বাংলাদেশের জনপ্রিয় ৬ স্ট্রিট ফুড

রাজধানীর গুলশানে বিক্রি হচ্ছে ফুচকা। ছবি: অর্কিড চাকমা

ভোজনরসিক বাঙ্গালি ভালো খাবারের জন্য সব জায়গায় যেতে প্রস্তুত। তা হোক পাঁচ তারকা হোটেল কিংবা ভ্রাম্যমাণ দোকান। বাংলাদেশের পথেঘাটে হরেকরকম খাবারের পসরা সাজিয়ে থাকেন দোকানিরা। সেসব খাবারের পুষ্টিগুণ বা মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও অনেকেই এসব খাবার পছন্দ করেন।

বাংলাদেশের পথেঘাটে পাওয়া যায় এমনকিছু খাবার সম্পর্কে চলুন জেনে নেই।

ফুচকা

বাংলাদেশে বাস করছেন অথচ কখনো ফুচকা খেয়ে দেখেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। স্ট্রিট ফুডের মধ্যে এ দেশে জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ফুচকা। ময়দার পাতলা খোলের মধ্যে আলু, মটর আর বিভিন্ন ঝাল মসলার মিশ্রণ ভেতরে দেওয়া হয়। সেই খাবার খাওয়া হয় তেঁতুলের ঝাল মিষ্টি টক দিয়ে। অনেকের হয়ত এর মধ্যেই জিভে জল চলে এসেছে। এক প্লেট ফুচকার দাম সাধারণত ৪০-৬০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। এক প্লেট ফুচকায় ৮-১০টির মতো ফুচকা দেওয়া হয়।

চটপটি

ফুচকার মত চটপটিও জনপ্রিয় খাবার। যে ভ্যানে বা দোকানে ফুচকা বিক্রি করা হয়, সেখানেই সাধারণত চটপটি বানানোরও ব্যবস্থা থাকে। মটরের ডাল ভালো করে সিদ্ধ করে নিয়ে সেখানে কাচা মরিচ, পেঁয়াজ, ধনে পাতা, অন্যান্য ঝাল মসলা, শসা টমেটো এবং তেঁতুল ও লেবুর টক দিয়ে বানানো খুবই সুস্বাদু একটি খাবার চটপটি। চটপটির দামও ৪০-৬০ টাকার মতোই।

ঝালমুড়ি

ঝালমুড়ি বাংলাদেশের অন্যতম সহজলভ্য ও জনপ্রিয় পথের খাবারের মধ্যে একটি। শুকনো মুড়িতে ঝাল মসলা, পেঁয়াজ মরিচ, চানাচুর ভালভাবে মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই ঝালমুড়ি। কাগজের ঠোঙ্গায় চাইলে ১০ থেকে ২০ টাকা অথবা পরিমাণে আরও বেশি চাইলে বেশি টাকায় ঝালমুড়ি কিনতে পারেন।

খুলনায় বিক্রি হচ্ছে হালিম। ছবি: হাবিবুর রহমান/ স্টার

হালিম

বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয় খাবার মোঘলদের হাত ধরে এদেশে এসেছে। হালিম খাবারটি পথেঘাটে বিক্রি করতে দেখা গেলেও এটি একটি অভিজাত খাবার। রন্ধন ইতিহাসবিদ ক্লডিয়া রডেনের মতে, হালিম খাবারটি মধ্যপ্রাচ্যের হারিশা নামক এক ধরনের ডাল ও মাংসের মিশ্রণ জাতীয় খাবার থেকে উৎপত্তি হয়েছে। হারিশা ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইয়ামেন ও আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উপাদেয় একটি রান্না। ভারতবর্ষে হারিশার আগমন ঘটে মুঘলদের মাধ্যমে। হালিমের মূল উপাদান বিভিন্ন রকমের ডাল, গম, সুগন্ধি চাল ও মাংস। রাস্তায় যেসব হালিম বিক্রি হয়, তা মাংসের প্রকারভেদ অনুযায়ী দামে ভিন্ন হয়। মুরগির মাংস দিয়ে যে হালিম প্রস্তুত হয় তার দাম গরু বা খাসির হালিম থেকে কম থাকে। রাস্তায় যে হালিম বিক্রি হয় তার দাম ৬০-১০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

ডালপুরি

রাস্তার পাশে ছোট ছোট দোকানগুলোতে বড় বড় কড়াই ভর্তি তেলে ডুবিয়ে ডালপুরি ভাজা হয়। সেই ভাজা ডালপুরি গরম গরম পরিবেশন করা হয় ক্রেতাদের মাঝে। প্রথমে পছন্দমত স্বাদ অনুযায়ী ডালের পুর তৈরি করে এরপর পরিমাণ মতো পানিতে লবণ, তেল মিশিয়ে ময়দার কাই বানিয়ে ছোট ছোট গোলের ভেতরে ডালের পুর ভরে দিয়ে হাল্কা করে বেলে, তেলে ভাজা হয়। আলুপুরিও খেতে খুব সুস্বাদু৷ শুধু এখানে ডালের পুরের জায়গায় আলু ভর্তা মেশানো হয়৷ একেকটা ডালপুরির দাম ১০-২০ টাকার মধ্যে হতে পারে।

ভেলপুরি

ভেলপুরি এক ধরনের নাস্তা জাতীয় খাবার যা রাস্তাঘাটে হরহামেশাই বিক্রি করতে দেখা যায়। ময়দার মুড়মুড়ে পুরির মধ্যে আলুর পুর দিয়ে কাচা মরিচ, পেঁয়াজ ও অন্যান্য ঝাল মসলা যোগ করে পরিবেশন করা হয় এই ভেলপুরি। সঙ্গে আবার সস কিংবা তেঁতুলের টকও থাকে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও ভেলপুরির প্রচলন আছে। ভেলপুরি আর ফুচকার প্রস্তুতপ্রণালী কিছুটা এক হলেও ভেলপুরির ময়দার পুরিটা শক্ত আর মুড়মুড়ে হয়। ফুচকার পুরি হয় পাতলা আর ভেতরে ফাঁপা। এক প্লেট ভেলপুরির দাম সাধারণত ২০-৩০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে ভারতের মহারাষ্ট্রে যে ভেলপুরি বিক্রি করা হয় তার সঙ্গে বাংলাদেশের ভেলপুরির মিল নেই।

Comments

The Daily Star  | English

JCD announces 27-member panel for Ducsu election

One post left vacant in honour of injured student

18m ago