ঘরের কাজে পুরুষের তুলনায় ৮ গুণ বেশি সময় দেন নারী

ঘরের কাজে পুরুষদের তুলনায় নারীরা ৮ গুণের বেশি সময় দেন বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সমীক্ষায় ওঠে এসেছে।
ছবি: এনার্জিফরডেভেলপমেন্ট ডট কম

ঘরের কাজে পুরুষদের তুলনায় নারীরা ৮ গুণের বেশি সময় দেন বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সমীক্ষায় ওঠে এসেছে।

গতকাল সোমবার প্রকাশিত 'টাইম ইউজ সার্ভে ২০২১'র তথ্য বলছে, পুরুষেরা ঘরের কাজে দিনে প্রায় ১ দশমিক ৬ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। গৃহস্থালি কাজ ছাড়াও এর মধ্যে আছে শিশু ও বৃদ্ধদের দেখাশোনার কাজ।

অন্যদিকে, নারীদের এই কাজে সময় যায় প্রায় ১১ দশমিক ৭ ঘণ্টা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের কাজ অনুৎপাদনশীল হিসেবে গণ্য হওয়ায় এতে কোনো স্বীকৃতি বা মজুরি নেই। উৎপাদনশীল কাজ হিসেবে স্বীকৃত কাজে নারীদের ব্যয় হয় ১ দশমিক ২ ঘণ্টা। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটা ৬ দশমিক ১ ঘণ্টা।

ঘরের কাজ করা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে উভয়ের সমান দায়িত্ব হলেও নারীদেরকেই এর ভার বহন করতে হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মজুরিবিহীন গৃহস্থালি কাজে ২৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী নারীরা দিনে ব্যয় করেন ৫ দশমিক ২ ঘণ্টা। একই বয়স সীমার মধ্যে পুরুষরা এই ধরনের কাজ করেন শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা।

শহর এলাকায় এ রকম কাজে নারীরা সময় ব্যয় করেন ৪ দশমিক ৪ ঘণ্টা ও পুরুষরা ব্যয় করেন শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা। গ্রামীণ এলাকায় এ ধরনের কাজে নারীরা ব্যয় করেন ৪ দশমিক ৭ ঘণ্টা এবং পুরুষরা ব্যয় করেন শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা।

যেসব নারীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তারা ঘরের কাজে সময় দেন ৪ দশমিক ১ ঘণ্টা। প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়া নারীদের ক্ষেত্রে এই সময়টা ৪ দশমিক ৯ ঘণ্টা এবং মাধ্যমিক ও তার ওপরের শিক্ষা নেওয়া নারীদের ক্ষেত্রে এই সময়টা যথাক্রমে ৪ দশমিক ৯ ঘণ্টা ও ৪ দশমিক ৩ ঘণ্টা।

বিবিএস'র সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ৯৬ দশমিক ২১ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সুবিধা ছিল। এর মধ্যে রান্নার জন্য লাকড়ির চুলা ব্যবহৃত হয় ৪৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বাড়িতে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৩২ দশমিক ৫২ শতাংশ শহরের ও ৫৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ গ্রামে বাস করেন।

এতে অংশ নেওয়াদের মধ্যে গ্রামের তুলনায় শহরে বসবাসকারীদের মধ্যে এলপি ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৭ গুণ বেশি।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ব্যক্তির মোবাইল ফোন কেনার সঙ্গতি থাকলেও নারীদের মধ্যে মাত্র ৫৯ দশমিক ৯২ শতাংশের নিজের মোবাইল ফোন ছিল। অন্যদিকে, এ ক্ষেত্রে পুরুষের হার ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ২৮ দশমিক ০৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে পুরুষ ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ও নারী ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জেন্ডার সমতায় 'মজুরিবিহীন গৃহস্থালি কাজ' বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

Comments