শাঁখা-সিঁদুর পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ, ২ শিক্ষক প্রত্যাহার

নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীতে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরীক্ষার্থীদের শাঁখা-সিঁদুর পরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ২ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও কেন্দ্রসচিব শিউলি আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষকেরা হলেন, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক তাহমিনা ফেরদৌসি ও আকিকুন নাহার।

অভিযোগ আছে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর এসএসসির ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় ওই বিদ্যালয় কেন্দ্রে সব পরীক্ষার্থীরা প্রবেশ করলেও, কয়েকজন শিক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেন শিক্ষক তাহমিনা ফেরদৌসি ও আকিকুন নাহার। তাদের সিথির সিঁদুর ও হাতের শাঁখা খুলে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বলা হয়।

পরে ওই শিক্ষার্থীরা সিঁদুর ও শাঁখা খুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন।

ভুক্তভোগী এক পরীক্ষার্থী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলা দুই পত্রের পরীক্ষা দিয়েছি। কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ইংরেজি পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে গেলে আমাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। কারণ জানতে চাইলে ম্যাডাম বলেন যে সিঁদুর ও শাঁখা নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা যাবে না। আমি ম্যাডামকে বোঝনোর চেষ্টা করলেও, তিনি জোর করে সেগুলো খুলিয়ে আধা ঘণ্টা পর কেন্দ্রে ঢুকতে দেন।'

আরেক পরীক্ষার্থী জানান, 'আমিসহ অন্যান্যদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া না হলে আমরা এগুলো শাঁখা খুলেই প্রবেশ করি। আমার সঙ্গে আমার মা ও স্বামী ছিলেন। তাদের অনুরোধও ম্যাডামরা শোনেননি।' 

অভিযুক্ত শিক্ষিকা আকিকুন নাহার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি একটি পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জন করে তথ্য উপস্থাপন করেছেন। আমরা শুধু বলেছি এগুলো খুলে যাওয়া উত্তম। কেন্দ্রের ম্যাজিস্ট্রেট ঝামেলা করতে পারেন। তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়নি।'

জানতে চাইলে নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও কেন্দ্রসচিব শিউলি আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, অভিযোগ ওঠায় দুই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শোকজ করা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি মোরশেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা অভিযোগ পেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে বলেছি এবং কারণ দর্শানো নোটিশ দিতে বলেছি। পরীক্ষার হলে শাঁখা-সিঁদুর পরা যাবে না এমন নিয়ম নেই। তারপরও তদন্ত করে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

8h ago