শিক্ষার্থীদের অবস্থান, ৩ ঘণ্টা পর বাসভবনে প্রবেশ করলেন ঢাবি উপাচার্য

বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে আবাসন সংকট নিরসনে ৩ দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার ৯ ঘণ্টা অবস্থানের পরও সংকট নিরসনে আশানুরূপ আশ্বাস না পাওয়ায় অবস্থান চালিয়ে যান হলের শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাসভবনের সামনে আসেন। তবে এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধায় বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি উপাচার্যের গাড়ি।

পরে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান রেজিস্ট্রার ভবনে কার্যালয়ে চলে যান।  এরপর আবার রাত ১০টার দিকে তিনি বাসভবনের দিকে যান। তখনো সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের বাঁধার মুখে পড়েন তিনি।

শিক্ষার্থীরা তখন জানান, উপাচার্যকে গাড়ি থেকে নেমে তাদের দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করতে হবে। কিন্তু উপাচার্য গাড়ি থেকে না নেমে আন্দোলন প্রত্যাহার করতে বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ কয়েকজন সহকারী প্রক্টর তখন শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে কাজ না হলে এক পর্যায়ে উপাচার্য নিজে গাড়ি থেকে নেমে দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে আসেন। 

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিল-মৈত্রী হল থেকে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তর, হলের আসন সংখ্যার সঙ্গে সমন্বয় রেখে শিক্ষার্থী অ্যালট দেওয়া, মূল ভবনের প্রতি রুমে ৬ শিক্ষার্থীর বেশি শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ না দেওয়া।

এসব দাবিতে আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের একদল শিক্ষার্থী। 

পরে দুপুর ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।  

প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেও দাবি পূরণের আশ্বাস না পাওয়ায় আবার অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেয় প্রতিনিধি দল। পরে ২ জন হাউজ টিউটর এসে শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার অনুরোধ করলেও, অবস্থান চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। 

পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের ৪ প্রতিনিধি, ৩ আবাসিক শিক্ষক ও একজন সহকারী প্রক্টর ছিলেন। সে সময় শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে ১ মাসের মধ্যে স্থানান্তরের আশ্বাস না পাওয়ায় আন্দোলন অব্যাহত থাকে।

পরে কার্যালয় থেকে বাসভবনে প্রবেশের জন্য যান উপাচার্য। তখন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান ও একজন সহকারী প্রক্টর শিক্ষার্থীদের গেট ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেন। সে সময় ২০-২৫ মিনিট গাড়িতে অপেক্ষা করে কার্যালয়ে ফিরে যান উপাচার্য।  

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন নুসরাত জাহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপাচার্য ঘটনাস্থলে এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তিনি আমাদের অবস্থান থেকে সরে যেতে বলেন। আমরা অবস্থান থেকে না সরে দাঁড়ালে তিনি আমাদের আন্দোলনে ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে বলে মন্তব্য করেন। আমাদের চাওয়া ছিল উপাচার্য স্যার গাড়ি থেকে নেমে আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং আমাদের দাবিগুলোর বিষয়ে আশ্বাস দেবেন।'

'পরে স্যার গাড়ি থেকে নেমে আমাদের আশ্বস্ত করলে আমরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে আসি,' যোগ করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের দাবি ও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বাসার সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিল। আমি এজন্য বাসভবনে প্রবেশ না করে তাদের কথা শুনেছি। তাদের আশ্বস্ত করে পরে বাসভবনে প্রবেশ করেছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Iran's top security body to decide on Hormuz closure

JD Vance says US at war with Iran's nuclear programme, not Iran

13h ago