৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ: আইএমএফের ৩০ শর্তে রাজি ঢাকা

ছবি: সংগৃহীত

সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৩০টি শর্তে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ।

জানুয়ারির শেষের দিকে ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডে উপস্থাপন করা হবে।

তার আগে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনে আগামী ১৬ জানুয়ারি ঢাকায় আসবেন আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্টোনেট মনসিও সায়েহ। ৩ দিনের সফরে তিনি অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অন্যান্য শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

ঋণ বিষয়ক আলোচনায় থাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সায়েহর বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিনিই আইএমএফের পরবর্তী বোর্ড সভায় সভাপতিত্ব করবেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা এবং ঋণ দেওয়ার যৌক্তিকতা বোর্ড সদস্যদের কাছে ব্যাখ্যা করবেন।

ঋণ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশে আইএমএফের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে সরকার।

বিস্তারিত আলোচনা ও যোগাযোগের পর গত মাসে ঋণ কার্যক্রমের শর্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। 

গত ১ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইএমএফের ঋণ কার্যক্রমে আমরা একমত হয়েছি। এবার তা আইএমএফের বোর্ডে আলোচনা করা হবে। আশা করি, এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হবে।'

আইএমএফ বোর্ড যদি বাংলাদেশের ঋণের আবেদন জানুয়ারিতে মঞ্জুর করে, তাহলে পরের মাসেই প্রথম কিস্তিতে ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার আসবে। এরপর ঋণ প্রস্তাবে উল্লেখিত সময়োপযোগী সংস্কারমূলক কাজ পূরণের শর্তে ৬৫৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলারের ৬টি সমান কিস্তিতে বাকি অর্থ পাবে বাংলাদেশ।

৪২ মাসের এই ঋণ কর্মসূচিতে ৩০টি শর্ত রয়েছে, যা ৩টি বিভাগের অধীনে পড়ে: গুণগত মান উন্নয়ন সংক্রান্ত শর্ত (কিউপিসি), অবকাঠামোগত মান উন্নয়ন সংক্রান্ত শর্ত (এসপিসি) ও সাধারণ প্রতিশ্রুতি।

ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি ৩টি বাধ্যতামূলক শর্ত দিয়েছে।

ঋণ বিষয়ে আইএমএফ কর্মীদের সঙ্গে যারা আলোচনায় থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, বাধ্যতামূলক শর্তগুলো কিউপিসির অধীনে পড়ে। সেই শর্তগুলো হলো— নেট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের একটি ন্যূনতম স্তর নির্ধারণ এবং সরকারের বাজেট ঘাটতির ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ।

আইএমএফ বিভিন্ন কিস্তিতে অর্থ দেওয়ার আগে সরকারকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কিউপিসির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে। কিউপিসির ৩টি লক্ষ্যমাত্রা প্রতিটি কিস্তির সঙ্গে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে।

আইএমএফের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে— ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা, আদায়ের অযোগ্য ঋণ বিষয়ে আলাদা কোম্পানি গঠন করা, জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ফর্মুলা কার্যকর করা, আয়কর আইন সংসদে পাস করা, করছাড়ের ওপর বিস্তারিত নিরীক্ষা করা, বাজেটের নির্দিষ্ট অংশ সামাজিক ব্যয়ের (শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা কমূর্সচি) জন্য রাখা এবং ক্রমান্বয়ে তা বাড়ানো।

বর্তমানে দেশে নিট বৈদেশিক মুদ্রার মজুত প্রায় ৩২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা সাড়ে ৩ মাসের আমদানি বিলের জন্য যথেষ্ট।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন $4.5 Billion Loan Programme: Dhaka agrees to 30 conditions of IMF

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

6h ago