হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ভাঙন ঝুঁকিতে শহররক্ষা বাঁধ

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে হবিগঞ্জ জেলায়। ৪ উপজেলায় ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার গ্রামে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে বানভাসি মানুষের।
ছবি: স্টার

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে হবিগঞ্জ জেলায়। ৪ উপজেলায় ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার গ্রামে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে বানভাসি মানুষের।

আজ সোমবার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী রোববার পর্যন্ত বন্যা কবলিত এলাকার ১৮ হাজার হেক্টর জমির ধান ও ৬৫০ হেক্টর জমির সবজি পানিতে নিমজ্জিত।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত সংলগ্ন বাল্লা পয়েন্টে খোয়াই নদীর পানি  বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার এবং হবিগঞ্জ সদরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার  ওপর দিয়ে বইছে। 

যেকোনো সময় শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় শহরবাসীকে সর্তক থাকার জন্য মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। 

এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানিও বেড়ে যাওয়ায় নবীগঞ্জ ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় নতুন কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। 

নবীগঞ্জ উপজেলার ৯টি, লাখাই উপজেলায় ৪টি, বানিয়াচং উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়ন এবং আজমিরিগঞ্জ পৌর এলাকাসহ ৫টি ইউনিয়ন এখন বন্যাকবলিত। এদিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া এলাকায় খোয়াই নদীর বাধ ভেঙে পানি হবিগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করেছে। 

সোমবার লাখাই উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন।   

লাখাইয়ের স্বজন গ্রামের মাঝি লুৎফুর মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ১ সপ্তাহ ধরে লাখাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত। অনেকের কাঁচাঘর পানিতে ভেসে গেছে। অনেকেই খাবারের জন্য রেখে দেওয়া ধান পানির দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বাজারে যেখানে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে, সেখানে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা ৬-৭ শ টাকা দরে গোলার ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের বন্যার পর এত পানি দেখিনি।    

সরকারি হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ওই ৪ উপজেলার ১৫ হাজার ২০০ পরিবারের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তবে বেসরকারি হিসেবে এর সংখ্যা দ্বিগুণ। 

জানা গেছে, নবীগঞ্জের ২ হাজার ২০০ জন, আজমিরিগঞ্জের ২ হাজার ৪০০, লাখাইয়ের ৩৮০ জন ও বানিয়াচংয়ে ৩ হাজার ৮০৪ জন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।  

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, খোয়াই নদীর শহররক্ষা বাঁধের নিরাপত্তার জন্য  পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। 

তিনি জানান, জেলার ১১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৩৫ টন চাল, নগদ ৫ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।
 

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

11h ago