নাট্যজগতের সহকর্মীদের স্মৃতিতে মোহন খান

বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মোহন খান। গতরাতে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

মোহন খান একজন সুপরিচিত নাট্যকার ও নাট্যপরিচালক। দক্ষ সংগঠকও ছিলেন। তার লেখা তিতির ও শঙ্খচিল নাটকটি প্রযোজনা করেছিলেন প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল মামুন। ৫ শতাধিক নাটকের পরিচালক তিনি। তার হাত ধরে উঠে এসেছেন অনেক অভিনয়শিল্পী।

বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মোহন খান। গতরাতে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

তাকে নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ।

মামুনুর রশীদ 

মামুনুর রশীদ। ছবি: স্টার

মোহন খান আমার ভীষণ প্রিয় মানুষ ছিলেন। খুব পছন্দের মানুষ ছিলেন। তার সঙ্গে প্রচুর সাংগঠনিক কাজ করেছি। সংগঠনের প্রয়োজনে যখনই তাকে মনে করেছি, পেয়েছি সঙ্গে সঙ্গে। নাট্যকার ও নাট্যপরিচালনা ছাড়াও একজন দক্ষ সংগঠকও ছিলেন তিনি। অনেক বছর এভাবে কাজ করতে করতে মোহন খান আমার অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ। তার চলে যাওয়াটায় বারবার একটি কথা মনে হচ্ছে--বড় অসময়ে চলে গেলেন। খুব দু:খজনক এটা আমার জন্য এবং আমাদের অঙ্গনের জন্য। বারবার তার হাসি মুখটা চোখে ভাসছে।

আবুল হায়াত 

আবুল হায়াত। স্টার ফাইল ফটো

মোহন খান ছিলেন পরিবারবান্ধব মানুষ। সবার সঙ্গে তার পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমার সঙ্গেও ছিল। খবরটি শুনে দু:খ পেয়েছি। অনেক বছর ধরে তাকে চিনতাম। প্যাকেজ আসার পর কাজের ব্যস্ততা বাড়িয়ে দেন তিনি। কাজ কম হয়েছে, কিন্ত চেনা-জানা, সম্পর্ক, কথা এসব তো হতই। সম্মান দিতে জানতেন। বড়দের সম্মান দেওয়ার বিষয়টি তার মধ্যে ছিল। অকালে চলে যাওয়াটা সত্যিই কষ্টদায়ক। তার জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার নেই । মহান আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন এটুকুই চাওয়া।

অরুণা বিশ্বাস

অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত

মোহন খানের পরিচালনায় বেশ কিছু নাটকে আমি অভিনয় করেছি। বৃষ্টির অপেক্ষায় নাটকটির নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে। ব্যক্তিগতভাবে তিনি অসাধারণ মানুষ ছিলেন। এমন হাসিখুশি মানুষ কমই পাব আমরা। কখনো তাকে মন খারাপ করতে দেখিনি। সংসারের প্রতি ছিল অসম্ভব ভালোবাসা। স্ত্রী ও সন্তানদের খুব ভালোবাসতেন। সবার আগে পরিবারকে প্রাধান্য দিতেন। পরিচালক হিসেবেও অসাধারণ ছিলেন। যেমন ভালো নাটক পরিচালনা করতেন, তেমন ভালো নাটক লিখতেন। তার নাটক মানেই সমুদ্র। সমুদ্রের প্রতি ছিল তার গভীর ভালোবাসা।

আমি বলব তিনি তারকা পরিচালক ছিলেন। অনেক তারকার জন্ম দিয়েছেন। তার হাত ধরে অনেক শিল্পী উঠে এসেছেন। আমার ছেলে ও তার ছেলে একই স্কুলে পড়ত। সেজন্য সম্পর্কটা আরও বেশি ভালো ছিল। কত স্মৃতি তার সঙ্গে। পহেলা বৈশাখে বিকেলবেলা তার বাসায় আমরা একত্রিত হতাম, আড্ডা দিতাম, কাচ্চি খেতাম। সবই আজ থেকে স্মৃতি হয়ে গেল ।

জিতু আহসান

জিতু আহসান। ছবি: স্টার
জিতু আহসান। ছবি: স্টার

১৯৮৮ সাল থেকে মোহন খানকে চিনি। ওই বছর বিটিভিতে জিয়া আনসারী একটি নাটক করেন, যার নাম 'জোনাকি জ্বলে'। খুব আলোচিত নাটক ছিল। তখন থেকেই পরিচয়। তাকে আমি মোহন কাকা বলে ডাকতাম। সেই সময় 'ভালোবাসা এক নদী' নামে তিনি একটি নাটক পরিচালনা করেন, যেখানে আমিও অভিনয় করেছিলাম। তারপর তার পরিচালিত অসংখ্য নাটকে আমি নিয়মিত অভিনয় করেছি। কাজেই কত শত স্মৃতি যে জড়িয়ে আছে, বলে শেষ করতে পারব না। সমুদ্র মানেই তার নাটক। কক্সবাজার মানেই তার নাটক। এখন হয়তো সেখানে যাব, কিন্ত তাকে আর পাব না। (থাইল্যান্ডের) পাতায়াতে তার পরিচালনায় নাটক করেছি। শুটিং স্পটে সবসময় সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন।

 

Comments