আগুন জ্বালিয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে শুটিং, কারাগারে ১

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আগুন জ্বালিয়ে ও জেনারেটর চালিয়ে শুটিং করার অভিযোগে হওয়া মামলায় প্রাণ কোম্পানির প্রডাকশন হাউজের লাইন প্রডিউসার এবিএম রিন্টুকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল রোববার বিকেলে এবিএম রিন্টু মৌলভীবাজার বন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে বন আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট মো. সাইফুর রহমান জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আজ সোমবার মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আগুন জ্বালিয়ে এবং বনের ভেতর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর, লাইট, ভারি যন্ত্রপাতি এবং ট্রাক ও মাইক্রোবাস নিয়ে চিত্রগ্রহণের অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
শ্রীমঙ্গল স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এন্ডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ড লাইফের সদস্য সুহেল শ্যাম জানান, গত ৮ জুন প্রাণ এনার্জি ড্রিংকের একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণের জন্য লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে ধোঁয়া তৈরি করা হয় এবং বড় ২টি জেনারেটর চালিয়ে বনের ভেতর আলোকিত করে শুটিং কার্যক্রম চালানো হয়। সেখানে রান্নাও শুরু করা হলে বন বিভাগের লাউয়াছড়ায় দায়িত্বরত কর্মীরা তাদের বাধা দেন।
পরে রাতেও অননুমোদিতভাবে বনের ভেতর জেনারটর ও শুটিং সরঞ্জাম রাখার কারণে বন বিভাগ তাদের মালামাল জব্দ করে মৌলভীবাজার বন আদালতে মামলা করে। ওই মামলায় জামিনের শুনানি ছিল রোববার। আদালত শুনানি শেষে আসামির জামিন না মঞ্জুর করে এবিএম রিন্টুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে দায়িত্বে অবহেলার কারণে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান শ্রীমঙ্গল সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র।
প্রসঙ্গত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে হর্ন ও মাইক বাজানো, আগুন জ্বালানো, বন্যপ্রাণীকে বিরক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, 'এবিএম রিন্টু নামে আমাদের কোনো এমপ্লয়ি নেই। তিনি ২ বছর আগে আমাদের সঙ্গে কাজ করতেন। অনেকেই বাইরে থেকে আমাদের জন্য কাজ করেন। তাহলে প্রাণের নাম কেন আসবে?'
তবে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'ওইদিন লাউয়াছড়ায় শুটিংয়ে ব্যবহৃত সব যানবাহনে প্রাণ আরএফএলের স্টিকার ছিল। বিবৃতিতে এবিএম রিন্টু নিজেকে প্রাণ কোম্পানির প্রোডাকশন হাউসের লাইন প্রডিউসার হিসেবে পরিচয় দেন। মামলায় সেই হিসেবেই নাম উল্লেখ করা হয়েছে।'
Comments