নিলামে বেড়েছে চায়ের দাম

চা
মৌলভীবাজারে চা বাগান। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

এ বছর সাপ্তাহিক নিলামে বেশি দাম পাচ্ছে চা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ন্যূনতম দাম বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি সরবরাহ কম হওয়ায় চায়ের দাম বেড়েছে।

তবে চা উৎপাদনে সংশ্লিষ্টরা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলছেন, চায়ের যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে উত্পাদন খরচ তোলা যাচ্ছে না।

গত বছর দেশে চায়ের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ হলেও দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে নূন্যতম দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি)।

চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রের তথ্য বলছে—গত বছর ১০ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার কেজি চা সংগ্রহের সময় নিলামের গড় দাম ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ১৭১ টাকায় নেমে আসে।

গত ২৯ এপ্রিল প্রথম নিলামের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ২৯টি সাপ্তাহিক নিলাম হয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম নিলামে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ছিল প্রায় ২৬৮ টাকা। গত বছর তা ছিল ২৪৯ টাকা।

গত ২৮ সাপ্তাহিক নিলামে চা পাতার গড় দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে আট দশমিক ৩২ শতাংশ।

এ দিকে, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত চায়ের গড় দাম দাঁড়িয়েছে কেজিপ্রতি প্রায় ২১৪ টাকা। গত মৌসুমে নিলাম শেষে ছিল ১৯৭ টাকা ৪৬ পয়সা।

সাধারণত মৌসুমের শেষের দিকে দাম কমতে শুরু করলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দাম গত মৌসুমের মতো এখনো ২০০ টাকার নিচে নামেনি।

টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিটিএবি) চেয়ারম্যান শাহ মঈনুদ্দিন হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মৌসুমের শুরুতে সংগ্রহ করা চা পাতা উন্নতমানের হওয়ায় ভালো দাম পাওয়া যায়।'

অন্যদিকে সময় বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পাতার গুণগত মান কমতে থাকে। ফলে মৌসুমের শেষের দিকে এর দাম কম পাওয়া যায়।

শাহ মঈনুদ্দিন হাসান আরও বলেন, 'চলতি মৌসুমের শুরুতে বাংলাদেশ চা বোর্ড যে ন্যূনতম মূল্যসীমা দিয়েছে, তা দাম বাড়তে কিছুটা সহায়তা করেছে।'

চা পাতা ছয় ক্যাটাগরিতে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দাম ১৬০ টাকা কেজি ও ভালোমানের চায়ের দাম ৩০০ টাকা ধরা হয়েছে।

বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় বন্যার কারণে এ বছর চা উৎপাদন কমে যাওয়ায় চায়ের দামে প্রভাব পড়েছে।

তারপরও দাম নিয়ে সন্তুষ্ট নন চা উৎপাদকরা।

বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান তানভীরুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নূন্যতম দাম বেঁধে দেওয়া ও সরবরাহ কম থাকায় নিলামে দাম বাড়লেও উৎপাদন খরচ বিবেচনায় তা কম।'

'মজুরি বেড়ে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণে চায়ের উৎপাদন বেশি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'ফলে যে দাম নিলামে পাওয়া যাচ্ছে তাতেও মুনাফা করা কঠিন। দাম আরও না বাড়লে চা উৎপাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।'

তবে টিটিএবির চেয়ারম্যান শাহ মঈনুদ্দিন হাসান বলেন, 'সিলেট ও চট্টগ্রামের বাগান থেকে পাঠানো ভালোমানের চা নিলামে ভালো দাম পাচ্ছে।'

পঞ্চগড়ে ছোট চাষিদের সরবরাহ করা চায়ের মান তেমন ভালো না হওয়ায় বেশিরভাগই অবিক্রিত থেকে যায়। সেগুলো বিক্রি হলেও দাম কম পায়।

মৌলভীবাজার দেশের চা উৎপাদকদের বৃহত্তম কেন্দ্র। এখান থেকে দেশীয় উৎপাদনের প্রায় ৫৫ শতাংশ চা আসে।

Comments

The Daily Star  | English

Early US intel assessment suggests strikes on Iran did not destroy nuclear sites: CNN

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago