ঢাকার যে ৫ জায়গায় ২০০ টাকার কম খরচে খেতে পারেন

আপনার যদি বাজেট নিয়ে একটু টানাটানি থাকে কিংবা যদি আপনি ঢাকার স্ট্রিটফুডের একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে থাকেন এবং সাধ্যের মধ্যে স্ট্রিটফুড খেতে চান তাহলে এ লেখাটি আপনার জন্যই। 
রিং রোডে নওশাদের স্যুপ। ছবি: সিলভিয়া মাহজাবীন

ঢাকার আনাচে-কানাচে এখন রয়েছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট ও ফুড স্টল। এ শহরের সব এলাকাতেই রাস্তার পাশে চায়ের টং থেকে শুরু করে ফাইন ডাইনিং খুঁজে পাবেন খুব সহজেই। 

কিন্তু আপনার যদি বাজেট নিয়ে একটু টানাটানি থাকে কিংবা যদি আপনি ঢাকার স্ট্রিটফুডের একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে থাকেন এবং সাধ্যের মধ্যে স্ট্রিটফুড খেতে চান তাহলে এ লেখাটি আপনার জন্যই। 

আমরা ঢাকা শহর ঘুরে বের করেছি সুলভ মূল্যে এ শহরের সেরা ৫ খাবারের দোকান। এসব দোকানে দারুণ সব আইটেম পাবেন ২০০ টাকারও কমে!

টোকিও স্কয়ার, রিং রোড

একইসঙ্গে কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া এবং বিনোদনের ব্যবস্থা চাইলে যেতে পারেন মোহাম্মদপুরের রিং রোডের টোকিও স্কয়ারে। 

রিং রোডের শাহী দই ফুচকা। ছবি: সিলভিয়া মাহজাবীন

টোকিও স্কয়ারের সামনের ব্যস্ত সড়কের পাশে হাঁটতে হাঁটতে দেখা মিলবে বার্গার, নুডলস, ট্যাকোস, মোমোসহ বিভিন্ন খাবারের। 

এসব খাবারের দোকানের মধ্যে শাহী দই ফুচকা নামের ফুড কার্টটির রাজকচুরি খুবই সুস্বাদু। ১২০ টাকা দামের এই রাজ কচুরিটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, এটি খেলেই এর মধ্যে  স্পাইস ও ক্রাঞ্চের একটি পারফেক্ট ব্যালেন্স বোঝা যায়। 

সাথে ৩৫ টাকা দামের এক কাপ মটকা চা অর্ডার করলেই আপনার মন ও পেট দুটোই খুশি! 

সলিমুল্লাহ রোড, মোহাম্মদপুর 

মোহাম্মদপুরের ব্যস্ত এলাকা সলিমুল্লাহ রোড বাজেট সচেতন  ভোজন রসিকদের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

সেলিম কাবাব। ছবি: সিলিভিয়া মাহজাবীন

এখানে বিক্রেতারা বিভিন্ন রকম খাবারের পসরা নিয়ে বসেন। স্যুপ, কাবাব, জিলাপি, ফুচকা এরকম বিভিন্ন খাবারের ভিন্ন ভিন্ন কার্ট নিয়ে বসেন তারা। 

তবে সলিমুল্লাহ রোডে গেলে সেলিম কাবাব ঘরের শিক কাবাব এবং নওশাদ স্যুপের চিকেন স্যুপের স্বাদ না নিলে এখানে আসা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। 

সেলিম কাবাব ঘরের শিক কাবাবের দাম ১৩০ টাকা ও নওশাদ স্যুপের চিকেন স্যুপ ৬০ টাকা। 

সলিমুল্লাহ রোড যে শুধু খাবারের জন্যেই জনপ্রিয় তা নয়, এটি একটি চমৎকার অভিজ্ঞতাও বটে। চারপাশের ব্যস্ত পরিবেশ, ভোজন রসিকদের গল্প এবং বিক্রেতাদের সুনিপুণ হাতে বানানো খাবার, সবকিছু মিলিয়ে একটি চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে এখানে। 

শাহজাদপুর ঝিলপাড়

শাহজাদপুর ঝিলপাড়ের চারিদিকে গুলশান লেক। এখানে বিভিন্ন রকম খাবারের স্টলের খাবারগুলো এতই সুস্বাদু যে আপনি বারবার এখানে আসতে বাধ্য হবেন। 

মুড়িভর্তা। ছবি: সিলভিয়া মাহজাবীন

ফুচকা, চটপটি, সিঙ্গারা, দোসার চমৎকার স্বাদ, ঘ্রাণ এবং মশলার পারফেক্ট ব্লেন্ড সবমিলিয়ে একটি চমৎকার ফ্লেভার তৈরি করে। 

এখানকার সব মুখরোচক ফুড কার্টের মধ্যে অন্যতম হল খানদানি খানাপিনা। এখানের স্পেশাল মশলা মুড়ি ভর্তা অবশ্যই আপনার লিস্টে থাকা উচিত। এই স্পেশাল মুড়ি ভর্তায় থাকে বিভিন্ন রকম মশলা, শসা কুঁচি, ধনিয়াপাতা এবং ছোলা এবং এটির দাম একদম নাগালের মধ্যেই, মাত্র ৩০ টাকা! 

নীলক্ষেত মোড়

এলাকাটি বিশেষত বইপোকাদের জন্য! যদি আপনি এখানে আপনার প্রিয় বইটি খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে অল্প দামের ভেতরে কোথাও খেতে চান তাহলে নীলক্ষেতের বিরিয়ানি এবং তেহারির দোকানগুলোতে অবশ্যই যাবেন। 

নীলক্ষেতের তেহারি। ছবি: সাজ্জাদ ইবনে সাইদ

আপনি যতই এসব দোকানের কাছাকাছি যাবেন বিরিয়ানির চমৎকার সুঘ্রাণ আপনাকে মুগ্ধ করবে। এসব দোকানে চিকেন অথবা বিফ দুই ধরনেরই বিরিয়ানি পাওয়া যায়। এক প্লেট বিরিয়ানির দাম এখানে শুরু হয় মাত্র ১০০ টাকা থেকে! 

জাতীয় সংসদ ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ 

শহরের কেন্দ্রেই প্রকৃতির মাঝে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় আপনি বাজেটের মধ্যে পেয়ে যাবেন বিভিন্ন খাবার। 

ফুচকা। ছবি: সাজ্জাদ ইবনে সাইদ।

এখানে পাবেন মচমচে, নানা ফ্লেভারের সংমিশ্রণে তৈরি বিখ্যাত স্ট্রিটফুড ঝালমুড়ি ও ফুচকা, যেগুলোর দাম মাত্র ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০ টাকা। 

অসহনীয় গরম থেকে স্বস্তি পেতে এখানে আছে আইসক্রিম কার্ট এবং লেবুর শরবতের স্টল। একটু অবকাশ পেতে ও প্রকৃতির কাছাকাছি গাছপালা ও ফুলের মাঝে চন্দ্রিমা উদ্যানের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে খেতে পারেন আইসক্রিম অথবা রিফ্রেশিং এক গ্লাস লেবুর শরবত। 

অনুবাদ: সৈয়দা সুবাহ আলম 

Comments