ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৩২ সেমি, ধরলায় ২৭ সেমি, তিস্তায় ১ সেমি ওপরে

সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাটে পানিবন্দি মানুষ। ছবিটি ১৮ জুন বিকেলে তোলা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার, পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার এবং লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনবরত বর্ষণ আর উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি অব্যাহত থাকায় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।'

'আগামী ২-৩ দিন এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। বিশেষ করে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে,' যোগ করেন তিনি।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে নামাহাইল্যা গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার ভেঙে দুধকুমারের পানিতে প্রায় ২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধের ওই ভাঙা অংশ দিয়ে দুধকুমারের পানি লোকায় প্রবেশ করায় নাগেশ্বরী শহর বন্যার প্লাবিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার বালাবাড়ী এলাকায় রেল লাইনের ওপর বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় গতকাল শনিবার থেকে কুড়িগ্রাম-রমনা রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।

জেলার রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রবল বৃষ্টি ও উজানে ভারতের আসাম থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ব্রহ্মপুত্রের পানিতে রৌমারী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বন্যার পানি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।'

'উপজেলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বানভাসি হয়েছেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'পানিবন্দি অনেকে সরকারি রাস্তা, বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।'

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২ জেলার ২ লাখেরও বেশি মানুষ বানভাসি হয়েছেন। কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় দেড় লাখের বেশি আর লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এ ছাড়াও, কুড়িগ্রামে নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সোভারকুটি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে কৃষক আজাদ হোসেন (৪২) বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন। গতকাল বিকেলে তিনি গরু নিয়ে সংকোস নদী পাড়ি দেওয়ার সময় স্রোতে ভেসে যান।

Comments