মহাকাশে ৪৩৭ দিন কাটানো রুশ নভোচারী ভ্যালেরি পলিয়াকভের মৃত্যু

মহাকাশে দীর্ঘতম অভিযানের রেকর্ডধারী রুশ নভোচারী ভ্যালেরি পলিয়াকভ আজ ৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন।
৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন রুশ নভোচারী পলিয়াকভ। ছবি: রয়টার্স
৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন রুশ নভোচারী পলিয়াকভ। ছবি: রয়টার্স

মহাকাশে দীর্ঘতম অভিযানের রেকর্ডধারী রুশ নভোচারী ভ্যালেরি পলিয়াকভ আজ ৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন।

আজ মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের সংবাদ সংস্থা বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

পলিয়াকভ ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে টানা ৪৩৭ দিন মির মহাকাশ স্টেশনে অবস্থান করেন। পরীক্ষামূলক এই অভিযানের সময় মহাকাশ স্টেশনটি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছিল।

দীর্ঘ সময়ের জন্য মঙ্গলগ্রহ অভিযানে গেলে নভোচারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে কী না, সেটা যাচাই করার উদ্দেশ্যে তিনি এই পরীক্ষায় অংশ নেন।

পৃথিবীতে ফিরে আসার পর ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায়, ১৪ মাসের এই অভিযান শেষে পলিয়াকভের কোনো শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হয়নি।

রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমস পলিয়াকভের মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বীর ও বৈমানিক-নভোচারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে পলিয়াকভের মৃত্যুর কারণ জানানো হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে প্রকাশিত বার্তায় রসকসমস আরও জানায়, পলিয়াকভের গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে মানবদেহ পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে গভীর মহাকাশে অভিযানের ধকল সামলাতে সক্ষম। 

১৯৪২ সালে মস্কোর দক্ষিণের শহর তুলায় জন্ম নেন পলিয়াকভ। শুরুতে ডাক্তারি পাস করলেও পরবর্তীতে তিনি বৈমানিক ও নভোচারী হিসেবে ক্যারিয়ার তৈরি করেন।

১৯৮৮ সালে তিনি প্রথমবার ৮ মাসব্যাপী একটি মহাকাশ অভিযানে অংশ নেন।

১৯৯৪ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ১৯৯৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পলিয়াকভ মির মহাকাশ স্টেশনে বসবাস করেন ও বিভিন্ন কাজে অংশ নেন। এই অভিযান চলাকালীন সময় মির মোট ৭ হাজার বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। 

মির মহাকাশ স্টেশন। ছবি: নাসা
মির মহাকাশ স্টেশন। ছবি: নাসা

মির মহাকাশ স্টেশনের যাত্রা শুরু ১৯৮৬ সালে। শুরুতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পরবর্তীতে রাশিয়া এই স্টেশনের দায়িত্ব নেয়।

মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও স্নায়ুযুদ্ধের আমলে এই ১৩৫ মেট্রিক টন ওজনের মহাকাশ স্টেশনটি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের যৌথ পরিচালনায় চালিত হত।

তহবিলের অভাবে ২০০১ সালে মিরকে কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করা হয় এবং এটি পৃথিবীর জলবায়ুতে প্রবেশ করে ধ্বংস হয়ে যায়। 

 

Comments