নিম্নবিত্ত-বস্তিবাসীকে সাশ্রয়ী মূল্যে পানি দেওয়ার নির্দেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর

অভিজাত এলাকায় পানির মূল্য বাড়িয়ে নিম্নবিত্তের মানুষ বা বস্তিবাসীকে সাশ্রয় মূল্যে পানি দিতে ঢাকা ওয়াসাকে নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
ঢাকা ওয়াসার হলরুমে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

অভিজাত এলাকায় পানির মূল্য বাড়িয়ে নিম্নবিত্তের মানুষ বা বস্তিবাসীকে সাশ্রয় মূল্যে পানি দিতে ঢাকা ওয়াসাকে নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

শুধু পানি নয়, হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্যও জোনভিত্তিক নির্ধারণ করা উচিত বলে জানান মন্ত্রী।

সোমবার রাজধানীতে ঢাকা ওয়াসার হলরুমে 'জয়েন্ট রিসার্চ প্রজেক্ট অন কোভিড-১৯' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা জানান।

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, 'ভর্তুকি দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব নিয়ে ধনীদের কম দামে পানি দেওয়ার সুযোগ নেই। পানির দাম বাড়ানো বা কমানো ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বিষয়।'

তিনি আরও বলেন, '২৫ টাকায় পানি উৎপাদন করে ১৫ টাকায় দেওয়া সমর্থনযোগ্য নয়। নিম্নবিত্তের মানুষকে সাবসিডি দিয়ে পানি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু যারা উচ্চবিত্ত বা অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন তাদের দেওয়ার সুযোগ নেই। ইকুইটেবল ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠা করতে হবে।'

'ওয়াসা নিরাপদ পানি উৎপন্ন করে থাকে' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'সেই পানি যখন পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়, তখন অনেকে অনৈতিকভাবে পাইপ ছিদ্র করে সংযোগ নেয়। কিন্তু ছিদ্র ঠিকমতো জোড়া না দেওয়ায় অথবা বাসায় পানির রির্জাভ ট্যাংক বা ওভারহেড ট্যাংকের মাধ্যমে পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু প্রবেশ করে। যা পরবর্তীতে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।'

নতুন পাইপ লাইন স্থাপনের পাশাপাশি যারা পাইপলাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ দিচ্ছে বা নিচ্ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দেন মো. তাজুল ইসলাম।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ঢাকা শহরের পানি সরবরাহের জন্য পুরোনো পাইপ লাইনগুলো পরিবর্তন করে নতুনভাবে সংযোজন করা হচ্ছে, যেন জীবাণুমুক্ত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ থেকে মানুষকে বাঁচার জন্য সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ বিষয়ে সতর্ক আছে।

তিনি আরও বলেন, 'প্রকল্প নেওয়ার সময় ফিজিবিলিটি স্টাডি, জায়গা অধিগ্রহণ অথবা লোন নেগোসিয়েশনে বছরের পর বছর চলে যায় যা গ্রহণযোগ্য নয়। সব লোন নেওয়া যাবে না। দেশের জন্য অথবা জিডিপিতে অবদান রাখবে এমন লোন নিয়ে প্রকল্প নিতে হবে।'

'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদেশিদের কাছ থেকে ভিক্ষা করে খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করেননি,' বলেন তিনি।

রাজধানীতে চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদন হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, '৫ হাজার বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহ করার জন্য পাইপলাইন বসানো হলেও সময়ের ব্যবধানে ওই এলাকায় জনসংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানুষ ঠিকমতো পানি পাচ্ছে না। কারণ পানির সরবরাহের তুলনায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি।'

কোনো ভাইরাস যেন ওয়াসার পানিতে না থাকে, সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

Comments