ট্রাম্প নিজের ‘ফাঁদেই’ ধরা পড়ছেন?

'অন্যের জন্যে গর্ত খুঁড়লে সেই গর্তে নিজেকেই পড়তে হয়'—বাংলার এই আপ্তবাণী কি সঠিক প্রমাণ হবে মার্কিন মুল্লুকে? ইতিহাস বলে, অন্যের বিনাশ কামনার পরিণতি ভালো হয় না। ইতিহাসের হাত ধরে বর্তমানের ভাবগতিক বিশ্লেষণ করলে সেই সত্যই কি সামনে আসে?
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিএনএন'র এক সংবাদ বিশ্লেষণের শিরোনাম করা হয়, 'ট্রাম্প নিজের পালানোর পথ রাখছেন না'। মার্কিন গণমাধ্যমটি একই শিরোনামে ট্রাম্পকে নিয়ে প্রতিবেদন ছেপেছিল ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর।
প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প নিজের ফাঁদেই ধরা পড়েছিলেন। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে 'কলঙ্কিত' প্রেসিডেন্টের তকমা পেলেও তা থেকে শিক্ষা নেননি তিনি। ফিরে এসেছেন আরও 'অদম্য' হয়ে।
বাণিজ্যযুদ্ধ
চীন, কানাডা ও মেক্সিকোসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি কর চাপানোর পথে হাঁটছে হোয়াইট হাউস। উদ্দেশ্য—যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধ করা। প্রবাদে আছে—'ঢিল ছুড়লে পাটকেলটি খেতে হয়'। বৈদেশিক বাণিজ্যের অংশীদাররা মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় ট্রাম্প প্রশাসন পড়েছে 'উভয় সংকটে'।
নির্বাচনী প্রচারণায় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের বলেছিলেন—ভিনদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা নতুন কর 'আপনাদের দিতে হবে না। দেবে অন্য দেশ।' অর্থনীতিবিদরা তার এই বক্তব্যকে 'বিভ্রান্তিকর' বলেছিলেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়—বাস্তবতা হচ্ছে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য এলে সেই পণ্যের ওপর কর ধার্য করা বা না করা সেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কেননা, কর দিতে হয় সেই দেশের জনগণকেই।
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা একটি গাড়ির দাম যদি ৫০ হাজার ডলার হয় এবং এর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসে তাহলে ক্রেতাকে গুণতে হবে বাড়তি সাড়ে ১২ হাজার ডলার। সেই বাড়তি ডলার যাবে মার্কিন ক্রেতার পকেট থেকেই। কেননা, আমদানি করা পণ্যের শুল্ক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দিতে হয় না, দিতে হয় আমদানিকারক দেশের প্রতিষ্ঠানকেই। বলা যায়, ট্রাম্প নিজ দেশের জনগণকে ধাপ্পা দিয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করেছিল তিন দশমিক এক ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য। এটি বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রায় ১১ শতাংশ।
পুঁজিবাদের হাত ধরে মুক্তবাজার অর্থনীতির বাণী প্রচার করা যুক্তরাষ্ট্র যদি বাণিজ্যযুদ্ধের মাধ্যমে পুঁজির অবাধ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে তাহলে তা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসার সম্ভাবনাই বেশি।
তাহলে এই সিদ্ধান্ত কি নিজের ফাঁদে নিজেরই পড়ে যাওয়ার আরেক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে যাচ্ছে?

ভৌগলিক 'আগ্রাসন'
মার্কিনিরা গুগলে মেক্সিকো উপসাগরকে এখন থেকে দেখছেন 'গালফ অব আমেরিকা' হিসেবে। এটা কি কোনো বৃহত্তর ঘটনার শুরু? ইতোমধ্যে পাঠকরা জেনে গেছেন যে 'গালফ অব আমেরিকা' না লেখার জেরে এপির সাংবাদিককে গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
গায়ের জোরে যেকোনো পরিবর্তন বিতর্কের জন্ম দেয়। সেই বিতর্কের ঢেউ হোয়াইট হাউসে লাগলে তা একসময় সেখানকার বাসিন্দাদেরও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে—তর্কের খাতিরে তা ধরে নেওয়া যেতে পারে।
আসা যাক 'আগ্রাসনের' কথায়।
পরিবর্তিত বিশ্বের এই যুগসন্ধিক্ষণে কোনো দেশের শীর্ষনেতা প্রতিবেশীকে দখলে নেওয়ার বাসনা জানালে তা শুধু সেই প্রতিবেশীর জন্যই নয় বিশ্ববাসীর জন্যও আতঙ্কের হয়ে উঠে। প্রতিবেশী কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডকে মহাশক্তিধর যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গ করে নেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষাকে অনেকে 'হাস্যকর' বললেও দিনশেষে তা যেন ঈশান কোণে কালো মেঘের মতোই ঝুলে থাকে।
উত্তর গোলার্ধের দুই বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডের পর ট্রাম্প নজর দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দিকেও। তার গাজা দখলের বাসনা এই অস্থিতিশীল পৃথিবীকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে না তো?
