গ্রিসে বৈধতার সুযোগ পাবেন আরও ‘১৫ হাজার’ বাংলাদেশি

গ্রিস প্রতি বছর তাদের কৃষি খাতে ৪ হাজার নতুন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দেবে। ছবি: সংগৃহীত

মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে গ্রিস সরকার অনিবন্ধিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।

এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (শ্রমকল্যাণ শাখা) বিশ্বজিত কুমার পাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির আগে যেসব বাংলাদেশি ইউরোপের এ দেশটিতে প্রবেশ করেছেন, তাদেরকে প্রথমে বাংলাদেশ মিশনে নিবন্ধন করতে হবে।'

ধারণা করা হচ্ছে, গ্রিসে বসবাসরত প্রায় ১৫ হাজার অনিবন্ধিত বাংলাদেশি অভিবাসী এই সুযোগটি গ্রহণ করবেন। বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার বাংলাদেশি গ্রিসে বসবাস করছেন।

গ্রিসে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদের বরাত দিয়ে দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, বাংলাদেশ মিশন আশা করছে গ্রিক মন্ত্রিসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং ১৫ সেপ্টেম্বরের আগেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মন্ত্রিসভার একটি সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেছেন, অভিবাসীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য ও নিয়ম-কানুনের বিষয়ে তারা শিগগিরই একটি গ্যাজেট প্রকাশ করবেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় বাংলাদেশ-গ্রিসের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই অভিবাসীদের নিবন্ধনের এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মিশন সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধন না থাকায় গ্রিসে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি পাচার চক্রের শোষণের শিকার হন।

সূত্র আরও জানিয়েছে, অনিবন্ধিত বাংলাদেশি শ্রমিকরা, বিশেষ করে পশ্চিম গ্রিসের কৃষি খাতে যারা কর্মরত, তারা ইউরোপের ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৭১৩ ইউরোর চেয়েও কম মজুরি পান।

এ সমস্যার সমাধান ও অবৈধ অভিবাসন রোধে বাংলাদেশ ও গ্রিস এই সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় কোনো দেশের এ ধরনের চুক্তি সই এটিই প্রথম।

চুক্তি অনুযায়ী, গ্রিস প্রতি বছর তাদের কৃষি খাতে ৪ হাজার নতুন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দেবে।

শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে বাংলাদেশের অনেক তরুণই ইউরোপীয় দেশগুলো, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

সেই স্বপ্ন পূরণে অনেক বাংলাদেশি তরুণ পাচারকারীদের মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ রুটের মাধ্যমে গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ তার বিবৃতিতে বলেন, মিশন অনিবন্ধিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিয়মিতকরণের জন্য নিবন্ধন শুরু করেছে এবং ইতোমধ্যে ১০০ জনেরও বেশি নাম রেকর্ড করা হয়েছে। নামগুলো গ্রিস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে, যারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবেদনপত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য একটি অনলাইন প্লাটফর্ম খুলবে।

প্রবাসীদের রেসিডেন্স কার্ড প্রক্রিয়াকরণ ও ইস্যু করার জন্য অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৯১ ইউরো করে দিতে হবে।

আবেদনগুলো সঠিকভাবে জমা দিতে পারলে অভিবাসীরা ইমেলের মাধ্যমে 'অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি' পাবেন, যা তাদেরকে আইনিভাবে গ্রিসে বসবাস ও কাজ করার অনুমোদন দেবে।

পরবর্তীতে, গ্রিক কর্তৃপক্ষ আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিলে অভিবাসীদের ৫ বছরের জন্য 'রেসিডেন্স কার্ড' দেওয়া হবে এবং পরবর্তীতে এই মেয়াদ আবারও বাড়ানো হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

7h ago