১১ দিনেই বন্ধ ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম পরিবহনে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ চালুর ১১ দিন পর বন্ধ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ট্রেনটি সর্বশেষ চলাচল করে।
ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম তুলছেন ব্যবসায়ীরা। সংগৃহীত ফাইল ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম পরিবহনে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস 'ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন' চালুর ১১ দিন পর বন্ধ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ট্রেনটি সর্বশেষ চলাচল করে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম জোনের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, 'অত্যন্ত কম খরচে সার্ভিসটি চালু করা হলেও তা ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে, পরিষেবাটি বাতিল করা হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আসন্ন ঈদ-উল-আজহার আগে এক সপ্তাহের জন্য শুধুমাত্র কোরবানির পশু পরিবহনের জন্য আরেকটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করা হতে পারে।'

এর আগে, গত ১৩ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি চালু হয়। ট্রেনটির ৫টি ওয়াগনের প্রতিটির বহন ক্ষমতা ছিল ৪৫ হাজার কিলোগ্রাম (কেজি)।

রেলের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, 'এবার ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালুর কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে।'

তবে, রেলওয়ের পশ্চিম জোনের জিএম অসীম কুমার তালুকদার বলেন,    'আমি এটাকে ক্ষতি হিসেবে অভিহিত করব না... কারণ, আম পরিবহনের সুবিধার্থে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা থেকেই ট্রেনটি চালু করা হয়েছিল।'

করোনা মহামারিতে আম সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে প্রথম ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি চালু করা হয়। তবে, প্রতিবছরই ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া হতাশাজনক ছিল।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে জুন জুলাই মসে ৪৬ দিন আম পরিবহন করে রেলওয়ে আয় করে ২ লাখ ১১ হাজার ৪৫৮ টাকা। পরের বছর ২১ দিন চলে সর্বোচ্চ আয় করে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯২০ টাকা। চলতি বছর ১১ দিনে এই আয় দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ২৬৫ টাকা।

পশ্চিম রেলওয়ের একটি সূত্র বলছে, ট্রেনটির প্রতিদিনের পরিচালনা খরচ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ফলে, প্রতিদিনই রেলওয়ের অন্তত ৭০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছিল। তাই  এবছর ভালো সাড়া না পাওয়ার করণে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে গেছে।

রাজশাহীর বাঘার আম চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, 'রেলওয়ে স্টেশন থেকে আমের বাগান অনেক দূরে। ফলে সেবাটি আমাদের জন্য কোনো কাজে আসছে না। এক টন আম বহনের জন্য ট্রেনে ১ হাজার ১১৭ টাকা করে লাগে, যেখানে ট্রাকচালকরা প্রায় ৩ হাজার টাকা এবং কুরিয়ার সার্ভিসে ২০ হাজার টাকা নেয়। তবুও, আম ব্যবসায়ীদের পছন্দ ট্রাক ও কুরিয়ার।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা যদি রেলের সেবা নেওয়ার জন্য বাগান থেকে ট্রাকে করে আম স্টেশনে নিয়ে যাই তাহলে ট্রাকগুলো ঢাকায় নেওয়ার সমান টাকা নেবে। এ কারণে আমের ট্রেন আমাদের কাজে আসেনি।'

'এক ট্রাক আম দেশের যেখানেই নেওয়া হোক একই টাকা লাগে,' বলেন তিনি।

Comments