সবাই জানেন, প্রতিবেশীর ওপর আগ্রাসী মনোভাবের কারণে ইউরোপ পরপর দুইটি বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। ট্রাম্পের সম্প্রসারণনীতি পুরো বিশ্বকে তৃতীয় মহারণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে না তো?
এমন আগ্রাসনের ফল কী হয় তাও বিশ্ববাসীর জানা।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি গার্ডিয়ানের এক বিশ্লেষণের শিরোনামে বলা হয়, 'ট্রাম্প হয়ত আমেরিকার উপনিবেশবাদের সেই সোনালি দিন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। এমন বাসনার ভিত্তি কী?'
ইতিহাসের অধ্যাপক ও 'হাউ টু হাইড এন ইম্পায়ার: অ্যা হিস্ট্রি অব দ্য গ্রেটার ইউনাইটেড স্টেটস'র লেখক ড্যানিয়েল ইমারওয়াহর গণমাধ্যমটিকে বলেন, '১৯৪৫ সালের পর মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ক্ষমতার ব্যবহার সূক্ষ্মভাবে করতেন। তা হয়ত ট্রাম্পের পছন্দ নয়।'
ব্লুমবার্গের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়, হোয়াইট হাউসে ফিরে ট্রাম্প মার্কিন উপনিবেশবাদের ধারা ফিরিয়ে আনছেন।
দ্য নিউইয়র্কার ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতিকে নেপোলিয়ন-মানসিকতা হিসেবে উল্লেখ করেছে।
অভিবাসননীতি
অভিবাসীদের 'দেশ' হিসেবে গড়ে উঠা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনবিরোধী নীতি নেওয়া হলে তা দেশটির ভিত্তিমূলেই আঘাত হানবে। নানান জাতি-বর্ণ-মতের মানুষ নিয়ে যে দেশ আজ বিশ্বমঞ্চে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার, সে দেশই যদি নিজের উচ্চতাকে খাটো করে কোনো এক জননেতার নির্দেশে তাহলে তা 'নিজের পায়ে কুড়াল মারা'র মতো হয় কি না?
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ভাষ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসননীতি লাখো মানুষের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনছে। শহরে শহরে হাজারো মানুষ এর প্রতিবাদ করছেন। এমনই এক প্রতিবাদ সমাবেশের সংবাদ জানিয়ে দ্য ক্যারোলিনিয়ান জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট গেট সিটির রাস্তাগুলোয় অভিবাসনপন্থিরা জড়ো হয়ে ট্রাম্পের নীতির বিরোধিতা করেছেন। তারা তাদের সাংবিধানিক অধিকারে খোদ প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপে ক্ষিপ্ত।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যম এনবিসি জানায়, ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর থেকে সরকারি হিসাবে আট হাজারের বেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেককে ফেরতও পাঠানো হয়েছে। আবার বেশ কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়ার কথাও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ট্রাম্পের অভিবাসননীতি দেশটিতে যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তা 'হিতে বিপরীত' হতে পারে বলেও মনে করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন মনে করে—অভিবাসনবিরোধী নীতির মাধ্যমে ট্রাম্প শুধু অভিবাসী পরিবার-সম্প্রদায়কেই বিচ্ছিন্ন করে ফেলছেন না, তিনি আমেরিকার জাতিগত বৈচিত্র্য নষ্ট করে দিচ্ছেন।
আইন, শিষ্টাচার ও শুভবুদ্ধিকে বুড়ো আঙুল দেখানো এই নীতি আখেরে ট্রাম্প তথা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠজনদের অনেকেই।
প্রশাসনিক রদবদল
'দুর্নীতি নির্মূলের' অঙ্গীকার করে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরপরই ব্যাপকহারে প্রশাসনিক রদবদলে হাত দেন। গত তিন সপ্তাহে তিনি পুরো জাতিকে 'রোলার কোস্টারে' তুলে ছেড়েছেন। সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে নিজের পছন্দের মানুষ বসানোর রীতি মার্কিন প্রশাসনে প্রচলিত। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদের ট্রাম্প সেই রীতিকে রীতিমত ভয়ঙ্কর রূপ দিয়ে ফেলেছেন।
ইউএসআইডির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেওয়া বা সিআইয়ের মতো ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজানোর কথা অথবা এফবিআইয়ের মতো দক্ষ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেশটির প্রশাসনিক অঙ্গনে অস্থিরতা তৈরি করেছে।
অনেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে 'ডিপ স্টেট' বা রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করেন। তাদের অনেকে এসব 'ক্ষতিকর' প্রতিষ্ঠান নিয়ে ট্রাম্প বা মাস্কের দৃষ্টিভঙ্গিতে খুশি।
নিয়মতান্ত্রিক পরিবর্তন সবারই কাম্য। কিন্তু এক হুকুমে সব বদলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের জন্য সুবাতাস বয়ে আনবে কি?

