখিত সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি, হাসিবুল একইসঙ্গে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ল্যাবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষার্থীদের এই সংগঠনের সঙ্গে ব্র্যাকের স্কুল অব জেনারেল এডুকেশন ও ওপেন সোসাইটি ইউনিভার্সিটি নেটওয়ার্কের (ওসান) অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই ল্যাব শিক্ষার্থীদের এমন সব প্রকল্প চালু করতে অনুপ্রাণিত করে, যেগুলো সমাজে ইতিবাচক প্রভাব আনতে পারে এবং সামাজিক উদ্যোগ বা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে। একইসঙ্গে হাসিবুল জাতিসংঘের অ্যাকাডেমিক ইমপ্যাক্ট উদ্যোগের মিলেনিয়াম ফেলো (২০২২ ক্লাস) এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসপায়ার লিডারশিপ প্রোগ্রামের অংশ।

তার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসিবুল জানান, তিনি ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই আশাবাদী।

সামাজিক উদ্যোগ ও চক্রাকার অর্থনীতিতে জোর দিয়ে জলবায়ু ও এর সংরক্ষণ বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চান তিনি।

ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়

Comments