অর্থপাচার: পাপুলের ২ কুয়েতি সহযোগীর ৫ বছর করে কারাদণ্ড

বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে দায়ের অর্থপাচার মামলায় তার ২ কুয়েতি সহযাগীকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন কুয়েতের উচ্চ আদালত।
বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুল, কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি শেখ মাজেন আল-জাররাহ এবং পার্লামেন্টের প্রার্থী নাওয়াফ আল-শালাহি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে দায়ের অর্থপাচার মামলায় তার ২ কুয়েতি সহযাগীকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন কুয়েতের উচ্চ আদালত।

একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি শেখ মাজেন আল-জাররাহ এবং পার্লামেন্টের সাবেক প্রার্থী নাওয়াফ আল-শালাহি।

গত বুধবার কুয়েতের আরবি সংবাদপত্র দৈনিক কাবাস এবং আরব টাইমসের অনলাইন সংস্করণে এ খবর প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাউন্সেলর ওয়ায়েল আল-আতেকির নেতৃত্বে আপিল আদালত ফৌজদারি আদালতের রায় বাতিল করে পাপুলের কাছ থেকে পাওয়া ঘুষের টাকা পাচারে ২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় ঘোষণা করেন।

পাবলিক প্রসিকিউশন অভিযুক্ত ২ জনের বিরুদ্ধে চেকের মাধ্যমে ৮ লাখ ৬০ হাজার কুয়েতি দিনার পাচারের অভিযোগ করে, যা পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।

এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর কুয়েতের আপিল আদালত মানবপাচার ও অর্থপাচারের মামলার চূড়ান্ত রায়ে পাপুলকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ২৭ লাখ কুয়েতি দিনার (সে সময়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৭ কোটি টাকা) জরিমানা করেন। সাজার পর পাপুলকে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করার নির্দেশও দেন আদালত।

একই মামলায়, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ এবং জনশক্তি বিভাগের পরিচালক হাসান আল খিদরকেও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদেরকে সরকারি পদ থেকে বরখাস্ত করারও আদেশ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া, আদালত একই মামলার কুয়েতের সাবেক এমপি সালাহ খুরশেদকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ৭ লাখ ৪০ কুয়েতি দিনার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

পাপুল বর্তমানে কুয়েতের কারাগারে সাজা ভোগ করছেন।

২০২০ সালের ৭ জুন পাপুলকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। সে সময় তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছিলেন।

৫ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকের অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার এবং কোম্পানির কর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ আনে সিআইডি।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে পাপুল অর্থের বিনিময়ে জাল চুক্তিতে অভিবাসী শ্রমিক আনার ক্ষেত্রে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনশক্তি বিভাগ, জনপ্রতিনিধির সহায়তা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন।

সাধারণ প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে পাপুল বহু বছর ধরে কুয়েতে ছিলেন। এক সময় জনশক্তি আমদানির মাধ্যমে বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠেন তিনি। পরে দেশে ফিরে সংসদ সদস্য হন।

পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। 

 

Comments