ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কমলেও কাউনিয়ায় বিপৎসীমার ওপরে

লালমনিরহাট তিস্তা
লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর এলাকায় তিস্তা নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় লোকজনকে নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে। ছবিটি বৃহস্পতিবার সকালে তোলা। ছবি: এস দিলীপ রায়

তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমলেও বেড়েছে কাউনিয়া পয়েন্টে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে তিস্তাপাড়ে ২১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার।

সুনীল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বুধবার দুপর থেকে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়তে থাকে। বিকেলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। বুধবার রাত ৮টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে। বুধবার রাত ৯টার পর তিস্তার পানি কমতে শুরু করে।

'আমরা তিস্তাপাড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করেছিলাম। মাইকিং করে তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে আসতে বলা হয়েছিল। আপাতত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছি না,' তিনি বলেন।

সুনীল কুমার বলেন, 'ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কমলেও বেড়েছে কাউনিয়া পয়েন্টে। তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলগুলো পানিতে প্লাবিত হয়েছে।'

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী এলাকার কৃষক আব্দুল কাদের (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার রাতে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয়ে গিয়েছিলেন। সারারাত ঘুমাতে পারেননি। তবে যেভাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল পানি সেভাবে বাড়েনি। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে ফিরে গেছেন তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা এলাকার কৃষক বদিয়ার রহমান (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার বিকেলে তাদের বাড়িতে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। বাড়ির ভেতর এখনো ২-৩ ফুট পানি রয়েছে। তারা বাড়ি ছেড়ে সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। তবে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার নদী তীরবর্তী ও চর এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। উজান থেকে পানি না আসলে দ্রুত নদীর পানি নেমে যাবে।

কুড়িগ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, তিস্তাপাড়ে বিপুল পরিমানে জমির আমন ধান ও সবজি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ২-৩ দিনের মধ্যে বন্যার পানি নেমে না গেলে এসব ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের লোকজন বন্যা উপদ্রুত এলাকার ফসলের খোঁজখবর রাখছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিস্তাপাড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা কেটে গেছে। বুধবার মাইকিং করে নদীপাড়ের মানুষজনকে নিরাপদে আনা হয়েছিল। বুধবার রাতে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও তা দ্রুত নেমে যাওয়ায় তেমন ক্ষতি হয়নি। নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে ফিরে গেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus opens second round of talks to strengthen national unity

'Beautiful July Charter' would be unveiled following discussions, he says

2h ago