আইএমএফের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলেও ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে।
আইএমএফের ঋণ

৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তির শর্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিল তা পূরণ নাও হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এনবিআর বহির্ভূত কর উভয় দ্বারা রাজস্ব আদায়ের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের কর আদায়ের কথা ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।

এনবিআরের প্রভিশনাল ডেটা অনুযায়ী, সংশোধিত বাজেটে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২০২৪-২২ অর্থবছরে কর প্রশাসক ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা আদায় করেছে।

অন্যদিকে, সংশোধিত বাজেটে এনবিআর বহির্ভূত কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার কোটি টাকা।

পুরো অর্থবছরের এনবিআর বহির্ভূত করের তথ্য পাওয়া না গেলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এনবিআরবহির্ভূত কর বাবদ আদায় হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।

অর্থাৎ সংশোধিত বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও আইএমএফ নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না।

২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর বহির্ভূত কর বাবদ আদায় হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলেও ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে।

গত ৩০ জুন বাংলাদেশকে ১৪ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারের নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই দিন বাংলাদেশের এনআইআর ছিল ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে ঋণের প্রতিটি কিস্তির আগে এনআইআর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় সরকার।

বৈশ্বিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে রেকর্ড বাজেট সহায়তা পাওয়ার পরে দেশ প্রথমবারের মতো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারল। কারণ বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপাক্ষিক ঋণদাতা কেবল জুনে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে।

গত বছরের জানুয়ারিতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ।

প্রথম রিভিউয়ে বাংলাদেশ রাজস্ব সংগ্রহ ও এনআইআর দুই শর্ত পূরণ করতেই ব্যর্থ হয়।

ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ দুটি মূল শর্তের বিপরীতে বৈশ্বিক ঋণদাতা বোর্ডের কাছে ছাড় চায়। 

গত বছরের ডিসেম্বরে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আইএমএফের দ্বিতীয় পর্যালোচনায়, বাংলাদেশ সফলভাবে উভয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে এবং এনআইআর লক্ষ্যমাত্রা ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার থেকে সংশোধন করে ১৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়।

চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশ আইএমএফকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধনের অনুরোধ জানালেও তারা সেটি করেনি।

চলতি বছরের শেষ নাগাদ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের একটি মিশন বাংলাদেশ সফরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। চতুর্থ কিস্তি চলতি বছরের ডিসেম্বরে আসতে পারে।

Comments