বন্ধু 'বেইমান'
টাইম ম্যাগাজিনের সর্বশেষ সংস্করণের প্রচ্ছদে ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে ইলন মাস্ককে বসানো হয়েছে। এ নিয়ে সিএনএন'র ভাষ্য—এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। বিষয়টিকে দুই ভাবেই দেখা যেতে পারে। এক, ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট ইলন মাস্ক। দুই, মাস্ক প্রেসিডেন্টের মতোই ক্ষমতাবান। ট্রাম্পের আড়ালে আসলেই দেশ চালাচ্ছেন তিনিই।
১৯৪০ সালের 'দ্য গ্রেট ডিকটেটর'-এ প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন গোলকবিশ্ব নিয়ে যেভাবে মশকরা করেন সেই দৃশ্য আট দশকের বেশি সময় পরও অনেক শক্তিধর রাষ্ট্রনায়কের মতো আরও একজনের কথা ভাবনায় জাগিয়ে দেয়। তিনি হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
চলচ্চিত্রটিতে দেখা যায় দ্য গ্রেট ডিকটেটরের ঘনিষ্ঠজনরা ধীরে ধীরে কেমন করে 'শত্রু' হয়ে উঠেন। এমনটি দেখা যায় জর্জ অরওয়েলের 'অ্যানিম্যাল ফার্মে'ও।
নিজ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে ট্রাম্প রাজ্যপাট সাজিয়েছেন—এমন দাবি-অভিযোগ সবার।
এই শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে ধনকুবের ইলন মাস্কের নাম। তিনি ইউএসআইডিকে 'অপরাধী' সংস্থা হিসেবে আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমান প্রশাসনের নানা দিক নিয়ে প্রকাশ্যে 'বিব্রতকর' মন্তব্য করছেন।
গত বুধবার বিবিসি জানায়—গতকাল হোয়াইট হাউসে প্রথম দর্শনে ইলন মাস্ক মার্কিন সরকারের 'শত্রুতামূলক' কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। পাশাপাশি বলেন, তিনি সরকারের খরচ কমানোর পরিকল্পনাকে সমর্থন করে যাচ্ছেন।
সেদিনেই ট্রাম্প এক নির্দেশে সরকারের কর্মী বাহিনীতে ছাঁটাইয়ের কাজে বন্ধু ইলন মাস্কের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেন। তিনি সব সরকারি সংস্থার প্রধানদের মাস্কের কথা মতো চলারও নির্দেশ দেন।
ইতিহাস বলে, অযৌক্তিকভাবে কারও ক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া হলে তার ফল ভালো হয় না। ইতিহাসে অনেক ঘনিষ্ঠজনকে পরে 'বেইমান' খেতাব নিয়ে 'পলাতক' হতে দেখা গেছে।
তাই আজকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আগামীতে যে 'শত্রু' হয়ে উঠবেন না তার নিশ্চয়তা কে দেবেন?
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিএনএন'র 'ট্রাম্প নিজের পালানোর পথ রাখছেন না' প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, তার মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় তিনি যা বলছেন বা করছেন এর মধ্যে নিজের অহংবোধকে তৃপ্ত করার বিষয়টিও আংশিকভাবে আছে।
তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন, এটি আসলে রিপাবলিকানদের চাঙা রাখতে ও ডেমোক্রেটদের বিভ্রান্ত করতে ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল।
কারও মতে, ট্রাম্প যেন মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলীর কৌশলটিই বেছে নিয়েছেন ভোটের রণাঙ্গনে। প্রয়াত সেই মুষ্টিযোদ্ধার নীতি ছিল—শক্র কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে ঘায়েল করে দাও।
সেই কৌশল মুহাম্মদ আলী ব্যবহার করেছিলেন খুবই ছোট পরিসরে। প্রতিপক্ষও থাকতেন একজন। বলা বাহুল্য, সেই কৌশল বড় পরিসরে নেওয়া হলে বা প্রতিপক্ষ একাধিক হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।
প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও 'স্ট্রংমেন: মুসোলিনি টু দ্য প্রেজেন্ট' বইয়ের লেখক রুথ বেন-ঘিয়াত সিএনএনকে বলেন, ট্রাম্পের ব্যক্তি ইমেজ 'আকাশচুম্বী'। কারও দৃষ্টিতে তিনি 'জননেতা'; আবার কারও দৃষ্টিতে তিনি 'গণদেবতা'। তার উপস্থিতিই আলোড়ন সৃষ্টি করে।
রুথের ভাষায়—ট্রাম্প নিজেকে 'সর্বশক্তিমান' ও 'সর্বত্র বিরাজমান' হিসেবে জনতার সামনে তুলে ধরছেন। নিজের 'শক্তিমত্তা' প্রমাণে এমন কিছু করছেন যা তার পূর্বসূরিরা ভাবতেও পারেননি।
সম্প্রতি সিএনএন'র প্রদায়ক ক্যারি চ্যাম্পিয়ন 'নিউজনাইট'-এ এক আলোচনায় বলেন, 'ট্রাম্প জানেন তাকে কারা পছন্দ করেন এবং তারা কত সাধারণ মানুষ। ট্রাম্প জানেন, কীভাবে তাদের বিনোদন দিতে হয়। তার সেই জানাশোনা ফল দিচ্ছে।'
কিন্তু ইতিহাস বলে—সস্তা জনপ্রিয়তায় সৃষ্ট গণদেবতাদের দিন শেষে গণধিকৃতই হতে হয়।
Comments