পর্দার নায়ক থেকে মানুষের নায়ক হতে চাই: ফেরদৌস

প্রথমবার রাজনীতির মাঠে প্রার্থী হিসেবে অভিজ্ঞতা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন ফেরদৌস।
চিত্রনায়ক ফেরদৌস
নির্বাচনী জনসংযোগে চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক ফেরদৌস এখন মাঠে-ঘাটে ঘুরে ভোট চাইছেন। ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তিনি।

প্রথমবার রাজনীতির মাঠে প্রার্থী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

প্রতিদিন মানুষের কাছে যাচ্ছেন, ভোট প্রার্থনা করছেন, কেমন লাগছে?

ফেরদৌস: এটা আমার কাছে অন্যরকম। নতুন অভিজ্ঞতা। কিন্তু আমি উপভোগ করছি। মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছি এজন্য আমার ভেতরে সুন্দর একটা স্বপ্ন দানা বাঁধছে। স্বপ্নটা বড় হবে জানি। কেননা, আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। মানুষের সেবা করতে চাই। মানুষের মানুষের জন্য—এটা আমাকে ভাবায়। এই অনুভূতি অন্যরকম। বুঝিয়ে বলবার মতো নয়। এ যেন নতুন জীবন।

পথেঘাটে আপনার আনাগোনাকে সাধারণ মানুষরা কীভাবে দেখছেন, কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

ফেরদৌস: সাধারণ মানুষরা আমাকে যেরকম ভালোবাসা, মমতা দিচ্ছেন, আশীর্বাদ করছেন সেজন্য আমি ঋণী। অল্প কদিনে যে পরিমাণ সাধারণ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি সত্যি আমি মুগ্ধ। আমি যতদিন বাঁচব সাধারণ মানুষের কথা আগে ভাবব, তাদের জন্য আগে কাজ করব। প্রতিদিন হাজার  হাজার মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা বলছি, ভোট চাইছি। ধনী-গরিব সবার কাছে যাচ্ছি। কিন্তু সাধারণ মানুষরা আমাকে খুব বেশি আপন ভাবছেন, গ্রহণ করছেন। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, আমি আজীবন তাদের পাশে থাকব। তাদের জন্য কাজ করে যাব। তাদের এই বিশ্বাস ভঙ্গ করব না।

রাজনীতিতে এসে কোন বিষয়টি আপনাকে খুব বেশি স্পর্শ করেছে?

ফেরদৌস: পথের মানুষ, খুব সাধারণ মানুষ, মেহনতি মানুষ এবং শ্রমজীবি মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ আমাকে বেশি স্পর্শ করেছে। সেদিন একজন রিকশাচালক আমাকে টুপি উপহার দিয়ে গেছেন। এই ভালোবাসার প্রতিদান আমি কীভাবে দেব? তাকে মিষ্টি খাওয়াতে চেয়েছি, খাননি। কিন্তু আমার হাত ধরে দোয়া করেছেন।

খুব সাধারণ মানুষরা আমাকে প্রতিদিন কিছু না কিছু উপহার দিচ্ছেন। বেশি উপহার দিয়েছেন পতাকা। এছাড়া প্রতিদিন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নৌকা উপহার পাচ্ছি। খুব সাধারণ কজন মানুষ কয়েকদিন আগে আমাকে ফুল উপহার দিয়েছেন। ছোট ছোট বাচ্চারা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরছে, আপন করে নিচ্ছে। মায়েরা, বোনেরা আমার মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করছেন। তারা বার বার করে বলছেন, আপনি আবার আসবেন। আমিও কথা দিচ্ছি-সবসময় পাশে থাকব।

আমি মনে করি আমার রাজনীতিতে পথচলা তাদের জন্যই আরও বেশি সুন্দর হবে। কোনোদিনও তাদের কথা ভুলতে পারব না।

রাজনীতিতে এসে কী মনে হচ্ছে?

ফেরদৌস: মানুষের সাথে প্রতিদিন মিশছি, নতুন জীবন অনুভব করছি। নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করছি। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে আমরা এগিয়ে যাব। সোনার বাংলা গড়ে তুলব। রাজনীতিতে এসে মনে হচ্ছে -মানুষের জন্য কাজ করার চেয়ে বড় কিছু নেই।

ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা?

ফেরদৌস: ২৫ বছর ধরে অভিনয় করছি। সৃষ্টিকর্তার রহমতে এবং মানুষের ভালোবাসায় ক্যারিয়ারে অনেক পেয়েছি। ক্যারিয়ার নিয়ে আরও পরিকল্পনা আছে। আমার ইমেজ ক্ষুণ্ন হবে তেমন কোনো চরিত্রে কিংবা সিনেমায় অভিনয় করব না। ইমেজের কথাটি মাথায় রেখে কাজ করব। এছাড়া, আমি সবসময় বলি, বাবা-চাচা এসব চরিত্রেও অভিনয় করব না। যতদিন কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা যায় ততদিনই করব। ৮০ বছর বয়সেও যদি কেন্দ্রিীয় চরিত্রে করতে বলা হয় তবেই করব।

পর্দার নায়ক হিসেবে ২৫ বছর ধরে অভিনয় করছি। পর্দার নায়ক থেকে মানুষের নায়ক হতে চাই। খুব সাধারণ মানুষের কাছাকাছি থাকতে চাই। আমার বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তা সেই সুযোগ আমাকে দেবেন।

Comments