Skip to main content
আগস্ট ১৮, ২০২২  //  বৃহস্পতিবার
E-paper English
T
আজকের সংবাদ
গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যা তদন্তে স্বাধীন সংস্থা গঠনের প্রস্তাব মিশেল ব্যাচেলেটের প্রাইভেটকারে গার্ডার: ক্রেনচালক-সহকারীসহ গ্রেপ্তার ৯ খুলনায় বিএনপির সভায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার অভিযোগ কড়াইল বস্তিতে আ.লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭   যুক্তরাজ্যের নতুন বাণিজ্য নীতিতে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা থাকছে বাংলাদেশের নাটোরে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত জেনি এবার বড়পর্দায় ঢাবি শিক্ষার্থী ছেলের মুখে চা-শ্রমিক মায়ের করুণ গল্পগাথা ডলার কেনাবেচায় ১.৫ টাকার বেশি লাভ নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যালকোহলে কেরুর লাভ ১০০ কোটি টাকা, চিনিতে লোকসান ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসনামলে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’ হুমকি আসে, ক্লাস নিতে ভয় লাগে: শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল ‘উচ্চ আদালতের মন্তব্যে পাবলিক প্লেসে নারীর চলাচল আরও হুমকির মুখে পড়বে’ বাপেক্স কেন নিষ্ক্রিয়, বিদ্যুৎখাতের ভর্তুকি কারা পায়, প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের
The Daily Star Bangla
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • E-paper
  • English
আজকের সংবাদ
গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যা তদন্তে স্বাধীন সংস্থা গঠনের প্রস্তাব মিশেল ব্যাচেলেটের প্রাইভেটকারে গার্ডার: ক্রেনচালক-সহকারীসহ গ্রেপ্তার ৯ খুলনায় বিএনপির সভায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার অভিযোগ কড়াইল বস্তিতে আ.লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭   যুক্তরাজ্যের নতুন বাণিজ্য নীতিতে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা থাকছে বাংলাদেশের নাটোরে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত জেনি এবার বড়পর্দায় ঢাবি শিক্ষার্থী ছেলের মুখে চা-শ্রমিক মায়ের করুণ গল্পগাথা ডলার কেনাবেচায় ১.৫ টাকার বেশি লাভ নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যালকোহলে কেরুর লাভ ১০০ কোটি টাকা, চিনিতে লোকসান ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসনামলে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’ হুমকি আসে, ক্লাস নিতে ভয় লাগে: শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল ‘উচ্চ আদালতের মন্তব্যে পাবলিক প্লেসে নারীর চলাচল আরও হুমকির মুখে পড়বে’ বাপেক্স কেন নিষ্ক্রিয়, বিদ্যুৎখাতের ভর্তুকি কারা পায়, প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের
The Daily Star Bangla
বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৮, ২০২২ | সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা
English T
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
মতামত

আগামীর মুদ্রানীতি: জিডিপি নয়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হোক প্রধান লক্ষ্য

এ কে এম জামীর উদ্দীন
শনিবার, জুন ২৫, ২০২২ ১০:৫০ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি

তখন লকডাউনের সময়। ২০২০-এর এপ্রিল। ভয়ঙ্কর এক ভয়ের মধ্য দিয়ে জীবন চলছিল। পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা সবাই অন্ধকারে। ওই সময় অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে ডেইলি স্টারের বাংলা বিভাগের জন্য একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম। 'করোনাভাইরাস ও যুদ্ধকালীন অর্থনীতি'। লেখাটি ওই বছর ১৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছিল, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পণ্যের উপর মানুষের চাহিদা কমবে। এতে তৈরি হবে ডিফ্লেশন বা মূল্য সংকোচনের পরিস্থিতি। কিন্তু, মহামারির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তৈরি হবে তীব্র মূল্যস্ফীতি। এভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য গণক হওয়ার প্রয়োজন নেই। গত ১০০ বছরে সংঘটিত বৈশ্বিক মন্দাগুলো বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি সংকটে এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়।

ওই লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার মাসখানেক পরেই অলিভিয়ার ব্লনচার্ড নামের একজন অর্থনীতিবিদ ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসে একই বিষয়ের ওপর একটি প্রবন্ধ লিখেন। খুব সম্ভবত করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর দুনিয়াতে প্রথমবারের মতো পেন্ট-আপ ডিমান্ডের বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন। অনেকদিন ধরে মানুষ বঞ্চিত থাকার পর হঠাৎ সুযোগ পেলে ভোগের প্রতি আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যাওয়াকে পেন্ট-আপ ডিমান্ড বলা হয়। মন্দাকে মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন দেশে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য প্রচুর ছাপানো টাকা বাজারে সরবরাহ করতে হচ্ছিল। এর সঙ্গে যদি পেন্ট-ডিমান্ডের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি নিঃসন্দেহে ব্যাপক মূল্যস্ফীতি তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রাক্তন অর্থনীতিবিদ ছিলেন ব্লনচার্ড। তার ওই ভবিষ্যদ্বাণীর স্বরূপ আমরা গতবছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে দেখতে শুরু করেছি।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

উচ্চতর মূল্যস্ফীতি আর মূল্যসংকোচন নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। নেতিবাচক এসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দুই বছর ধরে দেশের মানুষকে যেতে হচ্ছে। কথা হচ্ছে, আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি আগে থেকে বিষয়গুলো ধরতে পেরেছিল? নাকি সঙ্কট তীব্র হওয়ার পরই ওইসব বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে? অথবা সমাধান করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলো কি পর্যাপ্ত?

