কুয়াকাটা সড়কের ২০ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করার উদ্যোগ

পদ্মা সেতু চালুর পর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বেড়েছে যানবাহনের চাপ। আর এ বাড়তি চাপ সামাল দিতে সড়ক বিভাগ লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ ৭০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
কুয়াকাটা সড়কে কমপক্ষে ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। এসব বাঁকের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তের যানবাহন দেখা যায় না। ছবি: স্টার

পদ্মা সেতু চালুর পর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বেড়েছে যানবাহনের চাপ। আর এ বাড়তি চাপ সামাল দিতে সড়ক বিভাগ লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ ৭০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ জানায়, ঢাকা থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ২৭২ কিলোমিটার। এরমধ্যে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার ৬ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৭ কিলোমিটার সড়ক এখনো ২ লেনের। আগে থেকেই এ সড়কটি সরু থাকায় যানবাহনের চাপ সামাল দিতে পারছিল না। তার ওপর পদ্মা সেতু চালুর পর এ সড়কে যানবাহনের চাপ আরও বেড়েছে। এতে সড়কটিতে যানবাহনের গতি কমেছে এবং বেড়েছে ঝুঁকিও।

২ লেন বিশিষ্ট বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্যে পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের অধীন লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার সড়কে পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পর্যন্ত বেশ কিছু নামী-দামী ও বিলাসবহুল বাস সার্ভিস ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে।

এ ছাড়াও, কুয়াকাটা সংলগ্ন মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ নানা ধরনের মেঘা প্রকল্পের নানাবিধ কাজেও সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে।

সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বেড়েছে। বিশেষ করে এ সড়কে বেশ কিছু বাজার, ক্রসিং ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। সড়কের ওপর বাজার থাকায় জনসমাগম বেশি হওয়ায় চলাচলকারী যানবাহনের গতি কমে যাচ্ছে।

সড়কের ওপর অবস্থিত পটুয়াখালী সদর উপজেলার হেতালিয়া বাঁধঘাট বাজারে যানজট সবসময় লেগেই থাকে। সড়কের ওপর বদরপুর, তেলিখালী, শিয়ালী, পটুয়াখালী চৌরাস্তা, বসাক বাজার, পক্ষিয়া বাজার, শাখারিয়া, মহিষকাটা, আমতলী, খুরিয়ার খেয়াঘাট ও পাখিমারা বাজারসহ অনেক হাট-বাজার রয়েছে। এ ছাড়াও, রয়েছে কমপক্ষে ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। এসব বাঁকের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তের যানবাহন দেখা যায় না। এসব বাঁকে প্রায়শই ঘটে দুর্ঘটনা।

পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোহাম্মাদ কামরুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ সামাল দিতে লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সরলীকরণ করা হচ্ছে। সড়কের ওপর যেসব বাজার রয়েছে সেখানে সড়কের প্রশস্ততা বাড়ানো হবে এবং এ মহাসড়কের ওপর যেসব ইন্টারসেকশন বা চৌরাস্তা বা তেমাথা রয়েছে সেখানেও সড়ক প্রশস্ত করা হবে। এজন্য ৭০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য জুন মাসের শুরুতে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর এ প্রকল্পে কাজ শুরু হবে এবং এতে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে গতি আসবে। এ ছাড়াও, সড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজও চলমান রয়েছে।'

পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের অধীন লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কটিতে অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। সড়কটি অবিলম্বে আরও প্রশস্ত করা দরকার। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সরলীকরণের উদ্যোগ ভালো। এটা বাস্তবায়িত হলে সড়কে যানবাহন চলাচল অনেকটা নির্বিঘ্ন হবে।'

বরিশাল- কুয়াকাটা ভায়া পটুয়াখালী সড়কের বাসচালক আলী আশরাফ খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কে এমন কতগুলো বাঁক আছে যেখানে অন্য প্রান্তের যানবাহন দেখা যায় না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই আমাদের বাস চালাতে হয়। এ বাঁকগুলো সরলীকরণ করা হলে যানবাহন চলাচলে সুবিধা হবে।'

Comments