‘বাজেটে সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে আইএমএফের শর্ত বেশি গুরুত্ব পেয়েছে’

আজ রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৩–২০২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জিএম কাদের এই কথা বলেন।
জিএম কাদের
জি এম কাদের। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

বিরোধী দলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, এবারের বাজেটে সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে আইএমএফের শর্তকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৩–২০২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জি এম কাদের এই কথা বলেন।

বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, 'আইএমএফের কাছ থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ নিচ্ছে তা খুব বেশি নয়। কিন্তু তাদের শর্ত অনেক, ৩০টি। বিভিন্ন খাতে তারা ভর্তুকি কমাতে বলেছে। এগুলো বেশিরভাগ গরিব মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী।'

তিনি প্রশ্ন করেন, 'দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে এত নিচে গেল যে এই ঋণ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ মরিয়া হয়ে গেছে? করোনা ও রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে কিছু মন্দা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কারো কি এমন দূরাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে?'

জিএম কাদের বলেন, 'অনেক ক্ষেত্রে আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ডলারের দাম বেড়েছে। সব জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারনে সার্বিক সামষ্টিক অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'মুডিস বাংলাদেশের ঋণ মান কমিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক ঋণ আহরণ কঠিন হয়ে গেছে। টাকা ছাপিয়ে অর্থায়ন করতে হচ্ছে। এতে মুদ্রস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। এখনই জনগণ দিশেহারা। সামনে চাপ আরও বাড়বে।'

'মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এখন চ্যালেঞ্জ। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে রাখবেন। এটা হাস্যকর। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটে কোনো দিক নির্দেশনা নেই। এবার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি ধরা হয়েছে। এটা বাস্তবসম্মত নয়', যোগ করেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, 'গার্মেন্ট, প্রবাস আয় ও কৃষি এই ৩টি খাত দেশের অর্থনীতিকে ধরে রেখেছে। কিন্তু এসব ক্ষত্রে উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট কিছু বাজেটে নেই।'

টিন প্রয়োজন এমন সেবা নিতে হলে আয় না থাকলেও ২ হাজার টাকা রিটার্ন দিতে হবে— এমন বিধানের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, 'একদিকে এই কর চাপানো, অন্যদিকে ধনীদের সারচার্জের সীমা বাড়িয়ে ধনীদের রিলিফ আয় গরিবদের অত্যাচার করা হলো।'

তিনি আরও বলেন, 'খেলাপি ঋণ সঠিক হিসাব করলে ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এ বিষয়ে কোনো সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিদ্যুতে লুটপাট বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।'

Comments