আগামী ৩০ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সাধারণ মানুষের কাছে মুদ্রানীতি দুর্বোধ্য এক বিষয়। এই নীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে—মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে রেখে জিডিপির টার্গেট বাস্তবায়নের জন্য বাজারে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহ করা। আগামী অর্থবছরে সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে গত অর্থবছরের তুলনায় সামনের বছর মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি বাড়তে দিতে চায় না সরকার। কিন্তু, চাইলেই কি হয়? কেননা, বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি সংযুক্ত।

কিছু ভুল নীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক

গত শতাব্দীর ৭০'র দশকের আগ পর্যন্ত অর্থনীতিবিদদের কাছে মূল্যস্ফীতি ছিল অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক একটি বিষয়। তাদের ধারণা ছিল, বাজারে টাকা সরবরাহ বাড়লে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়। এতে কর্মসংস্থান বাড়ে। কিন্তু, ১৯৭৩ সালে ইসরায়েল-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে এই ধারণায় বড় রকমের পরিবর্তন আসে। ওই বছর পশ্চিমা দেশগুলোতে তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। এতে তৈরি হয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দার ঝড়। এতে প্রায় ১৫ মাস ধরে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি হয় যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্কটের এই ধরনকে স্ট্যাগফ্লেশন হিসেবে অভিহিত করা হয়।

দুনিয়ার অধিকাংশ দেশ এখন বড় রকমের মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। গত মাসে এখানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। একই সঙ্কট যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানে মেতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মহামারি থেকে সৃষ্ট সঙ্কট দূর করার জন্য অনেক দেশের সরকার ব্যাপক পরিমাণ ছাপানো টাকা ইতিপূর্বে বাজারে সরবরাহ করেছে। এরপর তৈরি হয় পেন্ট-আপ ডিমান্ড। সর্বশেষ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব।

বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য অন্য দেশের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকও বাজারে ব্যাপক পরিমাণ টাকা সরবরাহ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা এই মুদ্রাকে বলা হয় রিজার্ভ বা হাই-পাওয়ার্ড মানি। আর এই মুদ্রা বাজারে প্রবেশ করার পর তা প্রায় ৫ গুণ টাকা তৈরি করতে পারে। উৎপন্ন হওয়া এই মুদ্রাকে বলা হয় ব্রড মানি। ফলে বাংলাদেশের বাজারেও টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ফল হিসেবে, পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এতে গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আমদানির চাহিদা ব্যাপকভাবে ঊর্ধ্বগামী হয়। মহামারির কারণে দীর্ঘদিন কারখানাগুলোতে পণ্যের উৎপাদন বন্ধ থাকায় বিশ্ববাজারে এর সরবরাহ চেইনেও সঙ্কট তৈরি হয়। ফলে নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয়ে ৫০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর আমাদের এক প্রবন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছিল, অনতিবিলম্বে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমানোর জন্য। এতে আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত জনপ্রিয় নীতির বিপরীত। কারণ, কোনো দেশের সরকার সহজে মূল্যস্ফীতিকে স্বাগত জানায় না। কিন্তু অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে কখনো কখনো এটা করতে হয়। যদি আমদানি না কমে, তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরনের সঙ্কট তৈরি হয়। ইতোমধ্যে রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে টাকা-ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেশ কয়েকদিন ওই নীতি অনুসরণ করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আবারও ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় মূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে। এখন আন্তব্যাংকে ডলারপ্রতি স্থানীয় মুদ্রার মূল্য ৯২ দশমিক ৯৫ টাকা, যা মে-এর প্রথম সপ্তাহে ছিল ৮৬ দশমিক ৪৫। এর ফলে নিঃসন্দেহে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। কিন্তু, স্বাভাবিক থাকবে অর্থনীতির অন্যান্য সূচকগুলো।

প্রশ্ন হচ্ছে, টাকার মূল্যমান কমার কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দৃশ্যমান বড় উদ্যোগ নেই। জিনিসপত্রের দাম কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সাধারণত বাজারে টাকার সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার পলিসি রেটের সুদহার বাড়িয়ে দেয়। পলিসি রেট কি? বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যে রেটে স্বল্প মেয়াদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করে, সেটিই পলিসি রেট। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০ বছর পর কয়েকদিন আগে পলিসি রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করেছে।

অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আনকনভেনশনাল মানিটরি পলিসি থেকে সংকোচনমূলক পলিসিতে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ১৯৯৪ সালের পর সবচেয়ে বড় আকারে পলিসি রেটের সুদহার বাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই এর উদ্দেশ্য।

