বাংলাদেশকে প্রবৃদ্ধি সহায়ক সংস্কারে মনোনিবেশ করতে বলেছে আইএমএফ

বাংলাদেশে আইএমএফ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ বলেন, এজন্য কঠোর আর্থিক নীতিমালা প্রয়োজন। একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে আরও নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থা দরকার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফ, ডলার,
রয়টার্স ফাইল ফটো

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও বৈদেশিক অর্থ পরিশোধের ভারসাম্যের সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের উচিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, প্রবৃদ্ধি সহায়ক সংস্কারে মনোনিবেশ করা।

আজ শুক্রবার ওয়াশিংটন থেকে ভার্চুয়ালি প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে আইএমএফ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ বলেন, এজন্য কঠোর আর্থিক নীতিমালা প্রয়োজন। একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে আরও নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থা দরকার।

তিনি বলেন, এ ছাড়া প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সংস্কারের দিকেও মনোনিবেশ করতে হবে।

আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের প্রথম পর্যালোচনা শেষে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ৬৮৯ মিলিয়ন ডলার অনুমোদনের দুদিন পর এ কথা জানালেন তিনি।

রাহুল আনন্দ বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা অব্যাহত রেখেছে।

প্রাথমিকভাবে অপর্যাপ্ত অভ্যন্তরীণ নীতি প্রতিক্রিয়াসহ বহিরাগত প্রতিকূলতা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে। এরসঙ্গে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আর্থিক হিসাবে বড় পরিবর্তনের ফলে সামগ্রিক বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের অবনতি হয়েছে। ফলে, রিজার্ভ ও টাকার ওপর ক্রমাগত চাপ পড়েছে।

এই ধাক্কা সামলাতে সরকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি কঠোর করেছে, বিনিময় হারের নমনীয়তা বাড়িয়েছে এবং একাধিক বিনিময় হারকে একীভূত করেছে। কর্তৃপক্ষ আর্থিক ভারসাম্যও কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রেখেছিল।

রাহুল আনন্দ বলেন, 'কর্তৃপক্ষের এই প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ। কঠিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ সত্ত্বেও সামগ্রিক কর্মসূচির কর্মক্ষমতা সন্তোষজনক হয়েছে। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, বেশিরভাগ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা ও সংস্কারে প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যেতে কয়েকটি ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে হবে।

প্রথমত, কর রাজস্ব বৃদ্ধি ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়কে কমাতে হবে। তাহলে কর্তৃপক্ষ সামাজিক উন্নয়ন ও জলবায়ু খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে পারবে। ব্যয় দক্ষতা বৃদ্ধি ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে জনসাধারণের আর্থিক ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আর্থিক নীতি কাঠামো আধুনিক ও নীতি সঞ্চালন উন্নত করতে হবে। তাহলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াবে। বিনিময় হার কাঠামো আধুনিক ও রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে আরও সংস্কার বাহ্যিক স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করবে।

তৃতীয়ত, ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ, তদারকি ও সুশাসন জোরদারের মাধ্যমে আর্থিক খাতের দুর্বলতা মোকাবিলায় সংস্কারের দিকেও মনোনিবেশ করা উচিত।

Comments