লালমনিরহাট

বালু তোলায় হুমকিতে তিস্তা

হুমকিতে তিস্তা
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচায় তিস্তা থেকে বালু তোলায় ভাঙন ঝুঁকিতে নদীপাড়। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে তিস্তা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে ভাঙনঝুঁকিতে পড়েছে নদীর পাড়।

নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলতে ও বিক্রি করতে গেড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

গত রোববার বিকালে আদিতমারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রওজাতুন জান্নাতের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বালু তোলার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন।

মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া এলাকায় একটি ড্রেজার মেশিন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ৩ বালু উত্তোলনকারীকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে প্রত্যেকের ৫০ হাজার করে টাকা জরিমানা করা হয়।

হুমকিতে তিস্তা
মহিষখোচায় তিস্তা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জরিমানা দেওয়া বালু উত্তোলনকারীরা হলেন—মহিষখোচা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩৩), সেকেন্দার আলীর ছেলে দুলু মিয়া (৩৬) ও মহিষা শহর এলাকার খাবেরী ইসলামের ছেলে নুরুজ্জামান মিয়া (৩৭)।

স্থানীয়রা ডেইলি স্টারকে জানান, গত ৬ মাস ধরে একটি সিন্ডিকেট তিস্তা থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করে আসছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।

তারা আরও জানান, প্রশাসন থেকে মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে বালু তোলার কাজে থাকা শ্রমিকদের জরিমানা করে। তবে, সিন্ডিকেটের সদস্যরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।

হুমকিতে তিস্তা
বিপন্ন তিস্তা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

স্থানীয়দের ধারণা, গত ৬ মাসে বালু বিক্রি করে সিন্ডিকেটটি প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছে।

গোবর্ধন এলাকার কৃষক নাদের ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলায় তিস্তার পাড় ভাঙনের হুমকিতে আছে। এ কারণে আসছে বর্ষায় নদীপাড়ের মানুষকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।'

'সিন্ডিকেটের মূল হোতা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় আদালতে জরিমানা দিয়ে আবারো বালু তোলা শুরু হয়' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'কিছু মানুষ বালু বিক্রি করে লাভ করছে। আমরা ক্ষতির মুখে পড়ছি। ভাঙন শুরু হলে আমাদের আবাদি জমি ও বসতভিটা হারাতে হবে।'

দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের কৃষক সামাদ মিয়া (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ট্রাক ও ট্রলি দিয়ে বালু পরিবহনের কারণে গ্রামের রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। বর্ষায় এসব রাস্তায় চলাচল করা দুষ্কর। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় বালু তোলার সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।'

আদিতমারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রওজাতুন জান্নাত ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবৈধভাবে বালু তোলার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান আছে। যেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হবে সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Amir Khasru Mahmud Chowdhury

People didn't sacrifice to give responsibilities to any 'Great Man': Amir Khasru

"Whichever government is elected by votes will be accountable to the people"

23m ago