বন্যার পানিতে ভেসে গেছে শিশুদের ঈদ আনন্দ

পরিবারের সঙ্গে আশ্রয় নেওয়া শিশুদের ঈদ আনন্দ যেন ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা

ঈদ মানে আনন্দ। রোববার সেই আনন্দে মেতে উঠেছিল সারাদেশের শিশুরা। কিন্তু, বিপরীত দৃশ্য ছিল মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে। এখানে পরিবারের সঙ্গে আশ্রয় নেওয়া শিশুদের ঈদ আনন্দ যেন ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।

বড়লেখার হাকালুকি উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রের পিয়ারুন বেগম বলেন, 'একবার খাইতে পারলে আরেকবার খাইতে পারি না। এই কষ্টটা কইয়া বুঝানি যাইতো নায়। কষ্টের মাঝে বাড়ির বাইরা কিওর (কিসের) ঈদ। ঘরে ঠিকমতো চাউল-খরচপাতিউ কিছুই নাই।'

একই আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা আয়শা বেগম বলেন, 'করোনা ভীতি কাটিয়ে মানুষ কিছুটা দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও বন্যায় আবার বিপর্যস্ত আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ। মাসব্যাপী বন্যার পানিতে বন্দি থাকায় আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সন্তানের জন্য একটি গেঞ্জিও কিনতে পারিনি। তাই আমার বড় ছেলে নামাজ পড়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ে, যা কোনোদিন হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'ছোট ছেলেটি প্রতিদিনের মতো একাই খেলছে। ঈদের কোনো চিহ্ন নেই আমাদের সন্তানের কাছে। সন্তানের জন্য খুবই কান্না পাই। এমন দিন আসবে ভাবতেও পারিনি।'

নুর উদ্দিন জানান, আয় রোজগার না থাকায় মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন তারা। ফলে, শিশুদের নতুন জামা কিনে দিতে পারেননি। গত কোরবানি ঈদে কত খেলনা কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু, এবার ভাবলেই বিলাসিতা মনে হয়।

তিনি বলেন, 'ঈদ আনন্দ বলতে শিশুদের আনন্দকেই বুঝি। কিন্তু, তাদের চেহারা দেখে এতোই কষ্ট হচ্ছে যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ১৩ হাজার ১০৬ জনের মধ্যে শিশু আছে ১ হাজার ৯২৬ জন।

Comments

The Daily Star  | English

Govt cuts interest rates on savings tools

Finance ministry lowers rates on four key savings instruments

3h ago