চালের দাম এই মুহূর্তে নিম্নমুখী: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, চাল আমদানি, সিরডাপ, কাজী বদরুদ্দোজা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,
জধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত 'বাংলাদেশের কৃষির রূপান্তর: কাজী বদরুদ্দোজার অবদান' শীর্ষক বিএজেএফ জাতীয় কৃষি সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: মো. আসাদুজ্জামান/স্টার

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে এ বছর চাল আমদানি করতে হয়নি। এ বছর শেষ নাগাদ পর্যন্ত আর চাল আমদানি করতে হবে না। চালের দাম এই মুহূর্তে নিম্নমুখী।

আজ সোমবার রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত 'বাংলাদেশের কৃষির রূপান্তর: কাজী বদরুদ্দোজার অবদান' শীর্ষক বিএজেএফ জাতীয় কৃষি সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'ভারত চালের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এর সমালোচনা চলছে আন্তর্জাতিকভাবে। তারপরেও আমাদের চালের দাম কম কারণ কৃষিকে বিজ্ঞানভিত্তিক করা গেছে। এখন ধানের উৎপাদন বেড়েছে। এমন কৃষির রূপান্তরে কাজী বদরুদ্দোজা ছিলেন দূরদর্শী। তিনি ছিলেন বর্তমান আধুনিক কৃষির স্বপ্নদ্রষ্টা৷ রূপান্তরে তিনি কাজ করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। সব বিজ্ঞানীর এই ক্ষমতা থাকে না। যেটা বদরুদ্দোজার মধ্যে ছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'কাজী বদরুদ্দোজা শুধু বাংলাদেশের কৃষির পথিকৃৎ নন, তিনি ভিয়েতনামের জাতীয় কৃষি মহাপরিকল্পনাতে অবদান রেখেছেন।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান বলেন, 'কৃষি গবেষণা কাউন্সিল যেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে পাঁচ তারকা হোটেল হওয়ার কথা ছিল,  কিন্তু কাজী বদরুদ্দোজা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সরাসরি কথা বলে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল তৈরির অনুমোদন নিয়ে আসেন।'

এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, 'কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানিতে যেতে পারি। এজন্য বেসরকারি খাতকে সংযুক্ত করতে হবে৷ আমরা ব্যাংকগুলো বিনিয়োগের মাত্র দুই শতাংশ কৃষি খাতে বিনিয়োগ করছি। কম বিনিয়োগ দিয়ে কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আমরা চাই মোট ঋণের বিনিয়োগের ৫ শতাংশ যেন কৃষি খাতে বিনিয়োগ করা যায় এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়া কৃষি ঋণ সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে।'

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, 'আমরা ধানের নতুন নতুন জাত দিয়েছি। চাল থেকে আমরা ৮০ শতাংশ প্রোটিন নিশ্চিত করব। আমরা চাল থেকে জিংক আয়রন এন্টি অক্সিডেন্ট পূরণের চেষ্টা করছি।'

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, 'আমাদের দেশে জমি কমে আসছে। আমাদের আরও একটি সংকট হলো জলবায়ু পরিবর্তন। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে জলবায়ু সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এ সংকট থেকে উত্তরণ করা যায়।'

সেমিনারে 'বাংলাদেশের কৃষির রূপান্তর' বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপণন বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, 'আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশ ৯৪তম। কিন্তু কৃষি উৎপাদনে ১৪তম। অর্থাৎ জমি কম হলেও উৎপাদনে এগিয়েছি। কিন্তু কৃষিতে উৎপাদনশীলতায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের অনেক আবাদযোগ্য পতিত জমি আছে। সেগুলো চাষের আওতায় আনতে হবে। আমরা যেন নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপাদন করতে পারি। তাহলে বৈশ্বিক কোনো সংকট আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।'

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

14h ago