ট্রাম্প হারলে ক্ষমতা হস্তান্তর শান্তিপূর্ণ হবে না: বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প যদি হেরে যান, তাহলে নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ হবে না। এমনটাই আশঙ্কা করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

যতদিন পর্যন্ত বাইডেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন, বিশ্লেষকদের মত ও জনমত জরিপে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বাইডেন নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পরিস্থিতি বদলেছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রার্থিতা পাওয়ায় নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে জনপ্রিয়তার পাল্লা।

গত মাসে নির্বাচনী দৌড় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে সিবিএস নিউজকে বাইডেন তার এই আশঙ্কার কথা জানান।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

তিনি বলেন, 'যদি ট্রাম্প হেরে যায়, তাহলে (পরিস্থিতি কেমন হবে, তা নিয়ে) আমি খুব একটা আত্মবিশ্বাসী নই।'

'(ট্রাম্প) যা বলে, সেটাই মনে মনে চিন্তা করে। আমরা তার কথাকে গুরুত্ব দেই না। কিন্তু তিনি এভাবেই ভাবেন। ট্রাম্প নিজ মুখে বলেছেন, "যদি আমরা হেরে যাই, তাহলে রক্তবন্যা বয়ে যাবে", যোগ করেন বাইডেন।

গত মার্চে মার্কিন অটোমোবাইল খাত নিয়ে কথা বলার সময় ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তার এই 'রক্তবন্যা' বইয়ে দেওয়ার মন্তব্যের জেরে দেশজুড়ে সমালোচনার বন্যা বয়ে যায়।

সে সময় ডেমোক্র্যাটরা তাদের প্রচারণায় নতুন বার্তা যোগ করেন। তারা বলতে থাকেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গণতন্ত্রের প্রতি এক হুমকি। বাইডেনের প্রচারণা দল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে 'রক্তবন্যা' শব্দটা জুড়ে দেয় এবং দলের মুখপাত্র ট্রাম্পের বিরুদ্ধে 'রাজনৈতিক সহিংসতাকে সমর্থন ও উসকে দেওয়ার' অভিযোগ আনেন।

তবে ট্রাম্পের প্রচারণা দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মন্তব্যটি আলাদা করে শুধু অটোমোবাইল খাতের জন্য বলেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। প্রতিপক্ষরা প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে এই শব্দটির অপব্যাখা দিচ্ছে।

পরবর্তীতে এই প্রচারণার বিরুদ্ধাচরণ করে ট্রাম্পের প্রচারণা দল তহবিল সংগ্রহের ইমেলে জানায়, ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও অন্যান্যরা তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প সে সময় বলেন, '(তারা) খুব ভালো করেই জানেন যে আমি দুর্নীতিবাজ জো বাইডেনের বিষয়ে কথা বলছিলাম, যিনি বিদেশ থেকে (গাড়ি) আমদানি করে দেশের অটোমোবাইল খাতকে ধ্বংস করছেন।'

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স

এর আগেও জো বাইডেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে কোনো ধরনের নেতিবাচক ফল মেনে নেবেন না ট্রাম্প।

জুনে সিএনএনে প্রচারিত প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্পকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, 'আপনি কি ২০২৪ এর নির্বাচনের ফল মেনে নেবেন?'

শুরুতে এড়িয়ে গেলেও পরে জবাব দেন ট্রাম্প, জানান, 'যদি এটি মুক্ত, নিরপেক্ষ ও আইনসঙ্গত নির্বাচন হয়, তাহলে অবশ্যই ফল মেনে নেব।'

এই বিতর্কে জো বাইডেন একেবারেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তিনি কথা বলতে বলতে বারবার খেই হারিয়ে ফেলেন, এক প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে চলে যান এবং ট্রাম্পের কোনো আক্রমণেরই যুতসই জবাব দিতে পারেননি তিনি। পরিশেষে এই ডিবেটে খারাপ করার জন্যই বাইডেনকে বিদায় নিতে হচ্ছে বলে মত দেন বিশ্লেষকরা।

২০২০ সালে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হওয়ার পর অসংখ্যবার দাবি করেন ট্রাম্প, এই নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। ফল মেনে নিতে অস্বীকার করেন।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের আহ্বানে তার সমর্থকরা নির্বাচনী ফলের নিবন্ধন ঠেকাতে ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়ে।

তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে কারচুপির কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি ট্রাম্প বা তার কোনো সমর্থক।

Comments

The Daily Star  | English

Protesting NBR officials observe work abstention

Tax officials nationwide abstained, demanding NBR autonomy and specific reforms

56m ago