কিন্তু, বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেটের সুদ বাড়ানোর এই নীতি এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কিছু নিয়ে আসেনি। কারণ, এখানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দেওয়া ঋণের সর্বোচ্চ সুদহারের ওপর ৯ শতাংশের সিলিং বেঁধে দেওয়া আছে। ফলে ব্যবসায়ীরা খুব সহজ শর্তে ঋণ পেয়ে থাকে। ৯ শতাংশের এই সিলিং তুলে দেওয়া হলে ব্যবসায়ীরা ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিবে। এতে বাজারে টাকা সরবরাহের পরিমাণ কমবে। আবার এখন আমানতকারীরা ৬ শতাংশের বেশি সুদ পাচ্ছে না। যদি সুদহারের সিলিং তুলে দেওয়া হয়, তাহলে আমানতের উপর সুদ বেড়ে যাবে। এতে ব্যাংকে আরও বেশি টাকার রাখার বিষয়ে উৎসাহিত হবে সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি পলিসি রেটের সুদহার আরও এক দফা বাড়ানো উচিত। এই নীতির কারণে ব্যাংকগুলোকে বেশি সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে। ফলে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে তারা অনুৎসাহিত হবে। আগামী ৩০ তারিখে মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্ত ভূমিকা নিতে হবে। অন্যথায়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে।

প্রবৃদ্ধি নয়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হোক প্রধান লক্ষ্য

মানিটরি পলিসিতে বাজারে টাকার সরবরাহের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির টার্গেট ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এই দুইটার যোগফল হয় ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। ফলে ১৩ দশমিক ১ শতাংশের সঙ্গে আরও ১ বা ১ দশমিক ৫ শতাংশ যোগ করে ব্রড মানি সরবরাহের টার্গেট ধরা হয়। এটাকে মানিটরি ইকোনমিক্সের ভাষায় বলা হয় সেফ লিমিট অব মানি সাপ্লাই। কিন্তু, এবার টাকার সরবরাহের ক্ষেত্রে আমাদের বেশি জোর দিতে হবে মূল্যস্ফীতি। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের ৯ শতাংশের ক্যাপ প্রত্যাহার করে, তাহলে বাজারে টাকার সরবরাহ কমে যাবে। পলিসি রেট বাড়ালে আরও কমবে। এই ধরনের উদ্যোগের ফলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। কিন্তু, সময় এখন বিনিয়োগের নয়। সাধারণ মানুষকে মূল্যস্ফীতির কবল থেকে বাঁচানোর সময় এখন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিনিয়োগের দিকে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। আইএমএফ আজকে এক পূর্বাভাষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি চলতি বছর কম হবে ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এর আগে এপ্রিলে বলা হয়েছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হতে পারে। সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ পলিসি রেটের সুদহার বাড়ানোর কারণে জিডিপির প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাষে কমানো হয়েছে। বাংলাদেশেও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

নতুন সঙ্কট তৈরি হতে পারে আগামীতে

সরকার আগামী অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা চলতি বছরের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি পলিসি রেটের সুদহার আবারও বাড়ায়, তাহলে ব্যাংকগুলোর হাতে নগদ টাকার পরিমাণ কমবে। এমন অবস্থায় সরকারকে ঋণ দেওয়া বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখাপেক্ষী হতে হবে সরকারকে। আগেই আলোচনা বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা টাকাকে হাই-পাওয়ার্ড মানি বলা হয়। এটি বাজারে নতুন করে মূল্যস্ফীতির সঙ্কট তৈরি করতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর সরকারের মুখোমুখি দ্বন্দ্ব দুনিয়াজুড়ে দেখা যায়। কেননা, সরকারের প্রধান টার্গেট থাকে জিডিপির প্রবৃদ্ধি, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গুরুত্ব পায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। আমাদের দেশে এই ধরনের দ্বন্দ্ব বলতে গেলে এখন অনুপস্থিত। ফলে আগামীতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের আগে সরকারকে যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবারিতভাবে ঋণ দেয়, তাহলে সঙ্কট তীব্র হতে পারে।  

এ কে এম জামীর উদ্দীন: সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, দ্য ডেইলি স্টার

Related topic
মূল্যস্ফীতি
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

Related News

২ মাস আগে | বাজেট ২০২২-২৩

মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ৫.৬ শতাংশ

৩ মাস আগে | অর্থনীতি

১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে

৩ মাস আগে | অর্থনীতি

খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমেছে: বিবিএস

২ মাস আগে | বাজেট ২০২২-২৩

অস্বস্তির বাজেট চেপে ধরার বাজেট

আর্জেন্টিনার সদ্য-সাবেক অর্থমন্ত্রী মার্টিন গুজমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
১ মাস আগে | লাতিন আমেরিকা

মূল্যস্ফীতি ৬০ শতাংশ: আর্জেন্টিনার অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ

The Daily Star  | English
2h ago|Diplomacy

Allegations alarming

UN Human Rights Commissioner Michelle Bachelet has raised deep concerns about the allegations of enforced disappearance, extrajudicial killing and torture in Bangladesh -- many of which have been attributed to the Rapid Action Battalion -- and the lack of accountability for such violations.

2h ago|SHOUT

Top 5 Inflations in History

The Daily Star
Follow Us
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2022 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.