আগামী মাসের মধ্যে নতুন বিনিময় হার চালু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি স্টার

বিনিময় হার আরও নমনীয় করতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উন্নতির জন্য আগামী মাসের মধ্যে ক্রলিং পেগ সিস্টেম চালু করবে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অন্যতম নির্দেশনা ছিল এটি।

'ক্রলিং পেগ' হচ্ছে দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি মুদ্রার বিনিময় হারকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করার অনুমতি দেওয়া হয়।

এক্ষেত্রে মুদ্রার দরের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা থাকে। ফলে একবারেই খুব বেশি বাড়তে পারবে না, আবার কমতেও পারবে না।

সাধারণত মুদ্রার অবমূল্যায়নের হুমকির সময় এই পদ্ধতি সেটি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে আইএমএফকে এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে।

গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। তৃতীয় দফা ঋণ ছাড়ের আগে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ঋণের শর্ত পূরণ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে গত ২৪ এপ্রিল থেকে ঢাকায় অবস্থান করছে আইএমএফের একটি দল। তারা নতুন বা সংশোধিত শর্তগুলো চূড়ান্ত করবে, যার মধ্যে কম রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকায় তারা জুনের মধ্যে ক্রলিং পেগ সিস্টেম চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী। গত বছরের নভেম্বর থেকে আইএমএফ বাংলাদেশকে এ ব্যবস্থায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন ৩০ এপ্রিল এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেন, বিনিময় হার আরও বাজারভিত্তিক করতে পারলে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনে আরও স্থিতিশীলতা আসবে।'

গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্টে (এমপিএস) ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর কথা বললেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

কাগজে-কলমে গত বছরের জুলাইয়ে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও বাস্তবে, বিনিময় হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনানুষ্ঠানিক নির্দেশে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ দ্বারা নির্ধারিত হয়।

বিদ্যমান বিনিময় হার প্রায় তিন মাস আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ব্যালেন্স অব পেমেন্টের (বিওপি) অন্যতম উপাদান চলতি হিসাবের ব্যালেন্স উদ্বৃত্ত ছিল ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

বিপরীতে আর্থিক অ্যাকাউন্ট, বিওপির আরেকটি মূল অংশ যার মধ্যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এবং স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণ অন্তর্ভুক্ত সেটি ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে।

এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি ঘাটতি বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অন্যদিকে একই সময়ে নিট বাণিজ্য ঋণ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার।

আইএমএফের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বিনিময় হার বাজারভিত্তিক না হওয়াই আর্থিক খাতে ঘাটতির কারণ। ফলে রপ্তানির টাকা দেশে আসছে না এবং অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন https://www.thedailystar.net/business/economy/news/taka-trade-more-freely-next-month-3602801

Comments

The Daily Star  | English

Israeli military says it killed Iran's wartime chief of staff

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

4h ago